আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ওগো আমার প্রিয় তুমি গলায় দড়ি দিও

আমি খুব সাধারন একটা মানুষ। সাধারন হয়েই থাকতে চাই

ত্যক্ত হয়ে গেলাম আমি, তিতা করল্লার মত। ওটার তো তাও কিছু স্বাস্থ্যগুন আছে, পেট পরিষ্কার হয় খেলে, সবজি হিসাবে ভাত দিয়ে অনেকে সখ করে খায়, আমার অবস্থা তো তাও না, রীতিমত বিবমিষাকর পরিস্থিতি যাকে বলে। এমনই অবস্থা আমার জায়গায় অন্য কেউ আসলে সে বিরতিহীন বমি করতেই থাকবে, কোনও ব্যতিক্রম নাই। মাঝে মাঝে নিজেকে পোয়াতি বলে সন্দেহ হয়, পরে মনে পরে, না, ওটা তো এই মুহূর্তে হবার কোন সম্ভাবনা নেই।

এসব নিয়ে কথা বলার দরকার হয়ত ছিল না তবে না বলে আর পারছি বলেই বলা।

গত ৬ মাস কি ৭ মাস যাবৎ এক হতচ্ছাড়া গুষ্টিনাশা আমার পিছনে হাত পা ধুয়ে অজু করে ঘুরছে। আমি যতরকম উপায়ে তাকে এড়ানো যায় এড়িয়ে যাচ্ছি। ফেসবুক ব্লক, ব্লগে ব্লক, মেইল আইডি ব্লক এমনকি টেলিফোনেও ব্লক। ভাবছেন কি আমার কোন প্রাক্তন প্রেমিক? না, সে কস্মিঙ্কালেও আমার কোন প্রেমিক ছিল না।

আমি এমনই এক মানুষ যার জীবনে প্রেম আর বিরল দুটি সমার্থক শব্দ। এর মানে কিন্তু না জীবনে প্রেম করিনি বা করছিনা বা করব না। বিরল অর্থ হল যখন বয়স ছিল প্রেম করার তখন কেউ ফিরে তাকাত না, প্রস্তাব তো দুরের কথা আর যখন বয়স শেষ তখন তাকিয়ে আর পলক ফেরাতে চায়না। কিন্তু তাতে তো লাভ নেই তাইনা। সময় যা যায় তা ফেরে না।



যাই হোক মূল বিষয় থেকে লতা পাতায় চলে যাচ্ছি। তো এই হতচ্ছাড়া কে ফোনে ব্লক করার পরেও সে আমাকে প্রায় প্রতিরাতেই এস এম এস করে। যেটার টুংটাং শব্দে আমার বিড়াল মার্কা ফিনফিনে পাতলা ঘুম ভেঙ্গে যায়, এবং আমি গালি দিয়ে তার চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করি। এযাবৎ পর্যন্ত আমার ঘুম ভাঙ্গার কারনে যত অভিশাপ এই লোককে আমি করেছি তার একাংশ সত্যি হলেও আমার নিজেরই খারাপ লাগবে। হাসপাতালে লম্বা লম্বা ডিউটি করার পর, পড়াশোনা করার পর আমার নিজস্ব হাবিজাবি কাজ করার পর যখন একটু ঘুমাতে পারি তখন যদি এই জ্যন্ত জ্বালাতনের উত্যক্তের স্বীকার হতে হয় তাহলে কার ভাল লাগে?

এই বিভীষিকাপূর্ণ ব্যক্তি ঢাকা ভার্সিটির অ্যাপ্লাইড ফিজিক্সে পড়াশোনা করেছে, আমার এক বছরের ছোট।

চরম ইসলামী ভাবাপন্ন। দাড়ি আছে, সাদা জোব্বা পরে। মনে হবে কোন সুফি ব্যক্তি। কিন্তু এই লোক যে কী পরিমাণ একটা মানুষকে বিরক্ত করতে পারে তা আমার থেকে ভাল কেউ জানেনা। কোন এক কুক্ষনে ব্লগে আমার লেখা আর আঁকা আঁকি শুরু হয়েছিল আর তার থেকেও বড় কুফা সময়ে এই লোক সেটা দেখে প্রেমে পরে যায়।

আসলে কী কারনে সে আমার মত বেগুনের প্রেমে পড়েছে আমি তাও জানিনা। যে কয়টা গুন বা বেগুন একটা মেয়ের না থাকলেই নয় তার কোনটাই আমার নেই। না রান্না করতে পারি, না ঘরের কোন কাজ, আলসের ঢেঁকি একটা আমি, আমার মা সারাজীবন গুতিয়ে গুতিয়ে আমাকে পড়াশোনা করিয়েছে যার কারনে ডাক্তারি পাস করতে পেরেছি আর তাও গুতাতে পেরেছে কারন মেয়ে বলে, ছেলে হলে এতদিনে কই যে চলে যেতাম, গুতাগুতির কোন সুযোগই থাকত না। হয়ত হিমালয়ের কোন এক বরফ ঢাকা অংশে আমার ছোট একটা বাসা থাকত। কিন্তু তা আর হল কই? রীতিমত সাংসারিক হয়ে যেতে হচ্ছে শুধুমাত্র মেয়ে হবার কারনে।

বৈবাহিক সাংসারিক না কিন্তু আবার।

ব্লগ থেকে মেইলে আমার স্তুতি কীর্তন শুনতে শুনতে সে ফেসবুকেও চলে আসল। আমি শুরুতে পাত্তা দেইনি, ভদ্রতা বজায় রাখার চেষ্টা করেছি, কিন্তু যখন বলল সে আমাকে বিবাহ করতে চায় তখন আমার মাথায় দুই হাত, সেই হাতে একটি হাতুড়ীও ছিল। কিছুক্ষণ হাতুড়ী পিটিয়ে নিজের ঘিলু নাড়িয়ে ভাবলাম উপরওয়ালা কেন এমন আজব ব্যাপার গুলো ঘটায়। বলা নাই কওয়া নাই দেখা নাই কি আবদার বিবাহ করবে, এমন আবদার তো মামা বাড়িতেও করা যায় না।

আমার কাছে এই আবদারের হেতু কি। কত মেইল যে ডিলিট করেছি। আর ফেসবুকে এ পর্যন্ত ৮টা আইডি ব্লক করা হয়েছে কিন্তু এই নাছোড়বান্দা আমার পিছু ছাড়ার কোন নাম নেই। ভাগ্যিস দেখা দেইনি এখনও তাহলে ইহজনমে আমার পিছু ছাড়ত কিনা সন্দেহ আছে।

অনেকবার ফিরিয়ে দেবার পরেও তার বর্তমানে এই ধারনা আমি তাকে নিয়ে ভাবি, সে অন্য মেয়ের সাথে কি কথা বলে তাদের পটাচ্ছে সেটা ছিল তার শেষ এস এম এসের বিষয়বস্তু।

আমার কথা হল, উনি কোন এলাকার গঞ্জিকাসেবনের কারনে এতো প্রখর কল্পনাশক্তি প্রাপ্ত হয়েছেন তা জানতে চাই। এত যে ধর্ম ধর্ম করেন এই সাধারন জ্ঞ্যানটা তো থাকার কথা। এরপরেও আমাকে বিরক্ত করা কেন?

মানুষ হয়ত ভাবে ডাক্তার মেয়ে, কি সুন্দর ছবি আঁকে, কি সুন্দর লেখে আহা আহা!! আসলে আমি যে কোন প্রজাতির বেগুন তা আমি জানি আর আমার বাসার মানুষ জানে। আমার খুব কাছের কিছু বন্ধুও জানে। আমি এমনই বেগুন যেটা দিয়ে তরকারিও রান্না করা যায়না।

আর এই আপদের প্রেমেও পরে মানুষ! ছ্যা!! ছ্যা!! কলিকাল ঘোর কলিকাল!!

এটা আমার বিনয় নয়, ভুলেও ভাববেন না আমি বিনয়ী, এটা অতি বাস্তব সত্য, আমার যা কিছু ভাল তা নিয়ে আমি যেমন অহংকারী, যা কিছু মন্দ তা নিয়ে আমি তেমনই সত্যবাদী, সবার সেটা হজম হয়না এটাই সমস্যা। সম্ভব হলে এই উত্যক্তকারীকে বিবাহ করে ফেলতাম, এতই যেখানে চাইছে আমাকে, কিন্তু আমি নিশ্চিত বিয়ের এক সপ্তাহের মাথায় আমার মত চালকুমড়া কে ফেলে বাপ মা ভাইবোন ডাক ছেড়ে পালাবে। আর সে না পালালে আমিই পালাব। কারন ঐ যে আমাকে হিমালয় ডাকে, কোন বাঁধনে বেঁধে থাকার মানুষ আমি না।

একারনেই বলছি
"ওগো আমার প্রিয়, তুমি গলায় দড়ি দিও"
আমার প্রেমে পরার থেকে ওটাও ঢের ভাল


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।