আসছে নতুন প্রজন্ম , আসবে নতুন দিন !
আমরা পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে প্রথম বড় আপা তারপর মেঝো আপা তারপর আমি আমার পর এক ছোট ভাই আর সবার ছোট আমাদের ছোট বোনটি। বড় আপার সাথে আমার বয়সের ব্যবধান প্রায় পাঁচ বছর। আমি বাড়ির বড় ছেলে হলেও মূলত বড় ছেলের দায়িত্ব পালন করেছে আমার বড় আপা।
আমাদের সংসারের সব গুরুত্বপূর্ণ কাজে বিশেষ করে আমাদের বাকি চার ভাইবোনের বিয়েতে আপার ভূমিকাই ছিলো বেশি। এখনও চাকরির প্রয়োজনে আমাকে বাবা মা থেকে দূরে থাকতে হয় কিন্তু নিজের সংসার সামলে ঠিকই আপা আব্বা আম্মার খবর রাখেন এমনকি বাবার ঔষধ শেষ হয়ে গেলো কিনা সেটাও খেয়াল রাখেন।
(আপা এখন আমাদের বাসার পাশের বাসাতেই ভাড়া থাকেন)
আপা শুধু আমাদের সংসারেই নয় আশে পাশের কয়েক বাড়িতেও তিনি ভি,আই,পি । কারো কোনো অনুষ্ঠানে বা বেশি মেহমান আসলে রান্না বান্না এবং মেহমানদারিতে আপা ছাড়া যেনো জমবেই না। আমি অবাক হই চাকরি করে, নিজের সংসার সামলে অন্যকে সময় দেবার এনার্জি তিনি কোথায় পান!
এই আপা ছোট বেলায় ছিলেন অসম্ভব রকমের দুরন্ত। নিচে তার দুইটি ঘটনা বলছি।
১) আপা স্কুলে যাচ্ছেন রাস্তায় আইসক্রিম ওলার সাথে দেখা কিন্তু তার কাছে টাকা নেই।
তিনি আইসক্রিম ওলাকে বললেন ঐ যে আমাদের বাড়ি, আপনি আমাকে আইসক্রিম বকিতে দেন বিকাল বেলা বাড়ির সামনে গিয়ে ফারহানা (তার বানানো ভূয়া নাম) বলে ডাক দিবেন আমি এসে টাকা দিয়ে দিবো।
এতো টুকো ছোট মেয়ে যে তার সাথে চিটিং করতে পারে আইসক্রিম ওলার ধারনা করে নাই সে একটি আইসক্রিম বাকিতে দেয়। বিকাল বেলা বাড়ির সামনে ফারহানা ফারহানা বলে ডাকতে থাকে কিন্তু কোথায় পাবে এই নামে তো কেউ এ বাড়িতে থাকে না। অবশেষে নিরাশ হয়ে যখন ফিরে যাবে তখন ছোট কাকার সাথে দেখা।
ছোট কাকাকে পেয়ে আইসক্রিম ওলার বলে এ বাড়ির এতো টুকো একটি ফর্সা মেয়ে এক পাশের কয়েকটি চুল পাকা ( আপা ছোটো বেলায় অনেক ফর্সা ছিলেন এতো ফর্সা যে তার কয়েকটি চুল সোনালী ছিলো) ফারহানা নাম, আইসক্রিম বাকিতে খেয়েছে কিন্তু এখন ডাকতেছি বের হয় না।
বর্ণনা শোনে কাকা আসামিকে সনাক্ত করতে পারলেন এবং আপা যে এ কাজ করতে পারে সেটা বিশ্বাসও করলেন। আইসক্রিম এর দাম দিয়ে মাকে বললেন ফারহানা নামে আপনার মেয়েটা কোথায়?
২) আপা তার বান্ধবীর বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে দেখেন তাদের অনেক ফুল গাছ। তিনি বললেন তুই আমাকে এখান থেকে কয়েকটি ভালো ফুলের চারা দে আমি তোকে বিদেশী ফুলের বীজ দেবো বিদেশী ফুলের নাম শোনে তার বান্ধবী খুশিতে আটখান। বেছে বেছে ভালো কয়েকটি ফুলের চার আপাকে দেয়।
পরের দিন আপা আশে পাশ থেকে শিয়াল-মতি সহ কয়েকটি জঙ্গলি ফুলের বীজ সংগ্রহ করে তার বান্ধবীকে দেয় ।
আর বলে বেশি করে পানি দিবি, পানি কম হলে কিন্তু বিদেশী ফুলের চার গজাবে না । তার বান্ধবী বীজ লাগিয়ে কয়েক সপ্তাহ নিয়মিত পানি দেয় কিন্তু সেখানে শিয়াল-মতি সহ কয়েকটি আগাছা ছাড়া কিছুই দেখা যায় না। আপাকে জানালে আপা বলেন "নিশ্চয় তুই পানি দেয়াতে উনিশ-বিশ করেছিলি, তুই আমার বিদেশী বীজ গুলিই নষ্ট করলি
জীবন কথার বাকি লিখা গুলো এই বিভাগে
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।