আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঈদে মীলাদুন্নবী পালন করা একটি সুস্পষ্ট বিদআত

بسم الله الرحمن الرحيم -الحمد لله رب العالمين، والصلاة والسلام على خاتم الأنبياء والمرسلين، وعلى آله وصحبه أجمعين، وعلى من تبعهم بإحسان إلى يوم الدين

ঈদ মানে খুশি। ঈদে মীলাদুন্নবী মানে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর জন্মদিনের খুশি বা আনন্দ।


ঈদে মীলাদুন্নবী একটি সুস্পষ্ট বিদআত যা ৬০৫ মতান্তরে ৬২৫ হিজরীতে ইরাকে প্রথম চালু হয়। তাই এ দিনকে উপলক্ষে যা কিছুই করা হোক না কেন তা বিদআতী আমল হিসেবে গন্য হবে(লাজনা দায়েমা ফতওয়া নং-৫৭২৩)।

আল্লাহর রাসুল (সাঃ) এর জন্মগ্রহনের তারিখ নিয়ে ইসলামি ঐতিহাসিকগনের মতো পার্থক্য রয়েছে।



তার মধ্যে সবচাইতে দূর্বল মত হলো ১২ই রবিউল আওয়াল।


কিন্তু হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) মূত্যু গ্রহন করেন ১২ই রবিউল আওয়াল এই বিষয়ে কোন মত পার্থক্য নাই।



রাসুল (সাঃ) এর জীবনী ও তারঁ নির্দেশিত পথ সম্পর্কে জানার জন্য বছরের নির্দিষ্ট কোন দিন নয় বরং সারা বছরই উন্মুক্ত। আর এটা নির্দিষ্ট দিনে পালন নিঃসন্দেহে বিদআতী আমল। আর বিদআত এমন পাপ যা আল্লাহর গযবকে তরান্বিত করে।




আপনার পিতার জন্মদিন যেদিন,সেই দিন মৃত্যুর দিনও? এখন সেই দিন আপনি কি খুশি হবেন, না তার জন্য মাগফিরাত কামনা করবেন???
এখন আপনার বিবেক কে প্রশ্ন করুন? আপনি কি করবেন?

আল্লাহ তায়ালা আমাদের মাফ করুন।

মীলাদ সম্পর্কে মনীষীদের মন্তব্য

@ বিশ্ব বিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ তাফসীর ইবনু কাসীরের লেখক মীলাদ প্রবর্তনকারীদের উদ্দেশ্যে বলেনঃ তারা কাফির ও ফাসিক। (মুহাম্মাদ বিন জামিল যাইনু রচিত বাংলা অনুবাদকৃত মুক্তিপ্রাপ্ত দলের পাথেয় ৭৭ পৃঃ)

@ আল্লামা আনোয়ার শাহ কাশ্মিরী বলেনঃ বর্তমানে প্রচলিত মওলুদ (মীলাদ) ৬০০ হিজরীতে ইরবিলের সুলতানের যুগে চালু হয়। শরীআ'তে মুহাম্মাদীতে এর কোন অস্তিত্ব নেই বরং এই বিদআ'ত সম্পর্কে এমন কোন কিতাব নাই যা হাফিজ ও মুহাদ্দিসীনদের হাতে নেবার উপযুক্ত। (আল-আরফুশ-শাজী ও আল জামে তিরমিযী ২৩২ পৃঃ)

@ হাফিয আবূ বকর বাগদাদী হানাফী ওরফে ইবনু নক্বতা তদীয় ফাতাওয়ায় লিখেছেনঃ মীলাদ মাহফিল সলফ বা অতীত মুসলিম সুধীবৃন্দ হতে উল্লেখিত নাই এবং ঐ সকল কাজকর্মে মোটেও কোনও মঙ্গল নাই।

এটা অতীত সুধীবৃন্দ কর্তৃক সম্পাদিত হয়নি।

@ হানাফী মাযহাবের বিখ্যাত আলিম আল্লামা তাজুদ্দীন ফাকেহানী মীলাদ অনুষ্ঠান সম্পর্কে বলেছেনঃ আমি পবিত্র কুরআনে ও হাদীসে মীলাদ মাহফিলের কোন প্রমাণ পাইনি। উম্মতে মুহাম্মাদীর মধ্যে দ্বীন ইসলাম সম্পর্কে বিজ্ঞ মহামতি নেতৃস্থানীয় ওলামাগণের কেউই এ কাজ (মীলাদ) করেছেন এমন কোন রিওয়ায়াতও বর্ণিত হয়নি। বরং এ মীলাদ একান্তই নব্য প্রসূত বিদআ'ত। এবং পেটপূজার জন্যই এটা আবিস্কৃত হয়েছে।

(মদখুল ফাতাওয়ায়ে সাত্তারিয়া ১ম খন্ড ১৭৯ পৃঃ)

@ হানাফী মাযহাবের বিখ্যাত আলিম মওলানা আশরাফ আলী থানবী মীলাদের আসল স্বরূপ উদঘাটন করে দিয়ে তার তরীকায়ে মওলেদ কিতাবে লিখেছেন- মীলাদ অনুষ্ঠান শরীআ'তে বিলকুল নাজায়িয গুনাহের কাজ। তিনি আরো বলেন, প্রচলিত মীলাদ ও কিয়াম যা নবআবিষ্কৃত ও নিষিদ্ধ বিষয় সমূহের অন্তর্ভূক্ত তা নাজায়িয ও বিদআ'ত। যেহেতু হাদীসে আছে "প্রত্যেক বিদআ'তই গুমরাহী, পাপ ও মহাপাপ" (বেহেশতী জেওর ও তরীকায়ে মওলিদ)

@ ইমাম আহমদ বসরী স্বীয় পুস্তক কওল-ই-মু'তামাদ এর মধ্যে লিখেছেনঃ চার মাযহাবের আলিমগণ মীলাদ অনুষ্ঠানের উপর দোষারোপে ঐক্যমত প্রকাশ করেছেন।

মীলাদুন্নবী উদযাপন সম্পর্কে মনীষীদের মন্তব্যঃ

@ মওলানা শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিস দেহলভী স্বরচিত তুহফা-ই-ইসনা আশারিয়া পুস্তকে লিখেছেন- কোন নাবীর জন্ম ও মৃত্যু দিবসকে ঈদ উৎসবে পরিণত করা বৈধ নয়।

@ শাইখ আবদুর রহমান মাগরিবী হানাফী তার ফাতাওয়ায় বলেনঃ মীলাদুন্নবীর কাজ বিদআ'ত।

যা রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এবং খলীফাগণ ও ইমামগণ বলেননি ও করেননি। (তুহফাতুল কূযা-৩, তারীখে মীলাদ ১১১ পৃঃ)

@ মেখল হামিউস সুন্নাহ মাদরাসাহ, হাটহাজারী, চট্টগ্রাম- মুফতী মোঃ ইব্রাহীম খাঁন বলেন, রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ নির্দিষ্ট করে উক্ত তারিখে প্রচলিত মীলাদ মাহফিলের ব্যবস্থা করা, জশনে জুলুস বের করা, ঐ দিনকে নির্দিষ্ট করে উক্ত দিনে ফকির মিসকিন এবং মানুষ একত্রিত করে খাওয়া দাওয়া ইত্যাদির ব্যবস্থা অর্থাৎ উরস করা, নাবী (সাঃ) থেকে সাহাবা কিরাম (রাঃ) এবং সোনালী যুগ থেকে তার কোন প্রমাণ নেই। যদি তার প্রমাণ থাকত, তাহলে সে ব্যপারে সমালোচনা করার মত কারও অধিকার থাকত না। কেননা তারা যা করেছেন তাদের আনুগত্য করা এবং যা পরিহার করেছেন তা বর্জন করার নামই হলো দীন। আর তার বিপরীত করাই হলো বেদীন এবং লা-শরি'আত বা শরি'আত পরিপন্থী।

(শরীয়ত ও প্রচলিত কুসংস্কার ৪৪ পৃঃ)


আল্লাহকে খুশী করার জন্য আল্লাহর নাবী (সাঃ) আমাদের যে সকল বিধান দিয়েছেন তা পালন করাই যথেষ্ট, নতুন করে কিছু আবিষ্কার করার অবকাশ কোথায়?

আল্লাহ পাক আমাদের সহীহ হাদীস অনুসারে চলার তৌফিক দান করুন। আমীন...

(যারা কোন ধর্মেই বিশ্বাস করেন না তারা দয়া করে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকবেন, ধন্যবাদ)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।