Not to be a leader.. But make a real leader.
সন্ধ্যার পরে কোনো কিছুইতেই আর মন বসে না। ঠিক সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত দুনিয়ার সব কাজকর্ম বাদ দিয়ে একটাই কাজ হলো ‘হিন্দি সিরিয়াল’ দেখা। প্রতিদিনই নতুন নতুন পর্ব আর ঘটনার চমকের কারণে নেশা হয়ে গিয়েছে সিরিয়ালের। এক দিন দেখতে না পারলেই মনটা খারাপ হয়ে যায়। তখন বান্ধবীদের থেকে ঘটনা শুনে নিতে হয় অথবা পুনঃপ্রচার দেখতে হয়।
এমন ভয়ংকর নেশায় মত্ত হয়ে আছে বাংলাদেশের অধিকাংশ নারী। স্টার প্লাস, স্টার ওয়ান কিংবা জি টিভিতে চলা এই সিরিয়ালগুলো নারীদের কাছে খুবই জনপ্রিয়। এমনকি অনেক পুরুষও আজকাল দেখছেন এসব সিরিয়াল। ঢাকার পাশাপাশি মফস্বলেও ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়েছে এই আসক্তি। আর হিন্দি সিরিয়ালের বিষাক্ত ছোবলের ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়ছে আমাদের সমাজের উপরে।
আসুন জেনে নেয়া যাক হিন্দি সিরিয়ালের সেই বিরূপ প্রভাব গুলো, যা মূলত ধ্বংস করছে আপনার জীবন!
১)সংসারে ‘কুটনামি’ করে অশান্তি বৃদ্ধি করা
হিন্দি সিরিয়ালের মূল উপাদান নিঃসন্দেহে কুটনামি। প্রতিদিনই সিরিয়ালে দেখানো হচ্ছে শাশুড়ি-বৌ এর কুটনামি, দুই জা এর কুটনামি কিংবা পরিবারের অন্যদের সংগে ষড়যন্ত্র ও কুটনামি। সিরিয়ালে দেখানো এসব ঘটনা ‘স্লো পয়জন’ এর মত কাজ করছে নারীদের ওপর। নিজের অজান্তেই কুটনামি করা শিখে ফেলছেন নারীরা। এক পর্যায়ে মনের বিকৃতির কারণে কুটনামি করেই বিকৃত রূচির বিনোদন পাচ্ছেন আমাদের সমাজের কিছু সংখ্যক হিন্দি সিরিয়াল প্রেমী নারী।
২)সাধারণ বিষয়কেও জটিল মনে করে মানসিক চাপে ভোগা
হিন্দি সিরিয়ালে অনেক সাধারণ একটি বিষয়কেও জটিল করে দেখানো হয়। আর তাই যারা নিয়মিত হিন্দি সিরিয়াল দেখে তাদের কাছে খুব সহজ, সাধারণ একটি বিষয়কেও অনেক বেশি জটিল ও কুটিল মনে হতে থাকে। ফলে অযথাই মানসিক চাপ বৃদ্ধি পায় তাদের।
৪)অন্যের সম্পর্কে আলোচনা-সমালোচনা করা
হিন্দি সিরিয়ালের দেখা দেখি একের কাছে অন্যের সমালোচনা করার প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে সমাজে। বান্ধবীদের কাছে, বোনদের কাছে কিংবা অন্য কারো কাছে সমালোচনা করে আনন্দ পাচ্ছে নারীরা।
কে কী পোশাক পরছে, কার কত টুকু সম্পত্তি আছে, কার সন্তান আছে কার নেই ইত্যাদি অনধিকার চর্চার অভ্যাস বাড়ছে।
৩)ভারতীয় সংস্কৃতির বিরূপ প্রভাবআমাদের দেশের বিয়ের অনুষ্ঠান, জন্মদিন, পূজা, ঈদ, সম্পর্ক সব কিছুতেই পড়েছে হিন্দি সিরিয়ালের প্রভাব। হিন্দি সিরিয়ালের দেখা দেখি অনেক বেশি জাঁকজমকপূর্ন অনুষ্ঠান করা কিংবা ভারতীয় প্রথা অনুসরণ করার কারণে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে নিজস্ব দেশীয় সংস্কৃতি।
৫)অতিরিক্ত সাজ পোশাক ও মেকআপ করার প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়া
হিন্দি সিরিয়ালের নায়িকারা মেকআপ করে ঘুমাতে যায়, ঘুম থেকে ওঠে,শপিং যায়। এমনকি গোসল করে আসার পরেও মেকআপ করা থাকে।
আর তাই হিন্দি সিরিয়াল আশক্ত নারীদের মধ্যেও অতিরিক্ত মেকআপ করা ও হিন্দি সিরিয়ালের নায়িকাদের মত দামী দামী জবরজং সাজ পোশাক পড়ার প্রবণতা লক্ষ্য করার মত বাড়ছে।
৬)লোক দেখানো কাজ করা
কার কত দামী শাড়ি আছে, অমুক সিরিয়ালের নায়িকার স্টাইলের শাড়ি, তমুক সিরিয়ালের নায়িকার গলার হার ইত্যাদি হিন্দি সিরিয়ালের ভক্ত নারীদের ধ্যান-জ্ঞান হয়ে দাঁড়িয়েছে। কার চাইতে কে বেশি খরচ করে এসব কিনতে পারবে ও বান্ধবীদেরকে দেখাতে পারবে না নিয়ে রীতিমত প্রতিযোগিতা হয় নিজেদের মধ্যে। অসুস্থ এই প্রতিযোগিতায় যারা হেরে যায় তাদেরকে কটাক্ষ করতেও দ্বিধা করে হিন্দি সিরিয়াল আসক্ত এই নারীরা।
৭)পরকীয়ার প্রবণতাহিন্দি সিরিয়ালে অহরহই যে বিষয়টি দেখাচ্ছে তা হলো পরকীয়া।
প্রতিটি সিরিয়ালেই পরকীয়া হলো ঘটনার একটি মূল উপাদান। নৈতিকতা বিরোধী এই সম্পর্ক অতিরিক্ত দেখার কারণে বেশ স্বাভাবিক মনে হচ্ছে গৃহিণীদের কাছে। তাই একটু সুযোগ পেলেই পরকীয়ায় লিপ্ত হচ্ছে অনেক নারী। এমনকি অনৈতিক শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে যাচ্ছে অনেক নারী।
৮)পড়াশোনায় ক্ষতি
স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া অনেক মেয়েরা ও কিছু সংখ্যক ছেলেরাও হিন্দি সিরিয়ালে আসক্ত।
প্রতিদিন পড়াশোনার মূল সময়টি তারা নষ্ট করে হিন্দি সিরিয়াল দেখে। তাদের মা, নানি, দাদিরাও সেই সময়ে বসে সিরিয়াল দেখে বলে সন্তানদেরকে মানা করতে পারে না। ফলে তাদের পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হচ্ছে এবং অনেক ক্ষেত্রে কম বয়সেই ঝরে পড়ছে পড়াশোনা থেকে।
আরো দেখুন- http://www.priyo.com
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।