পথের প্রান্তে আমার তীর্থ নয় ,,,,,পথের পাশেই আছে মোর দেবালয়
কাল রাতে স্বামীর কথা শুনেই নজরুলের মা এর মেজাজটা উনপঞ্ছাশ হয়ে আছে। সারাদিন মানুষের বাড়িতে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম শেষে ঘরে গিয়ে কি কথাটাই না শুনতে হলো তাকে!
“নজ্জুলের মা শুনছোস নাকি আকলিমা কিতা কইছে”?
‘কি কইছে ঐ বুড়ির ঘরের বুড়ি’ ?
“তুই খালি বুড়ি বুড়ি কছ ক্যরে? পুতে হাউশ কইরা বিয়া করছে এহন কি করবি” !
‘অহ হাউশ কইরা ডবল বয়সের এক বুড়ি বিয়া কইরা আনছে হ্যারে বুড়ি কওন যাইবোনা না’?
তিক্ত গলায় বলে উঠে নজরুলের মা। তার পনের বছরের ছেলে এক তিরিশ বছরের মহিলা বিয়ে করছে এটা সহ্য করাই তার পক্ষে অসম্ভব। এর মধ্যে স্বামীর কথা শুনলে তার মেজাজ আর ঠিক থাকে না। দশ বছর ধরে পঙ্গু স্বামী টানছে ছোট ছোট ছেলে মেয়ে নিয়ে।
তার মধ্যে একটি মাত্র মেয়ে সেও অসুস্থ। ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে সব সহ্য করছিল। যখন ছেলে এই বুড়ি বিয়ে করে আনলো তখন সে সত্যি সত্যি মর্মাহত। চুরমার হয়ে ভেঙ্গে গেল তার ভবিষ্যত নিয়ে সমস্ত আশা আকাঙ্ক্ষা।
নজরুলের বাবার ধারণা ছেলে শখ করে বিয়ে করেছে এখন বৌকে আদর করলে ছেলেও হাতে থাকবে।
এই জিনিসটা নিজের বউকে কিছুতেই বুঝাতে পারে না। শুনলেই অগ্নি মুর্তি ধারণ করে বলে উঠে,
‘ক্যারে আমরা কি পুত বিয়া দিয়া তার বাপের বাড়িত থিকা চাইর পাচ লাখ টাকা যুতুক আনছি যে তারে আমাগো সমাদর করতে হইবো! এইডা আফনে কি কন!’ রাগে গা জ্বলে যায় নজরুলের মা এর।
ছাদের উপর ছোট্ট চিলে কোঠার ঘরটি তিন হাজার টাকা দিয়ে ভাড়া থাকে। দুই হাত চওড়া একটা চৌকি ফালানোর পর এক হাত জায়গাও যেন অবশিষ্ট নেই। তাকে।
এর মাঝেই কাপড় চোপড় রান্নার সরঞ্জাম বালতি বদনা কোন মতে গুছিয়ে রাখা। ছাদের এক কোনায় মাটির চুলায় রান্নার বন্দোবস্ত। গোসলখানা পায়খানা সব নীচে। এমনকি পানির কলটা পর্যন্ত নীচে। বালতি ভরে টেনে তুলতে হয় তাকেই ।
ক্লান্ত নজরুলের মা মুখে একটা পান দিয়ে চৌকির এক কোনায় বসে প্রশ্ন করে,
‘কি হইছে? কি করছে তোমার পেয়ারের বউ’?
ঢোক গিলতে গিলতে বেলায়েত মিয়া বলে উঠে, “তুই আবার চেতিছ না কথা শুইন্যা, কথা হইলো গিয়া নুজ্জুলের বউ আকলিমা দেশে ফুন দিয়া আমার মায়েরে কইছে যারা যারা এজতেমায় আইসা মোনাজাত করতে চায় তারা যেন সবাই ঢাহার বাড়িত আইসা পরে’।
‘কি কইছে!কি কন আপনে?হজ্ঞলরে আইতে কইছে ?আমি যে আগেই তাগোরে না করছি এই শীতের মধ্যে কেউ জানি না আহে,এইহানে অনেক কষ্ট । বাড়িত বইয়াই জানি তারা টিভিতে মুনাজাত ধরে। আমার কথার উপর দিয়া এত মাতব্বরী তার’!
“হ আমার ছুডু খালা খালু পুলাপান নিয়া ভাঢির দ্যাশ থিক্কা বেরাইতে আইছে আমগো বাড়ী, হ্যাগোও আইতে কইছে, তারাও আইবো”
কাঁপা কাঁপা গলায় কোনমতে এটুকু বলতে পারে সে। নিজে সে পঙ্গু সারাদিন বিছানায় পরে থাকে।
এক পয়সা রোজগার নাই। যা নজরুলের মা বাড়ি বাড়ি কাজ করে সংসার টানছে। সে কি করে জোর গলায় কথা বলবে। নিজেও বুঝে এই বাজারে দশ বারো জন মানুষ সাতদিন তাদের উপর থাকা তাদের জন্য বিরাট বোঝা। কিন্ত তারও মনের একটা সুপ্ত ইচ্ছা মা আসুক, তার মনের আশা পুরণ হোক।
“বুঝলি মাইনষে কয় এইডা নাকি ছুডু হজ্ব। তয় আমরা গরীব মানুষ মক্কা শরীফ যাইয়াতো আর হজ্ব করতে পারমুনা, এর লিগা এই মুনাজাতে শরীক হইলে হজ্বের ছোয়াব হইবো বুঝলি”।
‘এতটি মানুষ কই থাকবো, শুইবো কই? লেপ তুষুক বানাইয়া রাখছে মনে অয় তোমার পুতের বউ। আর হেরাই বা কি!এট্টুক বিবেক হইলোনা। আমি যেন ঢাহা শহরে ফেলাট বাড়ী ভাড়া কইরা বইছি’! রাগত গলা নজরুলের মায়ের।
“কি করবি ক ? বউ কইয়া ফালাইছে” কাশিটা চেপে কোনমতে ধরা গলায় বলে উঠে বেলায়েত মিয়া।
‘আর এত্তটি মানুষ আইবো তাগো এই আলগা মাটির চুলায় রান্না বাড়া কইরা খাওয়াইবো কেডা’ নিজে গো রান্না কইরাই পেরেসান আমি? আপ্নের পুতের বউইতো গারমেন কইরা আইসা বিবি সাবের মত রেডিমেট ভাত খায়’।
“তুই চিন্তা করিসনা সখিনা, আকলিমাই রান্না করবো, হ্যায় যখন ডাকছে”।
‘হু করবো না!শেষে আমারই সব করন লাগবো’ গজ গজ করতে থাকে সখিনা।
কি কপাল নিয়া এই দুনিয়ায় আসছিল ভেবে কুল পায়না সে।
বাবা মার আদরের ছোট মেয়ে। বাপ গ্রামের মসজিদের মুয়াজ্জিন। অষ্টম শ্রেনী পর্যন্ত পড়া ছাড়াও অনেক কোরান হাদীস জানে। গরু বাছুর ক্ষেত খোলা নিয়ে সচ্ছল সংসার । তিন ছেলে চার মেয়ে।
এক ছেলে আর সখিনার বিয়ে বাকি। সখিনার বিয়ের কথা সে মাঝে মাঝে ভাবে কিন্ত মেয়ের মা রাজী হয়না। বললেই বলে আরো দুই এক বছর যাক। কিন্ত তার মা মাঝে মাঝে খোচায়। ‘নাত্নীর বিয়ে দিতে হইবো, পাত্র দেখ’।
‘এত পাগল হইছেন ক্যান আপনে? সখিনার বয়স কত ? মাত্র বারো বছর । আরো দুই এক বচ্ছর হাইস্যা খেইল্লা যাইতে দেন। বিয়া হইলেই তো বান্দীর জীবন’, বলে উঠে সখিনার মা।
“এইডা কি কইলা রহিমের মা? তুমি কি বান্দীর জীবন কাটাইতাছো! কউ দেহি”! আশ্চর্য্য হয়ে যায় জনুরুদ্দিন কিন্ত সখিনার মা আর উত্তর করে না।
পাশের গ্রামের ফকির আলী কি কাজে জানি একদিন সখিনাদের বাড়িতে আসে।
সেসময় সখিনারে দেখে খুব পছন্দ তার। ফর্সা দোহারা গড়ন মাথায় কাপড় দিয়ে উঠান পার হয়ে রান্না ঘরের দিকে যাচ্ছিল। এক নজর দেখেই তার মনে হলো এই মেয়ের সাথে তার বড় ছেলে বেলায়েত মিয়ার বি্যে হলে খুবই ভালো হবে।
সে নিজেও একজন সম্পন্ন গৃহস্থ, ক্ষেত খোলা আছে, আম কাঠালের বাগান আছে, গরু ছাগল কিছুর অভাব নেই। পাঁচ ছেলে দুই মেয়ের মধ্যে বেলায়েতই সবার বড়।
সংসারে তার কোন অভাব নেই
কিছু দিন পর সে ঘটক পাঠায় সখিনাদের বাড়ী। সখিনার মা কিছুতেই রাজী হয়না। শেষ পর্যন্ত অনেক ধর পাকড়ের পর সখিনার সাথে বেলায়েত মিয়ার বিয়ে হলো এক অগ্রহায়নে।
সুখের সংসার সখিনার। শশুড় শাশুড়ির আদরেই দিন কাটে।
কাজ করতে হলেও তেমন কঠিন কিছু করা লাগে না। এমনিতে ভারী কাজের জন্য মুনিষ নেয়। তাছাড়া তার স্বামী আর ভাইয়েরাও অনেক পরিশ্রমী।
দুই বছরের মাথায় কোল আলো করে ছেলে আসে। শশুড় আদর করে নাম রাখে নজরুল ইসলাম।
চাচা ফুপুদের কোলে কোলে নজরুল বড় হতে থাকে।
এরই মাঝে নজরুলের বাবা কেমন জানি দুর্বল হতে থাকে। সামান্য পরিশ্রমেই হাপিয়ে ওঠে। গৃহস্থালি কাজ পানি কাদা ঘাটতে হয়, একটুতেই কাশি আর ঘুস ঘুসে জ্বর আর সারা শরীরে ব্যাথা। ভয় পেয়ে যায় সখিনা।
শাশুড়িকে বললে পর উনি বল্লো
‘এইডা কুনো বেফার না গিরস্তি কামে এমুন হয়ই, আদা দিয়া গরম পানি খাওয়াও আর শরীলে সইরষার তেল গরম কইরা মালিশ করো, ভালো হইয়া যাইবো’।
সখিনা শাশুড়ির কথা মত তাই করে কিন্ত তাও কোন উপকার হয়না। এর মধ্যে তার আবার বাচ্চা পেটে। কি করে কই যায় ভেবে ভেবে অস্থির হয়ে ঊঠে সে। গ্রামের কবিরাজ থেকে শুরু করে উপজেলা ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায় অসুস্থ স্বামীকে।
কিছুতেই কিছু হয়না। আস্তে আস্তে একেবারেই শয্যাশায়ী হয়ে পরলো বছর খানেকের মধ্যে। এখন সে পুরাই পঙ্গু। শশুড় মারা গেল। আস্তে আস্তে সোনার সংসার যেন ছাই হয়ে গেল।
খাওয়া পরা আর ননদদের বিয়ে দিতে গিয়ে ক্ষেত খোলা গরু বাছুর সব শেষ।
এর মাঝে আরেক কন্যা সন্তানের মা হয়েছে সখিনা। তার সোনার বরণ গায়ের রঙ এখন কালি চোখের পানিতে দিন কাটে তার। সে যেন সবার গলগ্রহ। বাবাও মারা গেছে।
ভাইয়েরা বিয়ে করে ভিন্ন। মাকে নিয়েই ভাইদের ঠেলাঠেলি। সে সেখানে কোথায় উঠবে!
সখিনার দুঃখের দিন আর শেষ হয়না। চারিদিকে যেন ঘোর অন্ধকার। এমন সময় পাশের বাসার রাহেলা ঢাকায় কাজ করে সে দশ দিনের জন্য গ্রামে আসে।
সখিনাকে সে খুব পছন্দ করতো। তার কথা শুনে জিজ্ঞেস করলো, “ভাবী আমার লগে ঢাহা যাবি? সেই খানে কাম করবি”।
‘কাম করমু ?আমি শহরে গিয়া কি কাম করমু?
“আমার মত বাসা বাড়িতে কাম করবি”।
‘তুই এইডা কি কস রাহেলা! বাসা বাড়িতে কাম করমু !মাইনষে কি কইবো ’!বিস্ময়ের সাথে সাথে সখিনার গলাও যেন এক পর্দা উপরে চড়ে যায়।
‘মানুষের কথা চিন্তা করলে তরে পুলাপাইন লইয়া না খাইয়া মরতে হইবো বুঝলি, মাইনষে কি তরে খাওয়াইবো না পরাইবো শুনি’?
অনেক ভাবনা চিন্তার পর এক দিন স্বামী সন্তানের হাত ধরে ঢাকায় এসে হাজির হয় সখিনা রাহেলার সাথে।
তারপর এক সংগ্রামের ইতিহাস। এখন সে ঢাকার অন্ধি সন্ধি সবই বুঝে। কি ভাবে বিবিসাহেবদের সাথে টক্কর দিতে হয় এখন আর তাকে শিখাতে হয়না। প্রথম প্রথম কি পরিশ্রমই না করেছে তাদের মন যোগাতে। এখন এক বাসার কাজ ছাড়লে আরো দুটো এসে জুটে।
ছেলে মেয়েরা বড় হতে থাকে। ছেলে একটু বড় হলে ভ্যান গাড়ী চালানোর কাজ নেয়। এক বেলা চালায় এক বেলা বিশ্রাম। যা রোজগার করে তাদের কোনমতে দিন চলে যায়। মেয়েটাকে ছোট বেলায় ঠিকমত খেতে দিতে পারে নি।
ভাতের ফ্যান আর শাক সিদ্ধ জুটতো তার মেয়ের কপালে। সেই যে রুগ্ন স্বাস্থ্য তা আর ভালো হলোনা। সেও আরেক রোগী।
এরই মাঝে সখিনা শুনলো তার নয়নের মনি নজরুল বিয়ে করেছে তাদের না জানিয়ে। তারপর আরো যেটা শুনলো তা হলো ছেলের দ্বিগুন বয়সী সেই বউ আরেকজনের কাছ থেকে তালাক নিয়ে ভালোবেসে নজরুলকে বিয়ে করেছে।
লুকিয়ে বিয়ে করা মেনে নিলেও বয়সটা মেনে নিতে পারেনি সখিনা কিছুতেই।
সেই বুড়ি বৌ আজ তাকে না জানিয়ে দেশের সব লোককে এজতেমায় দাওয়াত দিয়ে বসেছে। রাগে গা কিড়মিড় করতে করতে ভাত বসালো। এই বৌতো তার সর্বনাশ করে ছাড়বে। রাতে ঠিকমত খেলোনা,ঘুমও আসছে না ঠিকমত।
ভোরের দিকে ঘুম ভেঙ্গে গেল ছেলে আর বউ এর চাপা গলার ঝগড়ায়। কি ব্যাপার কানটা খাড়া করে সখিনা।
‘তুই কি কস ! তর গারমেন ছুটি দিছে তুই কাইল বাপের বাড়ি যাবি? এত্তটি মানুষ দাওয়াত কইরা তুই সব মা এর ঘাড়ে ফালাইয়া দেশে যাবি? তুই এইডা কি কস’!চাপা রাগ আর বিস্ময় ঝরে পরে নজরুলের গলায়।
‘হ আমি যামু এতদিন পর ছুটি পাইছি, আমি দেশে যামু। আর আমি এত মাইন্সের রান্না করতে পারতাম না’।
“তয় যে তুই ফুন কইরা দুইদিন ধইরা কইলি,
দাদু আইয়েন, দাদু আইয়েন আখেরি মোনাজাতে। কি ছুডু দাদু আইছে ভাটির দ্যাশ থেইক্কা? তয় তারেও নিয়া আইয়েন’।
“আর এহন কস তুই বাড়িত যাবি। মায় তরে এই বাড়িতে আর জায়গা দিবোনা মনে রাখিস, আমিও তরে আনতে যামু না”।
সখিনার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে।
শাশুরী তার মেয়ের ঘরের নাতি নাতনী ছাড়া চলতে পারে না। তারাও আসবে, কমপক্ষে আট দশজন মানুষ। সকালে উঠে নজরুলের বাবার প্রাতকালীন সব কাজ সেরে ভাত খাইয়ে কাজের বাসার দিকে দৌড় দিতে দিতে দেখে বউ বাপের বাড়ি যাবার জন্য কাপড় ভাজ করছে। কোন কথা না বলে কাজের বাসার দিকে রওনা দেয়। দেরী করে গেলে বেগম সাহেবের কথা শুনতে হবে।
সন্ধ্যায় বাসায় গিয়ে দেখে বাসা ভর্তি গিজ গিজ করছে লোকজন। অল্প শোকে কাতর অধিক শোকে পাথর সখিনা রান্নার জন্য এক চিলতে জায়গাটায় গিয়ে ঢোকে।
পরদিন
রাতে ভাত খেয়ে শাশুড়ি চৌকিতে বসে বলে উঠে ‘বউ মুনাজাতের দিন তুমি আমারে লইয়া এজতেমার মাঠে যাইও’।
আর সহ্য হয়না সখিনার, শ্লেষ মেশানো গলায় বলে উঠে ‘নিমুনে, আপ্নেগো লিগাতো মুনাজাতের মাঠে সুফা বসাইয়া থুইছে’।
তার কথার ধারে শাশুড়ি হতবাক।
মা এর পাশেই আধশোয়া পঙ্গু বেলায়েত মিয়া উঠে বসার চেষ্টা করে আর বলতে থাকে।
“এইতা কি কইলে তুই নুজ্জুলের মা !আমার মায়োরে তুই এইতা কি কইলি”!
রাগ আর বিস্ময় ফুটে উঠে সখিনার স্পর্ধিত কন্ঠ শুনে।
খরখরে গলায় নজরুলের মা উত্তর দেয়,
“ঠিকই কইছি। আমি তারে লইয়া এজতেমার মাঠে যামু এইডা কি কথা! মাইনষের ধাক্কাধাক্কি খাইতে! টিভিতে মূনাজাত দেখাইবো, বাড়িওলির বাসায় গিয়া হেইতা দেইক্ষা মুনাজাত ধরলেই হইবো”।
এবার শাশুড়ি বলে উঠে ‘এইতা কি কউ বউ! টিভি দেইখা মুনাজাত করুম!এত দূর থিকা নাতি বউ দাওয়াত কইরা আনলো টিভি দেইখা মুনাজাত করনের লিগগা’! বিস্ময় ঝড়ে পরে তার কন্ঠে।
“ঠিকই কই, যে দাওয়াত কইরা আনছে তারে কইন যে, আর আমার বাসার থিকা ছুটি দিবোনা” ।
"কুন অফিসারের ফুষ্টে চাকরী করছ তুই যে একদিন ছুটি দিবোনা শুনি"? রাগত গলা বেলায়েত মিয়ার।
সখিনা চারিদিকে তাকিয়ে দেখলো ছোট থেকে বড় সবাই কেমন ধিক্কারের দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছে।
ঘাড়টা আস্তে আস্তে নীচু হয়ে আসে। চৌকির তলা থেকে বের করে রান্নার সরঞ্জাম, চাল ডালের কৌটা, আলু, পেয়া্ মশল্লা সব কিছু।
চৌদ্দজন মানুষের রান্না করতে হবে। ছাদের কোনায় রান্নার জায়গায় বসে চাল ভরা হাড়িটা হাতে নেয় । টপ টপ করে ঝরে পরা চোখের পানিতে নাকি তিন তলা পর্যন্ত টেনে আনা ভরা বালতির পানিতে ধুয়ে যায় মোটা মোটা কাঁকর মেশানো লাল চাল বুঝে উঠতে পারে না সখিনা ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।