বিশ্বের ১০ ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের তালিকায় স্থান পেল বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের ফরেন পলিসি নামের সাময়িকী বাংলাদেশের কপালে লাগিয়েছে এই কলঙ্কের তিলক। এ কলঙ্কের তিলক এমন এক সময় অঙ্কিত হলো যখন রাজনৈতিক সহিংসতায় জনজীবন স্তব্ধ হওয়ার পথে। জননিরাপত্তাও প্রশ্নবিদ্ধ একই কারণে। সব পক্ষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে এমন একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যর্থতা বাংলাদেশকে কার্যত এই অকাম্য অবস্থায় ঠেলে দিয়েছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে যুদ্ধাপরাধীদের বংশবদদের সৃষ্ট সহিংসতা। নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে মতপার্থক্য বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে। উদারপন্থি গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে দুই যুগ ধরে বাংলাদেশের যে সুনাম গড়ে উঠেছে তা নিষ্প্রভ হওয়ার হুমকি সৃষ্টি করেছে। নির্বাচন এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকে কেন্দ্র করে দেশে যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তা সত্যিকার অর্থেই অনভিপ্রেত ও দুর্ভাগ্যজনক। সভ্য সমাজে বিশেষত গণতান্ত্রিক কোনো দেশে নির্বাচন নিয়ে সংঘাত অকল্পনীয় বিষয়। যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে সংঘাতের অবকাশ সভ্য সমাজে আশা করা হয় না। আমরা এ কলামে এর আগেও বলেছি স্বাধীনতার চার দশক পরও কীভাবে দেশে নির্বাচন হবে সে বিষয়ে ঐকমত্য না হওয়া দুর্ভাগ্যজনক। স্বাধীনতার পর যে বিষয়গুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঠিক করা উচিত ছিল তার একটি হলো- নির্বাচন ব্যবস্থা। মুক্তিযুদ্ধকালে যারা লাখ লাখ মানুষের জীবন ও সম্মানহানির জন্য দায়ী তাদের বিচারও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সম্পন্ন হওয়া উচিত ছিল। এই অপকর্মে জড়িত কয়েক হাজার যুদ্ধাপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক সাজাও ছিল একটি কাম্য বিষয়। এ অগ্রাধিকারের বিষয়টি উপেক্ষিত হওয়ায় চার দশক পর প্রতীকীভাবে নেতৃস্থানীয় গুটিকতক যুদ্ধাপরাধীর বিচার সম্পন্ন করতে গিয়ে সরকারকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আমরা মনে করি সভ্য দুনিয়ায় নিজেদের ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে দেখতে না চাইলে নির্বাচন নিয়ে যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে তা সম্মানজনক সমাধানে এগিয়ে আসতে হবে। সরকার ও বিরোধী দল এ ক্ষেত্রে আস্থার সম্পর্ক গড়ে তুললে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারও সহজতর হয়ে উঠবে। বাংলাদেশকে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের তালিকাভুক্ত করার ঘটনা দেশের অগ্রযাত্রাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার হুমকি সৃষ্টি করেছে। উন্নয়নের জন্য বিদেশি বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। যত সম্ভাবনাময় হোক না কেন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায়
কেউ বিনিয়োগে যে উৎসাহী হয় না তা একটি প্রতিষ্ঠিত সত্য। এ বিপদ থেকে রেহাই পাওয়ার উপায় হলো সুবুদ্ধির পরিচয় দেওয়া। নির্বাচন নিয়ে যে অনাকাঙ্ক্ষিত বিরোধ গড়ে উঠেছে তার অবসান ঘটানো।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।