আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এখন আমি অনেক সুখি।

আমি অপরিচিত মানুষের সাথে বিতর্কে জড়াইনা। গালিগালাজ একদম পছন্দ করিনা। আমার ফেবু লিঙ্কঃ fb.com/rolly12345

.…………………আজ হঠাৎ বছর বিশেক আগের কথা মনে পড়ে গেলো.........................

তখন আমি বেকার ছিলাম। মাত্র ইন্টার পরিক্ষা দিলাম। কাজ নেই সারাদিন ল্যাপটপ,ফেসবুকিং, বাপের মান্দাতা আমলের বাইক নিয়ে ফো ফা,আর তানিয়ার সাথে সারারাত ফোনে কথা বলা এই করেই দিন কাটছিলো।

কেউ তখন কিছু বলতোনা কারন কিছুদিন পরেই আমি মালেয়শিয়াতে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য চলে যাবো। ততদিনে তানিয়া একটা জব জুটিয়ে নিয়েছিলো। আমার মাঝে মাঝেই খুব খারাপ লাগতো। আমরা একসাথে পরিক্ষা দিলাম,আমি কাজের ধারে কাছে যাইনা ডরে। অথচ মেয়েটা দিনে সাত আটটা ক্লাস করে রাতে আমার সাথে কথা বলে।



…………………সকাল সাতটায় তানিয়া ফোন দিলো তার আজকের মধ্যে মাদ্রাসায় পৌছাতে হবে। অবরোধের কারনে কোন গাড়ি পাচ্ছেনা। ফোন দিয়ে বলল কই তুমি?
-এইত ঘুমাচ্ছি।
=তারাতারি বাইক নিয়া আস আমি রাস্তায় দাড়িয়ে আছি।


তাড়াতাড়ি বাপের মান্দাতা আমলের বাইক নিয়ে বের হয়ে আসলাম।

এসে ওকে নিয়ে ওর মাদ্রাসায় পৌছে দিলাম। ও ছিলো ঐ মহিলা মাদ্রাসার আবাসিক শিক্ষক। যখন বাইক নিয়ে ওর মাদ্রাসার সামনে পৌছলাম ও নামতে চাচ্ছিলোনা। আমাকে জড়িয়ে ধরে বসে থাকলো।

-এই পাগলি নামো।


=ছাড়তে ইচ্ছে করছেনা।
-তোমার ছাত্রীরা দেখলে খবর আছে।
=নাহ এখন ঢুকবোনা। সামনে থেকে আরেকটু ঘুরিয়ে আন।

ঐদিন আর আধ ঘন্টা ঘুরেছিলাম।

আর মাত্র সাতদিন পর আমার ফ্লাইট। তাই আমারো ওকে ছাড়তে ইচ্ছে করছিলোনা। যাক দুজনের অনেক অশ্রু বিসর্জনের পরে ওকে মাদ্রাসায় নামিয়ে দিয়ে আমি বাড়ি চলে আসলাম।


…………রাত আড়াইটা। সবাই ঘুমে বিভোর।

আমি আর তানিয়া কথা বলছিলাম স্কাইপে। হঠাৎ তানিয়ার রুমের দরজায় কে যেন টোকা দিলো। ও বিরক্ত হয়ে স্কাইপ অন রেখেই দরজা খুলল। আমি দেখলাম হেড মিস্ট্রেট ম্যডামের হাজব্যান্ড রুমে ডুকলো। তানিয়া জিগেস করলো হুজুর আপনি এখানে? উনি কিছু না বলে রুমে ঢুকে ল্যাপটপটা অফ করে দিলো।

আমি তাড়াতাড়ি তানিয়াকে ফোন দিলাম। ও রিসিভ করে রেখে দিলো। কিছুক্ষন নিরবতার পর হুজুর বলতে লাগলেন, তানিয়া আমি আপনার দেহের আগুনে জ্বলে পুড়ে মরছি অনেকদিন জাবৎ। তানিয়া ওনাকে বলছে, আপনি রুম থেকে যান তা নাহলে আমি ছাত্রীদের ডাকতে বাধ্য হবো। হুজুর তখন বলতেসে, তাতে আপনারি মানসম্মান যাবে।

এরপর ধ্বস্তাদস্তির শব্দ শুনলাম। মোবাইলটা ঠাস করে আওয়াজ করে লাইন কেটে গেলো। আমি যা বুঝার বুঝে গেলাম। তাড়াতাড়ি বাইক নিয়ে বের হয়ে ওর মাদ্রাসায় গেলাম। দারোয়ান গেইট খুলছিলোনা, পরে আমার রাজনৈতিক পিস্তল বের করতেই উনি গেইট খুলে দিয়ে দৌড়।

আমি তাড়াতাড়ি উপরে ওর রুমে গিয়ে দেখি কিছু ছাত্রী আর ম্যডাম ওর মাথায় পানি ঢালছে। আমার বুঝতে দেরি হলোনা কি হয়েছে এখানে। আমি আমার কোমর থেকে পিস্তলটা বের করলাম সবাইত ভয়ে শেষ। আমি ওকে আরেকজন ম্যডামের সাহায্যে আমার এক পরিচিত ডাক্তারের বাসায় নিয়ে গেলাম। ওর চিকিৎসা শুরু হলো।

আমি সারারাত ওর পাশে বসে ছিলাম। ও শুধু আমার দিকে করুন দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে ছিলো। এরপর দিন সনিয়া আপুকে ফোন করে ওকে বাসায় পৌছে দেই। কিন্তু এরপর থেকে ওকে আমি আর ফোনে পাচ্ছিনা।


পরশু আমার ফ্লাইট।

যা করার কালকের মধ্যেই যা করার করতে হবে। রাতের মধ্যে আমার ল্যাপিটা বিক্রি করলাম নয় হাজার টাকায়। সকাল আটটায় রিজার্ব সিএনজি নিয়ে সনিয়া আপুর বাসায় গেলাম। ও আমার সাথে দেখা করতে চাইলোনা। অনেকটা জোর করেই ওকে নিয়ে বের হয়ে কাজী অফিসে গেলাম।



……………………এখন বিকাল ৪টা। হোটেল ড্রিমের চারতলার কোনার রুমটিতে আমরা একে অপরের মুখোমুখি। ও শুধু কাদছিলো। আমি ভেটনোবেট এন ক্রিমটা ওর মুখে লাগিয়ে দিচ্ছি।

……………সন্দায় বের হওয়ার আগে ও আমাকে সালাম করতে চেয়েছিলো।

আমি শুধু ওর কপালে চুমু খেয়েছিলাম। ………………………

এরপর আমি গ্রেজুয়েশন কমপ্লিট করলাম সেও করলো। ও এখন বিসিএস ক্যাডার। আমরা এখন অনেক সুখি। কিন্তু সে রাতের কথা আজও আমি ভুলতে পারিনি।



কিছু রাত কখনো ভুলা যায়না।

কার্টেসিঃ আমার ফেবু নোট।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।