♠ ব্লগার ইমন জুবায়ের ♠ মেঘের আড়ালে থাকা একটি নক্ষত্রের নাম
আমাদের ভুল গুলো ফুল হলে পরে সাজিয়ে নিতাম ফ্লাওয়ার ভাসে। ভুল গুলো কালো চুল হলে সাজিয়ে দিতাম গন্ধ বকুলের ভাঁজে কিন্তু আমাদের ভুল গুলো চির সত্যের মতো জ্বলন্ত এক প্রদীপ। প্রদীপ নেভাতে বাতাস চাই; বুক ভর্তি ততটা বাতাস নেই যতটুকু নেভাতে কাজে লাগে। ভুল গুলো শঙ্খচূড় এক সাপ যেন! বিষাক্ত ছোবলে নীল বনভূমি করে দিয়েছে আমায়। ভুলগুলো সিঁদুরে মেঘের মতো রক্তাক্ত সুর মূর্ছনায় প্রায়শই কাঁদায় এবং বাদানুবাদ ক্রমশই ডালপালা মেলে আমাদের মুখের কথা বাড়াতে কিন্তু তা আর হয়না।
আজ হঠাৎ চেখের পর্দা টানতেই চলে গেলাম সেই সব দিনে। আমার প্রথম প্রেমে পড়ার বয়স। আমার বনসাই প্রেম। এখনো অনুশোচনা ঝুলে আছে ক্যালেন্ডারের পাতায় পাতায়। আমার প্রথম উন্মাদ হবার দিন।
গানের ক্লাসে স্বরলিপি শেখার দিনগুলোতে আমি গান ভুলে দীপার অপ্রতিষিদ্ধ প্রেমের ডালে আকন্ঠ ডুবে মরলাম! অপ্রমিত স্বপ্নের অপ্রতুল হলো না। আমার প্রেমে পড়া অপৌরষেয় না হলেও দীপার মনে হতো এ যেন অচিন্তনীয়!
প্রেমের পরিধি আক্ষরিক অর্থে শুধুই সীমাবদ্ধতায় থাকে না আর সে জন্যই দেয়াল টপকে তার আইটাই। আমি গান ছেড়ে রেস্তোরাঁয় সিম্পলি ওয়েটার। আর দীপা সাপ্তাহিক তখন কাষ্টমার। এ যেন সোনালী চিলের আকাশ ছোঁয়া তারপরও দীপা আকাঙ্খী এক প্রজাপ্রতি।
রেস্তোরাঁ ছেড়ে গঙ্গার ধার, সার্কিট হাউস কিংবা রোম-থ্রী।
প্রেম এ যেন ত্রিদিব পুরি। ভর দুপুরের পিঠ জ্বলা রোদ, শীত সকালে বরফগলা স্রোত আর সন্ধ্যে বেলার জোছনা অসুখ। সব কিছু যেন শুধু ভালোবাসার কোলা ব্যাঙের গাল ভর্তি স্বপ্নের মতো। গোলপুকুর কিংবা সানকি পাড়ার পথে পথে যখন ভীড় থাকতো না।
তখন দুজন পথ মাড়াতাম। আমাদের প্রেম তখন জাগ্রত ময়মনসিংহ! সন্ধ্যে হলেই যে শহরে ফুল ফুটতে শুরু করে সেই শহরের প্রেমে পড়ে গেলাম। সেই শহরে তোমার হাতে চোখ ঢেকে বলাতাম বিনাশিত হোক এ নীলাচল। ব্রহ্মপুত্র নদের সুগভীর জলের মতো গভীর হোক এ প্রেম।
আঠারো বাড়ি বিল্ডিং মহল্লার পাদ পীঠের একমাত্র জাদুঘরটিই আমাদের দেখা করার অন্যতম কেন্দ্রস্থল ছিল।
ধরনীর সমস্ত মাঙ্গলিক প্রার্থনা ছিল দীপাকে ঘিরে। রিলের মতো এভাবেই কাটছিল আমাদের প্রজাপ্রতি দিনগুলো।
তারপর................
অব্যবহৃত বিলবোর্ডের মতো নতুন বিজ্ঞাপনে ভরে গেল একদিন আমার স্মৃতির পিঠ। চোখের জল ফেরাতে পারেনি তাকে। অজানা অভিমান দীপাকে হঠযোগ শুভ পরিণয়ে পরিপূর্ণ হলো করে দিল।
আমার বনসাই প্রেম! আমার প্রেমের শহর। সন্ধ্যে হলেই যেখানে ফুল ফুটে, সি.কে ষোষ রোড, দূর্গাবাড়ি রোড কিংবা ষ্টেশন রোড সন্ধ্যে হলেই সাজে জনারণ্য সাজে। এখনও পাল্টে নি তার রূপ। দীপা আমার ষটপদী, পরিশেষে বুঝতে পেরেছিল এই বনসাই প্রেমিক ছাড়া একদিন অচল পয়সা হয়ে যাবে সে। পাছে আবার সোনার জীবন পাথর না হয়ে যায়!
শেষ থেকে শুরু করা কি সময়ের কখনো মানায়? আর তাই ভুলগুলো চুলে বেধে দাড়িয়ে আজকাল দীপা খুজে বনসাই প্রেম!
______________________________________________
প্রকাশকাল
বিশই জানুয়ারী দুইহাজার চৌদ্দ খ্রিষ্টাব্দ
সুসং নগর।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।