Set sail, ye hearts~ into the sea of hope..
২০১৩ এই বছরটা আমাদের জন্যে বেশ অন্যরকম ছিলো। এতোদিন সবাই বাইরে বাইরে থাকতাম, ছুটির সময় দেখা হতো সবার। কিন্তু এবারের কথা ভিন্ন, পড়াশুনার পাট চুকিয়ে আমরা সবাই বাসায় এসেছি। এতোদিন তো থার্টি ফাস্টে একেক জন একেক জায়গায় থাকতাম। এবার একসাথে আছি, তাই ঠিক করলাম এবার আমরা আমরাই সেলিব্রেট করবো নিউ ইয়ারকে।
যা বলা সেই কাজ, ঠিক হয়ে গেলো দুই দিন আগে থেকে আমরা বাক্সপেটরা বেঁধে নানাবাড়ীতে গিয়ে হানা দিবো। দাবা,মনোপলি লুডু থেকে শুরু করে মুভি ভর্তি পেনড্রাইভ পর্যন্ত যা যা লাগতে পারে সব কিছুই ভরে নেয়া হলো ব্যাগে। কিন্তু রাতে কি করা যায়? অনেক কিছুই করা যায়, কিন্তু আমরা ঠিক করলাম আমরা এমন কিছু একটা করবো যেটা করা সহজ, আর যাতে আমরা সবাই কনট্রিবিউট করতে পারি। আর যেন মজা হয়। তো, অনেক ভাবনা চিন্তা হলো, এটা করবো সেটা করবো…
শেষপর্যন্ত আমরা যেটা ফাইনাল করলাম, সেটা হলো…
..বারবিকিউউ!!
ইয়েস! বারবিকিউ পার্টি হবে।
আর সেটা হবে নানু বাসার ছাদে! শীতের রাতে আগুনের পাশে বসে পরোটা সহকারে গরম গরম শিকের চেয়ে লোভনীয় আর কি হতে পারে! আর শিক বানানোর কাজটা তো খুব একটা কঠিন কিছু না। অনেকটা রেডিমেড কফি বানানোর মতো। পানি মেশাও, কফি ঢালো, নাড়ো…শেষ! তো আমরা যেভাবে ভাগাভাগি করে কাজটা করেছিলাম সেটা বলছি এখন,
1. চুলা
বারবিকিউ এর জন্যে প্রথমেই দরকার একটা চুলা। আর সেটা বানানো হবে ইট দিয়ে। খুব ভারী একটা কাজ।
তাই সেটা দেয়া হলো প্রান্তকে। সে আমাদের মধ্যে সবচেয়ে ছোট। যেদিন আমরা গেলাম তার পরদিন সকালেই তাকে দেখা গেলো পড়িমড়ি করে উঠে ইটদিয়ে লম্বা একটা চুলা সাজিয়ে ফেলেছে। চুলা বলতে দুইপাশে দুইলাইন ইট দিয়ে উচু করা আর নিচে কিছু মাটি দিয়ে দেয়া। তারপর গর্তটা তুষের গুড়া দিয়ে ভর্তি করে ফেলা হলো।
ব্যাস চুলা বানানো শেষ! শুরু হয়ে গেলো প্রান্তর ফটোসেশন! ক্লিক ক্লিক!
2. শিক
সিরিয়াসলি, জিনিষটার নাম শিক কাবাব বলে যে মোটা মোটা লোহার শিকে গেঁথে পোড়াতে হবে এরকম কোনো কথা নাই। আর ওইগুলো কেনার জন্যে কোনো বাজেট ছিলো না আমাদের। তাই একটু মাথা খাটাতে হলো। অমিও আর আমি বের হলাম বাইরে, ঘুরতে ঘুরতে আর ভাবতে ভাবতে শেষ পর্যন্ত ভিড় করলাম সাইকেলের পার্টস বিক্রি করে এমন দোকানে। সেখান থেকে বারো টাকা দিয়ে দশটা স্পোক কিনলাম।
(কেনার সময় জিজ্ঞেস করেছিলাম এর চেয়ে বড় স্পোক পাওয়া যায় কিনা, দোকানি সবগুলা দাঁত বের করে জানালো সব সাইকেলের স্পোক সমান, এর চেয়ে বড় হয় না। ) যাহোক, এতো সংগ্রাম করে শিক ম্যানেজ করার পর অমিওর এক্সপ্রেশনটা দেখার মতো ছিলো!
3. মাংস
এবার সবচেয়ে ইম্পর্টেন্ট পার্ট যেটা, সয়াসস আর অন্যান্য মশলা দিয়ে মাংশটাকে মাখিয়ে রাখা। সকালে প্রান্ত-র চুলা বানানো আর অমিও আর আমার শিক ম্যানেজ করার পুরা টাইম জুড়েই নিশি এই কাজটা নিয়ে ব্যস্ত ছিলো। প্রথমে কোরবানি ঈদের মাংস ডিপ ফ্রিজ থেকে বের করে ছাড়ানো হলো, এরপর মশলা মাখানো হলো। এভাবে সারাদিন মাখিয়ে রাখতে হয়।
এক ফাঁকে আমরা যেয়ে তার একটা ছবিও তুলে নিয়ে আসলাম।
--
ব্যাস! এই হলো আমাদের স্পেশাল বারবিকিউ করার সিক্রেট তিনটা স্টেপ। এরপর কি করতে হবে সেটা নিশ্চই বলে দিতে হবে না! আর বছর খানেক আগে বন্ধুবান্ধব নিয়ে পাহাড়ের ঢালে একটা পার্টি করেছিলাম, বারবিকিউ এর রেসিপি টা সেখানে দেয়া হয়েছিলো , দেখে নিতে পারেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।