আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দ্বীনদারী বা ধার্মিক মেয়েকে বিয়ে করার যোগ্যতা কি আপনার আছে?

আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি
বিয়েঃ

ইসলামে নারী-পুরুষের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের জন্য বিয়েই হচ্ছে একমাত্র বৈধ উপায়। মানুষ বিয়ের করার মাধ্যমেই তার চরিত্র ও সতীত্বকে রক্ষা করতে পারে। পোষাক যেমন মানুষের দেহকে ঢেকে রাখে, নগ্ন ও কুশ্রী বিষয়গুলো প্রকাশ হতে দেয় না, বিবাহ তেমনি স্বামী-স্ত্রীর দোষ ক্রটি ও যৌন উত্তেজনা ঢেকে রাখে, প্রকাশ হতে দেয় না।

কোরআনের বানীঃ

“আপনার পূর্বে আমি অনেক রাসুল প্রেরণ করেছি এবং তাদের জন্য স্ত্রী ও সন্তানের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। ” (রা’দ-৩৮)

“আর তোমরা তোমাদের সন্তানদের বিয়ে দাও যাদের স্বামী বা স্ত্রী নেই।

আর তোমাদের বিয়ের যোগ্য দাস-দাসীদের বিয়ে দাও। ’ (নূর-৩২)

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ

আবদুল্লাহ ইবনু মাসুদ (রাঃ) বলেন, রাসুল (সাঃ) বলেছেন, ‘ হে যুবসমাজ! তোমাদের মধ্য যারা বিয়ের সামথ্য রাখে, তাদের বিয়ে করা কর্তব্য। কেননা বিয়ে দৃষ্টি নিয়ন্ত্রণকারী, যৌনাঙ্গের পবিত্রতা রক্ষাকারী। আর যাদের সামথ্য নেই সে যেন সিয়াম পালন করে। কেননা সিয়াম হচ্ছে যৌবনকে দমন করার মাধ্যম।

(বুখারী, মুসলিম, মিশতাক হা/৩০৮০ নিকাহ অধ্যায়। )

উপরোক্ত কোরআন ও হাদীসে বিয়ের গুরত্ব প্রমাণিত হয়।

۞ বিয়েতে মেয়ের কোন গুনাবলীকে প্রাধান্য দিবেন?

ইসলামের দৃষ্টিতে মেয়ের একটি বিশেষ গুন যাচাই করা জরুরী। তা হচ্ছে মেয়ের দ্বীনদারী বা ধার্মিকতা।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে ত্বাকওয়াশীল, আল্লাহভীরু ব্যক্তি আল্লাহর নিকট তোমাদের সকলের অপেক্ষা অধিকতর সম্মানিত।

(হুজরাত-১৩)

হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসুল (সাঃ) বলেছেন, ‘মেয়েদের চারটি গুনের প্রতি বিবেচনা করে বিয়ে করা হয়,

১. তার সম্পদের প্রতি

২. তার বংশ মর্যাদার প্রতি

৩. তার রূপ ও সৌন্দর্যের প্রতি এবং

৪. তার দ্বীনদারীর প্রতি বিবেচনা করা হয়। কিন্ত তোমরা দ্বীনদার মেয়েকে প্রাধান্য দাও। তোমাদের হাত ধুলায় ধুসরিত হোক। (বুখারী, মুসলিম, মিশতাক হা/৩০৮২)

আবুদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) বলেন, রাসুল (সাঃ) বলেছেন, ‘পৃথিবীর সবকিছুই ভোগ ও ব্যবহারের সামগ্রী। আর সবচেয়ে উত্তম ও উৎকৃষ্ট সামগ্রী হচ্ছে দ্বীনদার ও সচ্চরিত্রা স্ত্রী।

(মুসলিম, মিশকাত হা/৩০৮৩, নিকাহ, অধ্যায়)

ওমর (রাঃ) বলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা কোন সম্পদটি জমা করে রাখব? রাসুল (সাঃ) বলেন, ‘তোমাদের জন্য জমা করে রাখা আবশ্যক ১. শুকরিয়া আদায়কারী অন্তর, ২. আল্লাহকে আহবানকারী জিহবা, ৩. আর এমন দ্বীনদার স্ত্রী যে তোমাদেরকে পরকালের কর্মের প্রতি সাহায্য করতে পারে। ইবনু মাজাহ হা/১৮৫৬, হাদীস সহিহ, তাহকীক আলবানী)

উপরোক্ত কোরআন ও হাদিস পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, দ্বীনদার মেয়েকে বিয়ের ক্ষেত্রে প্রাধান্য দিতে বলা হয়েছে।

۞ দ্বীনদারী বা ধার্মিক মেয়ে কে?

১. যে পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করে।

২. যে রমজান মাসে রোযা রাখে।

৩. যে শুদ্ধ করে কোরআন পড়তে পারে।



৪. যে হিজাব পালন করে।

৫. যে নিজের লজ্জাস্থানের রক্ষা করে।

۞ দ্বীনদার ও সচ্চরিত্রা মেয়ে কোথায় পাবেন?

আল্লাহ তায়ালা বলেন-

‘দুশ্চরিত্রা নারী দুশ্চরিত্র পুরুষের জন্য, দুশ্চরিত্র পুরুষ দুশ্চরিত্রা নারীর জন্য। আর সচ্চরিত্রা নারী সচ্চরিত্র পুরুষের জন্য এবং সচ্চরিত্র পুরুষ সচ্চরিত্রা নারী জন্য। ’ (নূর-২৬)

অত্র আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, চরিত্রহীনা নারী চরিত্রবান পুরুষের জন্য বিবাহ যোগ্য হতে পারে না, তেমন চরিত্রবান পুরুষ চরিত্রাহীনা নারীর জন্য বিবাহ যোগ্য হতে পারে না।

দ্বীনদারী ও চরিত্রের সমতা রক্ষা করা জরুরী।

দ্বীনদারী নারী বিয়ে করতে চাইলে প্রথমে নিজেকেও দ্বীনদার হতে হবে। আর দ্বীনদার হতে হলে-

۞ পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়তে হবে,

۞ রমজান মাসে রোযা রাখতে হবে,

۞ হজ্ব ফরজ হলে করতে হবে,

۞ হালাল উপার্জন করতে হবে,

۞ হারাম বর্জন করতে হবে,

۞ সুদ-ঘুষ-দুর্ণিতি থেকে দুরে থাকতে হবে,

۞ ব্যক্তি ও কর্মজীবনে সৎ থাকতে হবে,

۞ লজ্জাস্থানকে হেফাজত করতে হবে।

হে অবিবাহিত ব্লগার ভাইয়েরা! যদি নিজেকে দ্বীনদার ও চরিত্রবান মনে করেন তাহলে আপনাকে দ্বীনদারী নারী খুজে বের করতে হবে। দ্বীনদারী নারী বিয়ে করার জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতে হবে।

আর একজন দ্বীনদারী নারী বিয়ে করতে পারলেই আপনার দাম্পত্য জীবনে সুখ-শান্তি থাকবে। আখিরাতেও সাফল্য আসবে।

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।