এক প্রতিবেদনে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ম্যাশএবল তুলে ধরেছে ম্যাকিনটশ কম্পিউটারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ মডেল। ম্যাশএবলের ওই প্রতিবেদনের আলোকে আসুন আমরাও একঝলক দেখে নেই সে মডেলগুলো, জেনে নেই ম্যাকিনটশের কিছু তথ্য যার বর্তমান নাম ম্যাক -
১.লিসা
১৯৮৩ সালে অ্যাপল নিয়ে এসেছিল তাদের প্রথম মডেল লিসা। তিন বছরেরও বেশি সময় ও প্রায় পাঁচ কোটি ডলার ব্যয় করে তৈরি করা লিসা কম্পিউটারটির নামকরণ করা হয়েছিল স্টিভ জবসের মেয়ের নামে। ওই সময় কম্পিউটারটির বাজার মূল্য ছিল প্রায় ১০ হাজার ডলার যা বর্তমান আর্থিক মূল্যে হিসাব করলে দাড়ায় প্রায় ২৫ হাজার ডলারের কাছাকাছি। দাম বেশি হওয়ার কারণে কম্পিউটারটি খুব বেশি বিক্রি না হওয়া সত্ত্বেও মডেলটির মাধ্যমেই জন্ম নিয়েছিল প্রথম ম্যাকিনটশের ধারণা।
১৯৮৪ সালের ২৪ জানুয়ারি জবস বাজারে নিয়ে এসেছিলেন প্রথম ম্যাকিনটশ।
২. ম্যাকিনটশ এক্সএল
বিক্রি বৃদ্ধির প্রয়াসে ১৯৮৫ সালে অ্যাপল লিসাকে নতুনভাবে ডিজাইন করে, ম্যাকিনটশ এক্সএল নামে বাজারে নিয়ে আসে। নাম ও ডিজাইনের সঙ্গে সঙ্গে মূল্যও কমিয়ে এনে দাম নির্ধারণ করা হয় তিন হাজার ৪৯৫ ডলার।
৩. ম্যাকিনটশ ১২৮কে
১৯৮৪ সালে বিশ্বের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়া ম্যাকিনটশ ১২৮ মডেলটিকে ধরা হয় আসল এবং প্রথম ম্যাকিনটশ কম্পিউটার। সহজেই ব্যবহারযোগ্য ৯ ইঞ্চি স্ক্রিনবিশিষ্ট এ কম্পিউটারটিতে ব্যবহার করা হয়েছিল ১২৮ কিলোবাইট ক্ষমতাসম্পন্ন র্যা ম।
৪. ম্যাকিনটশ ৫১২কে
ম্যাকিনটশ ১২৮কে বাজারে ছাড়ার কিছুদিন পরেই নিয়ে আসা হয় এ কম্পিউটারটি। সবকিছু ১২৮ মডেলের মতো হলেও এ মডেলটির মেমোরি ছিল চারগুণ বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন।
৫. ম্যাকিনটশ প্লাস
১৯৮৬ সালে এক মেগাবাইট র্যা মের ক্ষমতাসম্পন্ন ম্যাকিনটশ প্লাস বাজারে নিয়ে আসা হয়। এতে স্কাজি পোর্টও ছিল। ফলে ব্যবহারকারীরা এটিতে এক্সটার্নাল হার্ড ড্রাইভ ব্যবহার করতে পারতেন।
সেসময় কম্পিউটারটির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল দুই হাজার ৫৯৯ ডলার।
৬. ম্যাকিনটশ পোর্টেবল
১৬ পাউন্ড ওজনের ব্যাটারি দ্বারা চালিত ম্যাকিনটশ পোর্টেবল বাজারে আসে ১৯৮৯ সালে। কম্পিউটারটি ১৬ মেগাহার্টজ গতিতে কাজ করতে পারত যা সেসময়ে বেশ দ্রুতগতি হিসেবেই ধরা হত।
৭. পাওয়ারবুক
১৯৯১ সালে বাজারে আসা পাওয়ারবুককে ধরা হয় অ্যাপলের আসল পোর্টেবল কম্পিউটার হিসেবে। এর ফ্লপি ডিস্ক ড্রাইভটি কম্পিউটার থেকে আলাদা ছিল এবং ওজনেও কম্পিউটারটি ছিল বেশ হালকা।
কম্পিউটারটি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল এবং ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত এটি ব্যবহৃত হয়েছে।
৮. আইম্যাক
জবস অ্যাপলে ফিরে আসার পরের কম্পিউটার এটি। এই মডেল থেকেই শুরু হয় দূরদৃষ্টিসম্পন্ন স্টিভ জবসের সঙ্গে ডিজাইনার জনি আইভের পৃথিবী পাল্টে দেয়া যুগলবন্দী। অ্যাপলের অন্যতম একটি বড় প্রকল্প ছিল আইম্যাক। ১৯৯৮ সালে বাজারে আসা আইম্যাক দেখতে ছিল পূর্ববর্তী কম্পিউটারগুলো থেকে অনেকটাই আধুনিক।
এতে ফ্লপি ডিস্ক ড্রাইভের বদলে স্থাপন করা হয়েছিল ইউএসবি পোর্ট।
৯. আইম্যাক জি৪
২০০২ সালে জবস প্রযুক্তিপ্রেমীদের পরিচয় করিয়ে দেন আইম্যাক জি৪-এর সঙ্গে। নমনীয় এবং চেপ্টা আকৃতির আইম্যাক জি৪ চিকন ঘাড় এবং প্রয়োজনে সামনের দিকে নিয়ে আসা ও ঘোরানো সম্ভব এমন স্ক্রিনের আইম্যাক জি৪ মুহূর্তের মধ্যেই প্রযুক্তিপ্রেমীদের পছন্দের কম্পিউটারে পরিণত হয়।
১০. ম্যাকবুক
২০০৬ সালে অ্যাপল বাজারে নিয়ে আসে ম্যাকবুক। বিল্ট ইন ‘আইসাইট’ ওয়েবক্যাম, উজ্জ্বল এলসিডি স্ক্রিন এবং সংযুক্ত কিবোর্ডের ম্যাকবুক সহজেই টেকবোদ্ধা এবং প্রযুক্তিপ্রেমীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়।
১১. ম্যাকবুক এয়ার
অ্যাপল বিশ্বের সবচেয়ে পাতলা নোটবুক ম্যাকবুক এয়ারকে বাজারে নিয়ে আসে ২০০৮ সালে। যদিও এতে সিডি বা ডিভিডি ড্রাইভ ছিল না তবুও প্রযুক্তিপ্রেমীরা একে আনন্দের সঙ্গেই গ্রহণ করেছিল। উল্লেখ্য বিষয় যে, এক্সটার্নাল সিডি/ড্রাইভ ব্যবহারের সুযোগ রাখা হয়েছিল নোটবুকটিতে। এতে ছিল ৮০ গিগাবাইটের হার্ডড্রাইভ। আর ব্যাকগ্রাউন্ডের উজ্জ্বল এলইডি ডিসপ্লে নোটবুকটিকে করে তুলেছিল আরও আকর্ষণীয়।
১২. বর্তমান আইম্যাক
আগের মডেলগুলো থেকে চিকন এবং বড় এ সময়ের আধুনিক আইম্যাকে রয়েছে পাতলা স্ক্রিন, আলাদা কিবোর্ড এবং মাউস। সর্বশেষ ২৭ ইঞ্চির আইম্যাকটিতে ব্যবহৃত হয়েছে ইনটেল প্রসেসর এবং ফিউশন ড্রাইভ ডেটা স্টোরেজ যা চিরাচরিত ফ্লাশ স্টোরেজ হার্ড ড্রাইভের সঙ্গে সংযুক্ত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।