চূড়ান্ত আন্দোলনের দিকে এগোচ্ছেন খালেদা জিয়া। আলটিমেটাম দিয়ে টানা অসহযোগ আন্দোলনে যাচ্ছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট। আগামী ২ থেকে ৫ জানুয়ারি ভোটের দিন পর্যন্ত এই অসহযোগ কর্মসূচির ডাক দিতে পারেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও ১৮ দলীয় জোট নেতা বেগম খালেদা জিয়া। অসহযোগের আওতায় দেশব্যাপী গণকারফিউ ও গণ-অবস্থান কর্মসূচি থাকবে। এ নিয়ে আগামীকাল বিকালে গুলশান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করবেন তিনি।
তবে ২৬ ডিসেম্বর থেকে এ বছরের শেষ দিন পর্যন্ত অবরোধ বা রাজপথের অন্যান্য কর্মসূচি থাকবে। খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের বড়দিন উপলক্ষে ২৫ ডিসেম্বর এক দিন কর্মসূচির বাইরে থাকবে। অসহযোগে রাজপথে নেতৃত্ব দেবেন বেগম খালেদা জিয়া। সংবাদ সম্মেলনে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে না যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যার পাশাপাশি দেশবাসীকে ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার অনুরোধও জানাতে পারেন তিনি। দলীয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এ দিকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দুই সপ্তাহ আগে নির্বাচনের বাইরে থাকা বিরোধীদলীয় নেতার এই সংবাদ সম্মেলনকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন পর্যবেক্ষকরা।
গতকাল বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেল স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে মঙ্গলবার বিকাল পৌনে ৬টায় এ সংবাদ সম্মেলন হবে। দেশের চলমান সংকট ও সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর ১৮ দলীয় জোট নেতা বেগম খালেদা জিয়া দেশবাসীর উদ্দেশে তার বক্তব্য তুলে ধরবেন। ৮৩ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি শেষ হওয়ার এক ঘণ্টা পরই সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করতে যাচ্ছেন। আগামীকাল মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় পঞ্চম দফা অবরোধ কর্মসূচি শেষ হবে।
দলীয় নেতারা বলছেন, ভোটকেন্দ্রে না যেতে জনগণের প্রতি অনুরোধ জানানোর যুক্তিও তুলে ধরবেন বেগম জিয়া। তার বক্তব্যে দলীয় নেতা-কর্মীদের জন্য দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য থাকবে। পাশাপাশি নির্বাচনকে 'অসাংবিধানিক ও অগ্রহণযোগ্য' আখ্যা দিয়ে ভোটকেন্দ্রভিত্তিক প্রতিরোধের 'দুর্গ' গড়ে তুলতে দেশবাসীর প্রতি অনুরোধ জানানো হবে। এ ছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে সাম্প্রতিক সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারি দলের নেতাদের নানা বক্তব্যেরও জবাব দেওয়া হবে। সূত্রে জানা গেছে, সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া কী বলবেন, তা নিয়ে ইতোমধ্যে কয়েকজন সিনিয়র নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
বিএনপি সমর্থক বুদ্ধিজীবীদেরও পরমার্শ নিচ্ছেন। আজ দলের কয়েকজন সিনিয়র নেতার সঙ্গে তিনি তার গুলশানের বাসভবনে বৈঠক করে বক্তব্য তৈরি করবেন। সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। সব শ্রেণী-পেশার মানুষকে নির্বাচনে অসহযোগিতার ডাক দিয়ে ভোটের দিন পর্যন্ত অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিতে পারেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য জানান, সরকার পতনের আন্দোলনে এবার খালেদা জিয়া মাঠে নামতে পারেন।
সে বিষয়টিও সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জনগণকে অবহিত করবেন তিনি। এ ছাড়া নির্বাচনকালীন ব্যবস্থা নিয়ে সমঝোতার জন্য সংলাপ কেন হয়নি, এ জন্য সরকারকে দায়ী করে সমঝোতার ব্যাপারে তার দলের আন্তরিকতার কথা জানাবেন। পাশাপাশি কেন এ নির্বাচন তারা বর্জন করলেন তার ব্যাখ্যা দেবেন।
এর আগে ২১ অক্টোবর রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা নিয়ে প্রস্তাব দিয়েছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। এরপর সরকার তাদের দাবি না মেনে 'সর্বদলীয়' সরকার গঠন করে।
পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশনও নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। এরপর থেকেই নির্বাচনের তফসিল স্থগিত ও নির্দলীয় সরকারের দাবিতে অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।