রাজনৈতিক সংঘাতের আভাসে তা এড়ানোর প্রত্যাশায় ২০১৩ সাল শুরু হলেও বছর গড়িয়ে ২০১৪ সালের শুরুতে সেই সঙ্কট আরো গভীর হয়ে হানাহানির দিক নির্দেশ করছে।
এর মধ্যেই নির্বাচন ঠেকাতে বিরোধী দলের লাগাতার অবরোধ শুরুর ঠিক ছয় ঘণ্টা আগে মঙ্গলবার রাত ঠিক ১২টায় শুরু হল নতুন বছর।
প্রতিবারের মতো এবারো রাজধানীতে বছর বরণের কেন্দ্রস্থল ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকা, রাত ১২টা ১ মিনিটে সেখানে নেচে-গেয়ে শিক্ষার্থীরা আনন্দের মধ্য দিয়ে বর্ষবরণের উৎসবে অংশ নেয়।
রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসি এলাকায় তারুণ্যের উচ্ছ্বাসের সঙ্গে ছিল আগুনের খেলাও।
মুখে কেরোসিন তেল নিয়ে শঙ্কাহীনভাবে বেশ কয়েকজনকে আগুনের ফুলকি ওড়াতে দেখা যায়।
কাউকে দেখা যায় আতশবাজি ফোটাতে। অনেকে হাজির হন ঢোল আর খোল-জুরির ঝংকার নিয়ে।
শুধু টিএসসি নয়, ক্যাম্পাসজুড়েই বছর শুরুর প্রথম প্রহরে তারুণ্যের উচ্ছ্বলতা দেখা যায়। তবে কোথাও কোনো ধরনের গোলযোগ বা বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া যায়নি।
বিদায়ী বছরের শেষ মাসজুড়ে অবরোধের আগের দিন থেকে গাড়িতে আগুন কিংবা বোমাবাজির যে চিত্র নগরবাসীর চেনা হয়ে উঠেছিল, তার দেখা মেলেনি এই রাতে।
বর্ষবরণের উৎসবকে কেন্দ্র করে যেন কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা না হয়, সেজন্য রাজধানীতে র্যাব ও পুলিশ সদস্য সক্রিয় রয়েছে।
বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে ঢোকা বিকাল থেকে পুলিশ বন্ধ করে দিলেও অনেকে দুপুরের আগেই ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়েন এবং বর্ষবরণের উৎসবে শামিল হন।
ঢাকার বিভিন্ন অভিজাত হোটেলে নতুন বছর বরণে নানা আয়োজন ছিল। তবে তা সমাজের নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর মধ্যেই ছিল সীমাবদ্ধ। আর রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে উপস্থিতিও কম দেখা গেছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার বেনজীর আহমেদ মধ্য রাতে ছিলেন অভিজাত এলাকা গুলশানে। পরিস্থিতিতে সন্তোষ জানিয়ে সেখানে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে অকে কিছুই সম্ভব। নগরবাসী সহযোগিতা করেছে বলেই শান্তিপূর্ণভাবে এই উৎসব পালন করা যাচ্ছে। ”
রাজধানীজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথেষ্ট বলে জানান তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা এবং ধানমণ্ডির রবীন্দ্র সরোবরেও কড়া নিরাপত্তার বন্দোবস্ত রয়েছে বলে জানান তিনি।
সূর্যকে পৃথিবীর আবর্তনের দিক অনুসরণ করে অস্ট্রেলিয়া, জাপানসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর পর বাংলাদেশে ঘড়ির কাঁটায় ১২টা বেজেছে।
অস্ট্রেলিয়ার অকল্যান্ডে বিশাল জনসমাগম আর বর্ণিল আতশবাজির মধ্য দিয়ে স্বাগত জানানো হয় নতুন বছরকে।
সিডনির অপেরা হাউসের সেই আলোকচ্ছটা উজ্জ্বল ছিল আগের বছরের মতোই।
হংকংয়ের ভিক্টোরিয়া হারবারে অগণিত মানুষ আতশবাজির মধ্য দিয়ে স্বাগত জানায় নতুন বছরকে। জাপানে বর্ষবরণের রীতি অনুযায়ী মানুষ বিভিন্ন উপাসনালয়ে সমবেত হয়ে নতুন বছরে শুভকামনা নিয়ে প্রার্থনায় শামিল হয়।
এদিকে বাংলাদেশের পর বর্ষবরণের উৎসব করতে যাওয়া দুবাই বিশ্ব রেকর্ড গড়তে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আতশবাজি প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে।
নতুন বছর বরণে শেষ মূহূর্তের আয়োজন চলছে ইউরোপ ও আফ্রিকার দেশগুলোতেও। লন্ডনে টেমস নদীর তীরে বর্ণাঢ্য আতশবাজির আয়োজন করা হয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।