"রাজনীতি মানুষের কাজ, ছাগুদের উচিৎ কাঁঠাল পাতা চিবানো, লোকালয় থেকে দূরে গিয়ে!"
একা একা দাঁড়িয়ে থাকতে অসহ্য লাগছে। ছেলেটার কি কোন দিন কান্ডজ্ঞান হবে না? কোন সুস্থ মানুষ এভাবে একটা মেয়েকে একা দাঁড় করিয়ে রাখে? অস্বস্তি কাটাতে ফোনটা হাতে নিলো তৃষা, ধ্রুবকে কি একটা ফোন দেবে? নাহ, থাক! একটু অপেক্ষা করা যাক।
আজ ওর মনটা প্রচন্ড খারাপ, তাই হাসিখুশি থাকার সচেতন চেষ্টা চলছে, রাগ হলেও দমন করে রাখবে পণ করেছে। আজ ওদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যাচ্ছে। ধ্রুব বড় অদ্ভুত মানুষ, আস্ত এক বাউন্ডুলে।
এতোদিন ঠিকঠাক চলছিল, মাস কয়েক হচ্ছে, ঠিক মতো যোগাযোগটা পর্যন্ত রাখে না। তবু, কদাচিৎ হলেও যখন এই মানুষটি ফোন দেয়, তৃষার সেটাও ভালো লাগে, অপেক্ষায় থাকতে বিরক্ত লাগে না। এতো বেখেয়ালী মানুষের সাথে কি করে চলা যায়! তৃষা তবু ছিল, সব সমস্যা মেনে নিয়েও, ভালোবাসার তাগিদে। কিন্তু গতকাল এক মাস পর ফোন দিয়ে যখন ধ্রুব নিজেই বলে দিলো, একসাথে আর থাকা হচ্ছে না, বুক ফেটে কান্না এলেও তৃষা বলেছিল, 'আচ্ছা, সাথে না থাকো, একটা দিন দাও শুধু, বিদায় নেবো তোমার কাছ থেকে। ধ্রুব কিছুতেই রাজি হচ্ছিল না, অনেকটা জোর করেই আজ ধ্রুবকে আসতে বাধ্য করেছে ও।
মিনিট পনেরো আরও গড়ালো, ফোন দিলো এবার তৃষা। তিনবার ডায়াল টোন বাজতেই রিসিভ করলো ধ্রুব, বরাবরের মতো।
'দেরী করে ফেললাম, না? আসছি, আর দশটা মিনিট একটু কষ্ট করে থাকো। '
অন্যদিন অনেক কিছু বলতো তৃষা, বকাবকি করতো, আজ ইচ্ছে করলো না, 'তুমি এসো, কোন অসুবিধা নেই, আমি কফিশপটায় বসছি। '
ও এসে কি বলবে তা তৃষার মুখস্ত, 'বাসা থেকে বের হয়ে রিক্সা পাচ্ছিলাম না, আর প্রচন্ড জ্যাম, বলে বোঝাতে পারবো না! তার উপরে এসে দেখি ভাংতি নাই রিক্সাওয়ালার কাছে, সে আধাঘন্টার মামলা, ভাংতি জোগাড় করতে করতে এতো দেরী।
' গৎবাঁধা কথা ও এলোমেলো চুল নিয়ে হাজির হবে ধ্রুব, পাঞ্জাবীটা বেশ কোঁচকানো থাকবে, সাথের জিন্সটা একদমই মানাবে না। কিন্তু সব মিলিয়ে তার পরও খারাপ লাগবেনা কেনজানি! কখনও লাগেনা।
দুপুর পেরিয়ে বিকেল হয়ে গেলো, ধ্রুব এলো না। তৃষার চোখের কোণে বিন্দু বিন্দু শিশির জমছে, আজকের বিকেলটা অবিশ্বাস্য সুন্দর, ওর হাতটা ধরে হাঁটতে ইচ্ছে করছে, দেখা হলে যেভাবে হাঁটত ওরা।
সেদিনের পর ধ্রুবকে একা একা কোন পথে পায়চারী করতে দেখা যায় নি, সিগারেটের ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন মলিন মুখটি কোন জ্যোৎস্না ভরা ছাদে ছায়া ফেলেনি।
তবে ওর কোঁচকানো পাঞ্জাবী ছিল, বেমানান জিন্স কিংবা মিথ্যে অজুহাতের বদঅভ্যাস। কোথায় ছিল সে প্রশ্নের উত্তর অবশ্য শুধুই তৃষার জানা...
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।