আমি মনে প্রাণে একজন মুসলিম। ঘৃণা করি ধর্ম বিদ্বেষী নাস্তিকদের এবং ধর্ম ব্যবসায়ী ছাগু তথা উগ্রবাদীদের। ক্যঁচাল পছন্দ করিনা । ।
বাঙালী জাতী বরই উৎসবপ্রিয় একটা জাতী….
নানা উৎসবের রঙে রাঙিয়ে নেয় তাদের আপন ভূবন।
কিছুদিন আগেই চলে গেল অগ্রাহয়ন মাস।
নবান্নের নতুন ধান উঠেছে প্রতিটা কৃষকের গোলায়। এখন চলছে পৌষ মাস….
পৌষের হাড়কাপানো এই শীতে বাড়িতে পিঠা পুলির উৎসবতো চলছেই এরমধ্য যুক্ত হয়েছে গ্রামে-গন্ঞ্জে
তাফসিরুল কুরআন মাহফিল আর হিন্দু সম্প্রদায়ের ৫৮ থেকে ৬৩ প্রহরব্যপী কির্তন।
তাফসির মাহফিল এবং কির্তন যেটাই হোক সাথে থাকছে ছোট-খাটো একটি মেলা।
কদমা (চিনির তৈরী)
এই মেলাটাই কিন্তু বাঙালীর প্রাণের অদম্য ইচ্ছার প্রতিফলন।
শিশুরা বাবা-কাকা অথবা মামার হাত ধরে মেলায় আসছে কিনছে বাদাম, চানাচুর সহ ডিমের পাপড়ের মত খাদ্যদ্রব্য
আর বাড়ি ফেরার পথে কিনে নিয়ে যাচ্ছে চিনির তৈরী বাতাসা, সাঝ, খুরমা, গজা, খই সহ কদমার মতো
খাবার যা তারা মুড়ির সাথে মিশিয়ে সকালের নাস্তা হিসেবে খায়। এটিই কিন্তু আমাদের গ্রামীন ঐতিহ্য।
বাতাসা (চিনির তৈরী)
এইসব মেলায় আরেকটি জিনিস অবশ্যই থাকে আর তাহলো রঙিন বেলুন।
শিশুরা বেলুন হাতে হাসিমাখা মুখে বাড়ি ফেরে বাবা-কাকা অথবা মামার হাত ধরে আর তাদের আনন্দে আন্দোলিত হয় বাবা, মা, চাচা, চাচীর এবং নানা, নানী, মামা, মামী সহ খালার মুখ।
এমন দৃশ্য আসলেই বাংলার প্রতিটা গ্রামীন বাঙালীর বাড়িতে আসে যা পৌষ মাস এলে….
প্রতিটা সকালে স্নিগ্ধ রোদে বসে পিঠা পূলি খেয়ে অলস সময়টা কাটায়…
বাড়ির গৃহিণীদের মহা উৎসাহে বিভিন্ন রান্নাবান্নার ধুম পড়ে যায়।
নব বিবাহীত দম্পতিরা এসময় খেজুর গুড়ের রসে নিজেকে রাঙিয়ে নিতে
শ্বশুরবাড়িতে চলে আসেন। শ্যলিকারা দুষ্টুমি করে কুসুলি পিঠার মধ্য কাচা মরিচ দিয়ে তৈরী করা পিঠা দুলাভাইকে দিয়ে ঠকানোর কসরত করে।
দুলাভাই যদি টের না পেয়ে ঝাল পিঠা দু-একটি খেয়ে পানির জন্য হা-হুতাস করে তখন শালা, শ্যলিকাগন হেসে কুটি কুটি হয়।
পৌষ মেলা (পুশুরা)
পৌষ মাস এলে আজো গ্রামে গন্ঞ্জে ষাঢ়ের লড়াই অনেক জমকালোভাবে
পালিত হয়ে আসছে। তাছাড়া অনেকস্হানে মোরগ লড়াই প্রচলিত আছে।
ষাঢ়ের লড়াইয়ে একটি খোলা মাঠে গ্রামবাসি একত্রিত হয়। মাঠের চারপাশে
নিরাপদ দুরত্ব বজায় রেখে লোকজন দাড়িয়ে থাকেন ষাঢ়ের লড়াই উপভোগ করতে। একসময় মাইকে ধ্বনিত হয় অমুকের ষাঢ়ের সাথে অমুকের ষাঢ়ের লড়াই হবে এখন….মুর্হুমুহু করতালিতে চারদিক প্রকম্পিত হতে থাকে।
এসময় ষাঢ়ের মালিকপক্ষের লোক ষাঢ়ের শিংয়ে লাল কাপড় বেধে দেয়।
ষাঢ় লাল কাপড় দেখে রাগে ফোঁসফোস করতে করতে অপর ষাঢ়ের উপর খিপ্তভাবে ঝাপিয়ে পড়ে।
অবশেষে বিজয়ী ষাঢ়ের মালিক নিজেকে গর্বিত মনে করেন এবং অনেক সময় খুশি হয়ে আস্ত একটি গরু জবাই করে পুরো গ্রামেবাসীকে দাওয়াত করে খাওয়ান।
এমন উৎসব বুঝি বাঙালী জাতীরই আছে যা আমাদের গ্রাম-বাংলার
একটি পুরাতন সংস্কৃতি হিসেবে আজো বেঁচে আছে। এরকম উৎসব দেখে নিজেকে অনেক গর্বিত মনে হয়…..
একজন বাঙালী হওয়ার গর্ব……একজন বাংলাদেশী হওয়ার গর্ব…
উৎসর্গ-ব্লগার আরজুপনি
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।