আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভোট না দেওয়ায় গালাগাল করলেন মান্নান খান

নির্বাচনের দিন ভোট দিতে অনিচ্ছুক কয়েকজন ভোটারকে গালাগাল করলেন সাবেক এ গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী এবং ঢাকা-১ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবদুল মান্নান খান। জড়ালেন 'গণতন্ত্র' নিয়ে প্রকাশ্য বিতণ্ডায়। ভোটের দিন গতকাল বেলা দেড়টায় নবাবগঞ্জ বাজারের সেতু ক্লিনিকের সামনে এ ঘটনা ঘটে। খবর বিডিনিউজের।

নবাবগঞ্জ-দোহারের বর্তমান সংসদ সদস্য সকাল থেকেই বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে সোয়া ১টার দিকে আসেন নবাবগঞ্জ বাজারে।

এ সময় রাস্তায় দাঁড়িয়ে কয়েকজন নারী ও পুরুষের সঙ্গে উচ্চ স্বরে কথা বলেন তিনি। একপর্যায়ে রেগে গিয়ে ভোটারদের গালিও দেন সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী। জানা যায়, নবাবগঞ্জ বাজারে আসার পর এখানে কয়েকজন সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলে অন্যত্র যাওয়ার জন্য মাইক্রোবাসে ওঠেন মান্নান খান। এ সময় আরও কয়েকজন সাংবাদিক এলে তিনি ফের গাড়ি থেকে নামেন। এরপর আবার গাড়িতে ওঠার প্রস্তুতি নিতে নিতে সেতু ক্লিনিকের বারান্দায় দাঁড়ানো কয়েকজন নারী ও পুরুষকে লক্ষ্য করে মান্নান খান প্রশ্ন করেন, 'আপনারা ভোট দিতে যাননি?' জবাবে এক নারী বলেন, 'দেশে গণতন্ত্র আছে নাকি যে ভোট দেব!' 'কেন, কী হয়েছে'_মান্নান খান জানতে চাইলে ওই নারী বলেন, 'এটা কোনো ভোট হলো! আপনি তো এর আগে এক দিনও জিজ্ঞেস করলেন না।

আজ ভোটের দিন এসেছেন খোঁজ নিতে যে ভোট দিয়েছি কি না। ' এ কথা শুনে মান্নান খান বলেন, 'আপনি একজন প্রার্থীর সামনে এভাবে অভিযোগ করছেন, এটিই তো গণতন্ত্র। আর গণতন্ত্র আছে বলেই তো এটি পারছেন। সামরিক শাসন থাকলে কি এভাবে বলতে পারতেন?'

বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে ওই নারীর সঙ্গে যোগ দেন আরও কয়েকজন যুবক। এ সময় মান্নান খান তাদের সঙ্গেও ঝগড়ায় লিপ্ত হন।

এক যুবক উচ্চ স্বরে বলেন, 'আমরাও আওয়ামী লীগ করি। কিন্তু আপনার কাছ থেকে আমরা কিছুই পাইনি। শুধু অপমানিতই হয়েছি। ' এর পরই উত্তেজিত হয়ে পড়েন মান্নান খান। পকেট থেকে হাত বের করে তর্জনী উঁচিয়ে কথা বলতে শুরু করেন সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী।

বলেন, 'আপনারা কেউ আওয়ামী লীগ করেন না। আওয়ামী লীগ করলে কেউ এভাবে ভোটের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারে না। টাকার কাছে বিক্রি হয়ে গেছেন আপনারা। ' চিৎকার-চেঁচামেচির মধ্যে কথা বলতে বলতে মাইক্রোবাসে উঠে স্থান ত্যাগ করেন মান্নান খান। তার চলে যাওয়ার সময় উচ্চ হাসি দিয়ে উল্লাস প্রকাশ করতে থাকেন উপস্থিত জনা পঞ্চাশেক লোক।

মান্নান খানের গালাগালের শিকার ওই নারীর নাম কনক রহমান। নিজেকে সেতু ক্লিনিকের ম্যানেজার দাবি করে তিনি বলেন, 'আমরাও আওয়ামী লীগ করি। কিন্তু মান্নান খানের ওপর বিরক্ত হয়ে আমাদের মতো অনেকেই ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকছেন। '

এদিকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় মান্নান খানের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ আনেন প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির প্রার্থী সালমা ইসলাম। তিনি বলেন, 'কাঁটাখালী কেন্দ্রে আমার পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে।

সেখানে ব্যালটে সিল মেরে নিচ্ছেন মান্নান খানের লোকজন। ' নবাবগঞ্জ-দোহার আসনের বেশ কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, ভোটার উপস্থিতি ব্যাপক কম। ভোট দিতে আসছেন একজন-দুজন করে। বেলা ১১টায় মারুয়াপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রিসাইডিং অফিসার জাহাঙ্গীর হোসাইন জানান, ওই কেন্দ্রে ২ হাজার ৭৯৬ ভোটের মধ্যে চার ঘণ্টায় ভোট দিয়েছেন মাত্র ১০০ জন। অর্ধেক দিনশেষে এ আসনে ভোটার উপস্থিতি প্রায় সব কেন্দ্রেই এমনই ছিল।

 

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।