যে পথে আমার মৃত্যু আমি সেই পথে একবার- বার বার, বহুবার ফিরে যাই!
রাতে খেতে বসলেই মা ইনিয়ে-বিনিয়ে নানা রকম কথা বলা শুরু করে। আমি সাধারণত দুই-এক কথায় উত্তর দিয়ে দেই। এক কথা বারবার বলা তার রোগ। এই রোগটা তার আগে কম ছিল। অথবা বাবা ছিল বলেই হয়তো দেবে ছিল।
বাবা ছিলেন একি সাথে প্রচন্ড রাগী আর বুদ্ধিমান এক মানুষ। এই দুইটা গুণ সাধারণত একসাথে থাকে না। মা এক কথা দুইবার বললেই বাবা কঠিন ধমক দিতেন। আজকেও আমি সব উত্তর হু হু করেই দিয়ে যাচ্ছি। মাথার ভিতরে এখন অনেক রকমের চিন্তা।
'বাপ, বুকের ভিতরটা ব্যথা করে বুঝলি। সারাক্ষণ ব্যথা। কাজ-কাম কিছুই ঠিক মত করতে পারি না। '
আমি বললাম, 'হু!'
'কঠিন ব্যারাম ধরছে বুঝলি। রোগটা সহজ কিছু না।
'
এইটাও আমার মায়ের আরেকটা সমস্যা। ছোটখাটো কোনো অসুখকেই সে বড় ধরণের রোগ চিন্তা করে আনন্দ পায়। সাধারণ সর্দি কাশিতেই সে মহা ব্যস্ত হয়ে ওঠেন। দিনে তিনবার তওবা পাঠ করা শুরু হয় তার। মৃত্যুর পূর্বপ্রস্তুতি তিনি এই জীবনে বহুবার নিয়ে নিয়েছেন।
তবে আজরাইল তার কাছে আসেনি। আমার বাবার কাছে সে বলা নেই কওয়া নেই চলে এসেছেন। আমার বাবা ছিলেন মায়ের একদম উল্টো। কি তার শরীর! ষাট বছরেও তাকে মনে হত চল্লিশ বছরের যুবা পুরুষ।
আমি মায়ের কথায় কান না দিয়ে উঠে গেলাম টেবিল থেকে।
আজ মেজাজটা একদম খারাপ। মেজাজ খারাপের কারণ অদিতি। আজ বলা যায় ওর সাথে সম্পর্কের এক ধরণের ইতি হয়ে গেল। বিকেলে দেখা করতে গিয়েই আজ যেন সবকিছু চুরমার হয়ে গেল। ও এসেই বলল ওর বিয়ে একদম ফাইনাল।
আমি বললাম বিয়েটা ভেঙ্গে দেয়া যায় কি না-
অদিতি তখন বলল, 'এর আগেও তো কাটিয়ে দিয়েছি। কিন্তু এভাবে কি আর হয়? আমার বাবা তো বলেই দিয়েছে তোমার মত ভ্যাগাবন্ডের সাথে আমাকে কিছুতেই বিয়ে দেবে না। '
আমি এবার ক্ষেপে গিয়ে বললাম, 'আরে এমন তো নয় এখন আমি কিছুই করি না। আগে না হয় এদিকে-ওদিকে ঘুরতাম। রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম।
এখন তো একটা ব্যবসা দাঁড় করে ফেলেছি। আর রানা ভাই তো অনেক বড় একটা কাজ জোগাড় করে দিয়েছেন। এই কাজটা করতে পারলেই না একদম উপড়ে উঠে যাবো!'
আমি আরো অনেক বোঝাতে থাকলাম ওকে। শেষে তো বলেই ফেললাম, 'চল এখনই বিয়ে করে ফেলি। সুমনদের ডাকি।
ওরা সাক্ষী থাকবে। বিয়ে হয়ে গেলে রানা ভাইকে দিয়ে সবকিছু ম্যানেজ করে নেব। '
অদিতি অবাক হয়ে বলল, 'পাগল নাকি! বাবা এমনিতে হার্টের রোগী। এরকম করলে তো বাবা একদম শেষ হয়ে যাবে। তাছাড়া বড়পা এমনিতেই পালিয়ে বিয়ে করল।
এখন যদি আমিও... একটু বোঝ না!'
অদিতি যে আমার হাত ছাড়া হয়ে যাবে সেটা আমি এক রকম নিশ্চিত হয়েই ছিলাম। দু'-একটা প্রেম তো মানুষ এরকম করেই। মনে মনে আমার ঠিক এরকম এক দৃশ্যের প্রস্তুতিও ছিল। ব্যবসাটা নিয়ে আমার এখন অনেক প্ল্যান। এর মধ্যে হুটহাট করে বিয়ে করার কোনো ইচ্ছাই আমার নেই।
তাছাড়া মনে মনে আরেকজনকে পছন্দ করে রেখেছি। আমাদের পাশের বাসায় নতুন ভাড়াটিয়া। মেয়েটার মুখ কি অদ্ভুত নিষ্পাপ। কলেজে বোধ হয় নতুন ভর্তি হয়েছে। দেখা হলেই মিষ্টি হাসি দেয়।
তবে এক ছোকরার সাথে মনে হয় প্রেম-ট্রেমও করে। ব্যপার না, সময় আসলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া যাবে।
আমি অদিতির এসব কথায় কিন্তু উপড় উপড় খুব রাগ দেখালাম। অদিতি কাঁদতে শুরু করল। আমি ওকে পার্কে একা রেখেই চলে আসলাম।
রাতের এই সময়টা অদিতির সাথে কথা হত। আহ, কতদিন রাত পার হয়ে গেছে তবুও কথা শেষ হয়নি। অদিতি বলত, কাল ক্লাস আছে এখন একটু ঘুমাই?
আমি ছাড়তাম না ফোন। নাহ, আজ ব্যবহারটা বেশীই খারাপ হয়ে গেছে। দুই-চার লাইন বানিয়ে বানিয়ে শুভকামনা জানিয়ে দেয়া উচিৎ।
সেই ছেলে তো থাকে ইতালি। ওকেও নিয়ে যাবে মনে হয়। আবার কবে দেখা হবে! শুধু শুধু ও ভাববে আমি অভিমান পুষে রেখেছি।
খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে পড়েছি আজ। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে হবে আজ।
তার আগে রানা ভাইয়ের সাথেও দেখা করা দরকার। মা এই সকালেই আমার জন্য নাস্তা বানিয়ে ফেলেছেন। আমি খেতে বসলাম। মা আবারো শুরু করল,
'ব্যথা তো দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে, বাপ। কি যে করি।
'
আমি এবার ক্ষেপে উঠে বললাম, 'এক কথা তুমি এত বার বার বল কেন? কালই তো শুনলাম। একটা জরুরী কাজে যাচ্ছি। এখন এসব না বললে হয় না?'
মা চুপসে গেলেন। সুমন মোটসাইকেল নিয়ে চলে এসেছে। এক্ষুনি বের হতে হবে।
আমি যাবার আগে মা কে বলে গেলাম আজ সন্ধ্যায় ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাব তৈরী থেকো।
সারাদিন অনেক ব্যস্ততায় কেটে গেল। বাসায় ফিরতে ফিরতে অনেক রাত হয়ে গেল। মায়ের সামনে একটু লজ্জায় পেয়ে গেলাম। তাকে আমার ব্যস্ততা একটু বোঝানোর চেষ্টা করলাম।
একটু উপদেশও দিয়ে দিলাম, 'গ্যাস্ট্রিকের জন্য বুকে ব্যথা হয়। একটা অ্যান্টসিড খেয়ে ঘুমাও। ' পরদিন অবশ্য মাকে নিয়ে গেলাম ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার বলতে পাড়াতো ডাক্তার। নিজের একটা ওষুধের দোকান আছে।
এক সময় সদর হাসপাতালে চাকরী করত। ডাক্তারদের পাশেপাশে থাকতে থাকতে সে এখন নিজেই ডাক্তার। তবে তার হাতের কাজ ভালো। ওষুধে রোগ সারে। তিনি মাকে দেখে তার বিদ্যায় যতদূর যায় তা নিয়ে কয়েকটা ওষুধ লিখে দিলেন।
আমিও হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। ঝামেলা শেষ হল।
এদিকে আরেক সমস্যায় পড়লাম। বলা উচিৎ মহাসমস্যা। টাকার সমস্যা।
টাকার জন্য নতুন কাজটা আঁটকে গেল। আমি দৌড়ে গেলাম রানা ভাইয়ের কাছে। তার জন্য এই কাজটা পাওয়া। সে আমাকে তার ছোটভাইয়ের চেয়েও বেশী স্নেহ করেন। তার কাছে থেকে আমি অবশ্য অনেক কিছু দাবীও করতে পারি।
তারজন্য আমরা কতকিছুই না করলাম। এক ছেলেকে তো মারতে মারতে মেরেই ফেললাম। সে নিয়ে কত ঝামেলা। এক মাস গা ঢাকা দিয়ে থাকতে হল। রাজনীতিতে কত কিছুই না চলে।
রানা ভাইও এমপি হল আমাদেরও ভাগ্য খুলল।
ভাই বলল, 'বুঝলি, টাকা খাওয়া ঠিক জায়গায়। ইঞ্জিনিয়ারগুলোরে আগে টাকা খাওয়া। সরকারী ইঞ্জিনিয়ার এই শালারা। টাকা ছাড়া নড়বে না।
'
টাকার সমাধান আমি নিজে নিজেই বের করে ফেললাম। রাতে মায়ের খোজ-খবর নিলাম।
'কি অবস্থা মা? এখন শরীরটা কেমন?'
'ওষুধে তো কাজ হয় না রে। একবার বড় ডাক্তর দেখান লাগে। '
আমি বিরক্ত হয়ে বলি, 'এসব তোমার মনের অসুখ মা।
আর দুই দিন খাও ঠিক হয়ে যাবে। '
মা কিছু বলে না। চুপ করে থাকে। আমি এবার আসল কথাটা বলি
'আমি একটা বড় কাজ পাইছি। এখন কিছু টাকা জন্য কাজ আটকে গেছে।
আমি ঠিক করছি গ্রামের জমিটা বিক্রি করে দেব। '
মা প্রথমে রাজি হয় না। বলে একটা মাত্র জমি, আমার বাপ-দাদার স্মৃতি। আমি খেঁকিয়ে উঠি। বলি, 'এসব ফালতু সেন্টিমেন্ট নিয়েই তোমরা মরলে।
কাজটা হলে এরকম দশটা জমি কিনে দেব তোমাকে। ' এক রকম মায়ের অসম্মতিতেই আমি গ্রামে রওনা দিলাম। একদম অজপাড়াগা। এখনো ইলেক্ট্রিসিটি এসে পৌছেনি। আমারই এক চাচা অনেকদিন ধরে জমিটা চাচ্ছিল।
তার কাছে দিয়ে দিলাম। কাজ শেষ করতে করতে তিনদিন লাগলো। মোবাইলের চার্জটাও দিতে পারিনি। ফোন বন্ধ ছিল। ফিরে এসেই শুনি মা হাসপাতালে।
আমি সেখানে দ্রুত ছুটলাম।
হটাৎ করেই নাকি বুকের ব্যথা বেড়ে গেছে। অজ্ঞান হয়ে পড়ে ছিল। পাশের বাসার খালাম্মা দেখে ওরাই নিয়ে এসেছে। আমি ডাক্তারদের সাথে কথা বললাম।
তারা কিছু বুঝতে পারছে না। তারা ঢাকায় রেফার্ড করে দিল। আমি মহাবিরক্ত হলাম। এরা কি ঘাস খেয়ে ডাক্তার হয়েছে নাকি? এদিকে ঢাকা যাওয়া মানেই অনেক খরচ, তাছাড়া এখন টাকাটাও ঠিক জায়গায় কাজে লাগাতে হবে। রানা ভাইও দেখলাম এসেছে।
ডাক্তাররাও অনেক খাতির যত্ন করছে তাকে। তিনি সবার সাথেই হাসিমুখে কথা বলছেন। মার কাছে যেয়েও আশ্বাস দিয়ে আসলো, 'খালাম্মা কোনো চিন্তা করবেন না। আমাকে আপনার আরেক ছেলে ভাববেন। '
আমার কাছে এসে বলল, 'তুই খালাম্মাকে নিয়ে ঢাকায় চলে যা।
আমি ওখানে বলে দেব। হাসপাতালে সিট দিয়ে দিবে। এদিকটা আমি দেখবো'। আমি আমতা আমতা করতে লাগলাম।
মাকে নিয়ে ঢাকায় আসতে হল।
রানা ভাইয়ের ঠিক করে দেয়া লোকের নাম মজনু। সে অতি দ্রুত হাসপাতালে সীটের ব্যবস্থা করে দিল। তবে ধুরন্ধর লোক। এরই মধ্যে আমার থেকে হাজার টাকা বাগিয়ে নিল। হাসপাতালে মায়ের কাছে থাকতে আমার ভালো লাগে না।
রাস্তায় বের হয়ে সিগারেট টানি। চারপাশে রোগী আর রোগী। গা ঘিনঘিন করা পরিবেশ। পাশে একজন না থাকলেও অবশ্য চলে না। সরকারী হাসপাতাল, সবসময়ই এটা-ওটা চুরি হচ্ছে।
প্রথম দিনই অনেকগুলো টেস্ট করতে দিল। আমি ডাক্তারদের চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করে ফেললাম। সামান্য বুকে ব্যথার জন্য এত টেস্ট! পরদিন ডাক্তার আমাকে ডেকে নিলেন তার চেম্বারে।
'আপনার মা যে বুকে ব্যথার কথা বলে সেটার তো কোনো কারণ খুঁজে পেলাম না আমরা। '
'তাহলে কোনো অসুবিধা নেই?' আমি একটু আনন্দিত হয়ে বলি
'আসলে ব্যপারটা সেটা না।
ব্যথার সমস্যার কথা উনি বলেছেন। ওদিকটায় কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু যে রোগটা আসলে অন্য জায়গায়। সেটা বেশ ভয়াবহ। '
আমি আতঙ্কিত গলায় বলি, 'তাহলে অসুখটা কি?'
'মেডিক্যাল সায়েন্সের ভাষায় বললে আপনি হয়তো বুঝবেন না।
সহজ কথায় ব্লাড ক্যান্সার। '
আমি আকাশ থেকে পড়লাম। এরকম ভয়াবহ রোগ কিভাবে হল? আমি ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা করি, 'তাহলে? এক কোনো চিকিৎসা নেই?'
'চিকিৎসা আছে ঠিকই। কিন্তু যে স্টেটে পেশেন্ট আছে খুব একটা আশা করা যায় না। কিন্তু তার পরেও তো চিকিৎসা করতে হয়।
না কি?'
আমি বলি, 'অবশ্যই। আপনারা প্লিজ একটু দেখুন। '
আমি খুব হতাশ হয়ে পড়ি। আমার ভাগ্যটাই আসলে এরকম। শেষ পর্যন্ত কিছুই আমার ভাগ্যে জোটে না।
কাজটা হয়তো এখন ছেড়ে দিতেই হবে। এই টাকা দিয়েই মায়ের চিকিৎসা চালাতে হবে। টাকাটা জলের মত খরচ হবে। আমাকে নিঃস্ব করে মা হয়তো তার মতই চলে যাবে। খুব রাগ হয় মায়ের উপড়।
দিন চলে যেতে থাকে। মাঝে মাঝে ভাবি তাকে ছেড়ে চলে গেলে কেমন হয়?
মায়ের পাশে চুপ করে বসে থাকি। মা মাঝে মাঝে বলে, 'জমি বিক্রি করাটা বেঠিক কাজ হল। '
আমি তেঁতো মুখে বলি, 'সেই টাকাতেই তোমার চিকিৎসা চলে। জমি না বিক্রি করলে তো ঘরে বসে পচতে হত।
'
মা অবশ্য আমাকে ঝামেলা থেকে মুক্ত করলেন দ্রুত। প্রথম কেমো নেয়ার পরেই তিনি মারা গেলেন। তার শরীর এই বিষের সাথে মানিয়ে নিতে পারলো না।
আমি কিন্তু মায়ের মৃত্যুতে খুব কাঁদলাম। কেন এত কাঁদলাম নিজেই জানি না।
বাবাকে আমার এত পছন্দ ছিল কিন্তু তার মৃত্যুতে আমাকে কাঁদতে হয়েছিল জোড় করে। মায়ের মৃত্যু অনেকটা প্রত্যাশিত। কিন্তু তারপরেও কি যেন হয়ে গেল। নিজেকে প্রচন্ড একা লাগে। বন্ধুরা আসে সঙ্গ দিতে আসে।
তারপরেও আমি বাসা থেকে বের হইনা। কতদিন অন্ধকারকে ভালো মত উপভোগ করি না।
একদিন অদিতি আসলো। ঢাকা থাকতেই শুনেছি ওর বিয়েটা হয়ে গেছে। ভিসাও নাকি ওর হয়ে গেছে।
ইতালি চলে যাবে খুব তাড়াতাড়িই। অদিতি আমাকে নিয়ে বের হয়। আমি আর আজ না করি না। দুজনে নদীর পাড়ে বসি। অদিতি অনেক কথা বলে।
অনেক কিছু বোঝায়। আমি নদীর দিকে উদাস তাকিয়ে থাকি। এক্সময় বলি-
'জানো, আমি যখন ছোট। কতই বা বয়স হবে? সাত-আট। সেবার বর্ষায় আমরা এই নদী দিয়ে নানাবাসায় যাচ্ছিলাম।
মাঝ নদীতে নৌকা ডুবলো। আমি তখন অনেক বেশী মোটা ছিলাম, সাঁতারটাও জানতাম না। স্রোতের ভিতরে সবার টালমাতাল অবস্থা। আমার বাবা আমাকে ধরেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সামলে উঠতে না পেড়ে ছেড়ে দিয়েছিল।
আমার মা সেখানে আমাকে খুঁজে বের করেছিল। তার সেই ছোট্ট শরীরের মাঝে আমাকে জড়িয়ে নিয়ে পাড়ে ওঠে। ' আমি জোড়ে জোড়ে শ্বাস নেই। 'যখন আমি মা কে নিয়ে হসপিটালে ছিলাম তখন না আমার মাঝে মাঝেই তাকে এক ফেলে চলে আসতে ইচ্ছা করত। মনে হত আমাকে একদম শেষ করে দেয়ার জন্য তার এই অসুখ।
সেদিন কিন্তু আমার মা আমাকে ছেড়ে দেয়নি!'
অদিতি আমার কথা শোনে। আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। আলতো করে বলে, 'ওসব আর ভেবো না। ওরকম স্ট্রেসের সময় মানুষের কত কিছুই তো মনে আসে। এখন যা করছ সেটা আবার মন দিয়ে কর...'
সন্ধ্যা নামতে থাকে।
অদিতি বলে ওর যেতে হবে। আমি বলি, তুমি চলে যাও। আমি আর একটু বসি। লালচে আকাশ এক সময় গাঢ় অন্ধকারে ডুবে যায়। আমার মাথায় কত অজস্র চিন্তা, কত নিযুত স্মৃতি খেলা করে।
এক সময় আমি উঠে দাড়াই। হটাৎ আমার বুকের মাঝে ব্যাথা করে ওঠে। আমি পাত্তা দেই না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।