হত্যাকাণ্ডের ধরন দেখে পুলিশের ধারণা, নিষিদ্ধ সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্যরা এতে জড়িত ছিল।
তবে ২১ ডিসেম্বর রামকৃষ্ণ মিশন রোডের ওই বাড়িতে হত্যাকাণ্ড ঘটাতে যারা ঢুকেছিল, তাদের কাউকেই মঙ্গলবার পর্যন্ত সনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।
মুরিদ সেজে চারতলা ওই ভবনের দ্বিতীয় তলায় ঢুকে সেদিন কথিত পীর লুৎফর রহমান ফারুক, তার ছেলে সারোয়ার ইসলাম ফারুক মনির, খাদেম মঞ্জুর আলম মঞ্জু, মুরিদ মো. শাহিন, রাসেল ও মুজিবুল সরকারকে গলা কেটে হত্যা করা হয়।
৬০ বছর বয়সী লুৎফর নিজেকে কখনো ইমাম মাহাদী, আবার কখনো তার প্রধান সেনাপতি বলে দাবি করতেন। তিনি ও তার অনুসারীরা ধর্ম পালন করতেন ‘নিজস্ব নিয়মে’।
লুৎফরের ছোট ছেলে আবদুল্লাহ আল ফারুক সেদিনই ওয়ারী থানায় একটি মামলা করেন। এতে অজ্ঞাতপরিচয় ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়।
তদন্তের অগ্রগতি জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্মকমিশনার গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঘটনার মোটিভ নিশ্চিত হওয়া গেছে, জেএমবিই এই ছয় হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। ”
কী কারণে জেএমবিকে সন্দেহ- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “জেএমবির প্রধান শায়খ আবদুর রহমান নিজে গলা কেটে মানুষ হত্যা করতেন, এমন প্রমাণ আছে পুলিশের হাতে। যতগুলো জঙ্গি সংগঠন রয়েছে।
তার মধ্যে জেএমবিই গলা কেটে হত্যা করত। ”
২০০৫ সালে সারাদেশে একযোগে বোমাহামলা চালিয়ে আলোচনায় উঠে আসে জেএমবি। এই সংগঠনটি পরে নিষিদ্ধ করা হয়। সংগঠনের প্রধান রহমানকে বিচারককে বোমা মেরে হত্যার মামলায় ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে।
এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে জামায়াতে ইসলামীকেও সন্দেহের তালিকায় রেখেছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
গোয়েন্দা কর্মকর্তা মনিরুল বলেন, “লুৎফর রহমান জামায়াতের বিভিন্ন নেতার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে নানা কথা বলতেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। তাছাড়া জামায়াতকে তিনি ‘দাজ্জাল’ (ইসলামের শত্রু) বলতেন। ”
হত্যাকাণ্ডের তদন্তে সন্দেহভাজন কাউকে সনাক্ত না করা গেলেও তাদের অচিরেই ধরার আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
মনিরুল বলেন, খুনি ছিল আটজন ছিলেন।
তাদের সবারই বয়স ছিল ৩০ এর নিচে। তারা সবাই প্যাণ্ট-শার্ট পরা ছিল। একজনের মুখে ছিল দাড়ি।
“হত্যাকারীরা কোনো ছুরি ব্যবহার না করলেও একাধিক চাপাতি ব্যবহার করেছে। ”
খুনিদের ধরতে অবিরাম কাজ চলছে জানিয়ে মনিরুল বলেন, “শাহবাগে, পরীবাগে ও বাংলামোটরে বাসে পেট্রোল বোমা মেরে হত্যার ঘটনা তো পুলিশ উদঘাটন করতে পেরেছে।
সুতরাং এই ছয় হত্যাকাণ্ডে জড়িতদেরও অচিরেই ধরবে পুলিশ। ”
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।