শীত আর কুয়াশায় কড়া নিরাপত্তার মধ্যে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়, চলে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। ভোট শেষে কেন্দ্রে কেন্দ্রে গণনাও শুরু হয়েছে।
দিনাজপুর-৪, বগুড়া-৭, গাইবান্ধা ১, ৩, ৪, যশোর-৫ ও লক্ষ্মীপুর-১ আসনে এই পুনঃভোট হয়।
এর মধ্যে বগুড়া-৭ আসনে (গাবতলী) নির্বাচনী এলাকায় ছিল নির্বাচনবর্জনকারী দলে বিএনপির হরতাল।
গত ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচনের দিন সংঘাত, ভোট কেন্দ্রে অগ্নিসংযোগ, ব্যালট বক্স ছিনতাইয়ের কারণে এসব কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ আটকে যায়।
সেদিন কুড়িগ্রাম-৪ আসনের ফল স্থগিত হলেও আদালতের আদেশে বৃহস্পতিবার ওই আসনের স্থগিত কেন্দ্রগুলোতে ভোটগ্রহণ হয়নি।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিকাল ৪টা পর্যন্ত ৩৯০ কেন্দ্রের কোথাও কোনো গোলযোগের খবর তারা পাননি। প্রতিটি কেন্দ্রের নিরাপত্তায় গড়ে ২০ জন করে পুলিশ সদস্যসহ আনসার ও ভিডিপি নিয়োজিত রয়েছেন।
লক্ষ্মীপুরের একটি ভোটকেন্দ্রে জালিয়াতির অভিযোগে ছয়জনকে আটক করেছে পুলিশ।
ইসির জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব ফরহাদ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সুষ্ঠুভাবে ভোট হয়েছে, কোনো গোলযোগ হয়নি।
”
সকালে শীত ও কুয়াশায় অনেক কেন্দ্র প্রায় ভোটারশূন্য থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিত বাড়তে শুরু করে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান।
ফরহাদ হোসেন বলেন, “কম ব্যবধান রয়েছে এমন কেন্দ্রগুলোয় উপস্থিতি বেশি বলে খবর পাচ্ছি। ”
গত ৫ জানুয়ারি ২৯২ আসনে গড়ে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৪০ শতাংশের মতো। পুনঃভোটের এসব আসনে গড় উপস্থিতি ৫০ শতাংশের ওপর আশা করছেন তারা।
স্থগিত ভোটের হিসাব
দিনাজপুর-৪: এই আসনের ১২০টি কেন্দ্রের মধ্যে ৫৭টিতে ভোট স্থগিত হয়।
এসব কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৩৪ হাজার ৯১৯। বাকি কেন্দ্রগুলোয় ফলাফলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ৬৮ হাজার ৮৮, ওয়ার্কার্স পার্টির এনামুল হক সরকার ১ হাজার ৩৮০ ভোট পেয়েছেন।
গাইবান্ধা-১: এই আসনের ১০৯টি কেন্দ্রের মধ্যে স্থগিত হয়েছে ৫৪টির ভোট। এসব কেন্দ্রে ভোট রয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার ২০৯টি। বাকি কেন্দ্রগুলোর ফলাফলে আওয়ামী লীগের মনজুরুল ইসলাম লিটন ৬৮ হাজার ৯৯৩ ভোট এবং জাতীয় পার্টির আব্দুল কাদের খান ৮ হাজার ৩৮৬ ভোট পেয়েছেন।
গাইবান্ধা-৩: এই আসনে ৮০টি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত রয়েছে, যাতে ভোটার রয়েছেন ২ লাখ ২৬ হাজার ৬২৭ জন। ঘোষিত ৫০ কেন্দ্রের ফলাফলে আওয়ামী লীগের ইউনুস আলী সরকার ৭০ হাজার ৬৬৪ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম খাদেমুল ইসলাম খুদি ১২ হাজার ৭৮১ ভোট পেয়েছেন।
গাইবান্ধা-৪: এই আসনের ১৩০টি কেন্দ্রের মধ্যে স্থগিত রয়েছে ৭২টির ভোট। এতে ভোটার রয়েছেন ২ লাখ ৭৭ জন। ঘোষিত কেন্দ্রগুলোর ফলাফলে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ ৫৯ হাজার ৮৬২ এবং আওয়ামী লীগের মনোয়ার হোসেন চৌধুরী ১৮ হাজার ৮০৬ ভোট পেয়েছেন।
বগুড়া-৭: এই আসনের ১৬১টি কেন্দ্রের মধ্যে ৪৬টি কেন্দ্রে পুনঃভোট হচ্ছে। এতে ১ লাখ ১৫ হাজার ৮৬৫ ভোটার রয়েছেন। জাতীয় পার্টির মুহম্মদ আলতাফ আলী ৭ হাজার ৪৩ ভোট এবং জেপির এটিএম আমিনুল ইসলাম ৩ হাজার ১৭৫ ভোট নিয়ে লড়বেন।
যশোর-৫: এই আসনের ১২২টি কেন্দ্রের মধ্যে ৬০টি কেন্দ্রে পুনঃভোট হচ্ছে। ভোটার রয়েছেন ১ লাখ ৩৯ হাজার ২৯৬ জন।
ঘোষিত ফলাফলে আওয়ামী লীগের খান টিপু সুলতান ৩০ হাজার ৫৩১ ভোট এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী স্বপন ভট্টচার্য্য ১৮ হাজার ৩৩১ ভোট পেয়েছেন।
লক্ষ্মীপুর-১: এই আসনের ৮১টি কেন্দ্রের মধ্যে পুনঃভোট হবে ২১টিতে। এগুলোতে ভোট রয়েছে ৫০ হাজার ২৭৯টি। ঘোষিত ফলাফলে নৌকা প্রতীকে তরীকত ফেডারেশনের এম এ আউয়াল পেয়েছেন ৩২ হাজার ৫৭ ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী সফিকুল ইসলাম পেয়েছেন ২০ হাজার ৯১১ ভোট।
কুড়িগ্রাম-৪ আসনের ১০৬ কেন্দ্রের মধ্যে স্থগিত দুটি কেন্দ্রে ভোট রয়েছে ৭ হাজার ২৫৭টি। দুই কেন্দ্র বাদে জেপির রুহুল আমিন ৩০ হাজার ৫৪৪ এবং আওয়ামী লীগের জাকির হোসেন ২৩ হাজার ৯৪৬ ভোট পেয়েছেন।
এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আরো কয়েকটি কেন্দ্রে পুনঃভোট চেয়ে আদালতে গেছেন।
সিইসি বলেন, “কুড়িগ্রামের নির্বাচন আদালতের আদেশেই বন্ধ থাকবে। আবার যথাসময়ে ভোটগ্রহণ করা হবে।
”
এই পর্যন্ত ঘোষিত চূড়ান্ত ফলাফলে আওয়ামী লীগ ২২৯, জাতীয় পার্টি ৩৩, ওয়ার্কার্স পার্টি ৬, জাসদ ৫, জেপি ১, তরীকত ১, বিএনএফ ১ ও স্বতন্ত্র ১৪টি আসন পেয়েছে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।