আমাদের একটা মানুষের সমাজ লাগবে
২রা নভেম্বর ২০১৩, পাবনার সাথিয়া উপজেলার বনগ্রাম বাজারের ঘটনার কথা মনে আছে আপনাদের। ফেসবুকের ভূয়া খবর ছড়িয়ে এই হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। জানেন তো সাথিয়াতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপরে হামলার ঘটনায় এক জনকেও গ্রেপ্তার করেনি প্রশাসন। লোক দেখানো ওসি কে ক্লোজও করাটুকুও হয়নি। রাষ্ট্র নিরাপত্তা দেয়নি, অপরাধীদের শাস্তি দেবার সদিচ্ছাও তার নেই।
২০১২ এর ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে চলা সহিংস আক্রমন চলে ১লা অক্টোবর পর্যন্ত। রামু, উখিয়া, পটিয়াতে ২২ টি প্রাচীন বৌদ্ধ মন্দির ও দুটি হিন্দু মন্দির ধ্বংস করে সন্ত্রাসীরা। আবারো সেই ফেসবুকের মিথ্যা ভূয়া সংবাদ পুজি। ঘটনার দিন স্থানীয় আ.লীগের সমাবেশ থেকেই এই ঘটনার সূত্রপাত ঘটে। সর্বদলীয় এই হামলার নাটের গুরুরা আজো ধরা ছোয়ার বাইরে।
কিছু রোহিঙ্গা আর উৎসুক জনতাকে গ্রেপ্তার করা হলেও তেনারা বহাল তবিয়তেই আছেন। রাষ্ট্র আমাদের নিরাপত্তা দেইনি, অপরাধীদের শাস্তি দেবার সদিচ্ছাও তার নেই।
এ বছর ৬ জানুয়ারি। দিনাজপুরের চেহেলগাজী ইউনিয়ন দেখল বীভৎস আক্রমন আর যশোরের অভয়নগরকে ভয়ের নগরীতেই পরিনত করল জামাত আর শিবির। এবার অবশ্য ফেসবুক লাগে নাই,তারা এমনি এমনিও পারে।
গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এটা আচ করতে পেরেছিল নিশ্চিত কানে তোলেননি উপরওলারা। স্থানীয় লোকজন ঘন্টাখানেক আগেও প্রশাসনকে জানালেও তারা ছিলেন পূর্বের ঘটনাগুলোর মতো নিশ্চুপ,নির্বিকার। সারি সারি মানুষ নদী পার হয়ে ওপারে আশ্রয় নিলেন, ঘরে ফিরে দেখেন লন্ডভন্ড জনপদ।
জামাতের এমন কাজ কেন করতে হয়.... করতে হয় তাদের সরাসরি প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করে নিজেদের সংহতি টিকিয়ে রাখতে, ঈমানী জোর তরুতাজা রাখতে। ভারতে বিজেপিও এই কাজ করে থাকেন।
এবং আশ্চর্য বিষয় ধর্মীয় হানাহানি হওয়া জায়গায় এসব দলের সমর্থণ বাড়ে। মোজাফফরনগরের সহিংসতার পর বিজেপির সমর্থন বেড়েছে বহুগুন। তারা ক্ষমতায় আসেন কিন্তু জামাত বিজেপির মতো পারলো না কারণ ১৯৭১
আ.লীগের কি সুবিধা হয় এতে? হ্যা, চারিদিকে সন্ত্রাস সহিংসতা , সংখ্যালঘুদের উপর হামলা আমাদের নির্বাচন বাদে হলেও জোর করে ক্ষমতায় থাকা জরুরী এবং জায়েজ। তারা বেশ একে অন্যের কাজে লাগেন। ক্ষতি শুধু আমাদের, আমরা সর্বস্বান্ত।
একই তলার মানুষ এইসব আ.লীগ, বি.এন.পি, জাপা, জামাত। তাই তো জামাতের সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক কর্মকান্ড বন্ধে কোন উদ্যোগ নাই তথাকথিত অসাম্প্রদায়িক চেতনার লোকেদের। একটা মুক্ত গণশিক্ষার বিকাশ গত ৪২ বছরেও হলো না। ৪ থেকে ৫ ধারার শিক্ষা আমাদেরকে করে ফেলেছে ইতিহাস বিচ্ছিন্ন। যদি মানুষের মতো বাচতে চাই,আমরা এই মাটির মানুষ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান মুসলমান, আমাদের একসাথেই বাচতে হবে।
আমাদেরই মিছিলে প্রথমে এগিয়ে আসতে হবে। যে বাচ্চাটার কান্নার ছবিটা পত্রিকা মারফত দেখলাম এটা তো প্রতীকি বাংলাদেশ... আমরা কি ওই বাচ্চাটার মতো অসহায়?আমরা কি আমাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব তাদের হাতেই দিয়ে রাখব যারা এই বিষয়টাকে পুজি করে গলা ফাটিয়ে ভোট চেয়েই যেতে থাকবে আজীবন। নাকি আমরাই আমাদের দায়িত্ব নিজ হাতে তুলে নেব। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতেই হবে, ওই নিস্পাপ বাচ্চাটার মুখের হাসির জন্য হলেও...
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।