আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ বলে কথা

১৯৮৭ সাল। তৎকালীন ঢাকা স্টেডিয়ামে ইসলামিয়া হোটেলের সামনে দুই গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক হট্টগোল। পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ হয়ে উঠে যে তা সামাল দিতে পুলিশ ডাকতে হয়েছিল। না কোনো রাজনৈতিক প্রসঙ্গ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক নয়। ফুটবল লিগে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডান-আবাহনীর ম্যাচে কে জিতবে এ নিয়ে দুই দলের সমর্থকদের রীতি হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়।

এক পর্যায়ে দোকান ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। ম্যাচে আগের দিন এমন উত্তপ্ত পরিবেশ ছিল। শুধু স্টেডিয়াম বললে ভুল হবে। তখনকার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াই মানে পুরো দেশ জুড়েই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ত।

বাসভবন ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় দুই দলের পতাকা পত পত করে উঠত।

এখন সে সব স্মৃতির পাতায় বন্দি হয়ে গেছে। আজ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে মোহামেডান-আবাহনী গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে। অথচ গতকাল এনিয়ে কোনো উত্তেজনা লক্ষ্য করা যায়নি। সত্যি বলতে কি আজ যে দেশের দুই প্রধান দল মুখোমুখি হচ্ছে এ খবর অনেকেই জানেন না। অন্যদের কথা বাদই দিলাম, মোহামেডান-আবাহনী সাবেক খেলোয়াড়দের ম্যাচ সম্পর্কে কিছু জানতে চাওয়া হলে তারা অবাক হয়ে বললেন, তাই নাকি রবিবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দলের লড়াই।

যে ম্যাচকে ঘিরে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া কেঁপে উঠত সেই ম্যাচের খোঁজ-খবর অনেকে রাখেন না। বলা যায় হাইভোল্টেজ ম্যাচটি সাদামাটাতে পরিণত হয়েছে। বেশ কয়েক বছর ধরে এই লড়াইয়েও গ্যালারি থাকছে প্রায় ফাঁকা।

যাক আগের সেই উত্তেজনা হারিয়ে গেলেও ম্যাচটি মোহামেডান-আবাহনী বলেই গুরুত্ব থেকেই যাচ্ছে। দুই দল চ্যাম্পিয়ন বা রানার্সআপ হতো বলেই লিগে তাদেরকে লড়তে হতো শেষ ম্যাচে।

এখন না চ্যাম্পিয়ন, না রানার্স আপ। পজিশন নিচে নেমে যাওয়াতে লিগের চতুর্থ ম্যাচেই তাদের লড়তে হচ্ছে। চলতি মৌসুমে দুই দলের এটি দ্বিতীয় সাক্ষাৎ। ফেডারেশন কাপ গ্রুপ পর্বের লড়াইয়ে আবাহনী ২-০ গোলে জয়ী হয়েছিল।

তিন রাউন্ড হওয়াতে এবারে লিগ কে যে জিতবে তা বলা মুশকিল।

কিন্তু আজকের খেলায় যারা জিতবে তারা সামনে এগিয়ে যেতে দারুণভাবে অনুপ্রাণিত হবে। কারণ এই ম্যাচে জয়ী হওয়া মানে দলের মনোবল বেড়ে যাওয়া। কথা হচ্ছে আজকের খেলায় জয়ী হবে কে? দলগত শক্তির বিচার করলে মোহামেডানকেই ফেবারিট বলতে হবে। কিন্তু মোহামেডান-আবাহনীর ম্যাচে বাড়তি চাপ থাকে বলে এখানে কোনো হিসাব-নিকাশ চলে না।

ফেডারেশন কাপই এখানে বড় উদাহরণ।

তুলনামূলক দুর্বল দল হয়েও আবাহনী ঠিকই জয়ের উল্লাসে মাঠ ছেড়েছিল। এবারে লিগে দু'দলই এখনো হারের মুখ দেখেনি। তিন ম্যাচে আবাহনী ৭ ও মোহামেডান ৫ পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে।

সত্যি বলতে কি দুই দলের প্রথম দুই ম্যাচে ছন্দ দেখা যায়নি। জার্সি দেখেই মোহামেডান-আবাহনীকে চিনতে হয়েছিল।

কিন্তু তৃতীয় ম্যাচে মুক্তিযোদ্ধাকে আবাহনী ও টিম বিজেএমসিকে হারিয়ে মোহামেডান ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আবাহনীর ইরানি কোচ আলি আকবার পৌর মুসলিমি ও মোহামেডানের পর্তুগালের কোচ ক্যাপালো শিষ্যদের গতি বাড়াতে সক্ষম হয়েছে। ফুটবল পণ্ডিতদের ধারণা দুই দল আগের ম্যাচে গতি ধরে রাখতে পারলে আজকের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী লড়াইটি দারুণ উপভোগ্য হয়ে উঠবে। দু'দলের কোচই আশা প্রকাশ করেছেন আজ তাদের শিষ্যরা দলকে জয় উপহার দেবে। দেখা যাক কে জিতে মোহামেডান না আবাহনী? নাকি ড্র নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হবে উভয় দলকে।

 

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।