দশম জাতীয় নির্বাচন ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর মাঝে চলছে তীব্র মতবিরোধ। দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এবং তাদের অনুসারীরা দশম নির্বাচনকে অসাংবিধানিক বলে পুনরায় নিরপেক্ষ কোনো ব্যক্তির অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনরত। জাতীয় নির্বাচন নিয়ে তীব্র জটিলতা তৈরি হলেও সবার প্রত্যাশা সব দলের অংশগ্রহণে অচিরেই আবারো একটি সুষ্ঠু, নির্দলীয়, নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হবে। যে নির্বাচন সর্বজনে গ্রহণযোগ্য হবে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সংবিধান মোতাবেক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে দাবী করছে।
দশম জাতীয় নির্বাচন ঘিরে যখন এরকম পরিস্থিতি বিদ্যমান তখন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণের পরিচালনা ও উপস্থাপনায় এটিএন বাংলা’য় প্রচারিত হচ্ছে ‘নির্বাচনী বিতর্ক’। মক পার্লামেন্টের আদলে তৈরি এই প্রতিযোগিতায় দেশের মোট ১৬ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের তুখোড় তরুণ বিতার্কিকরা অংশগ্রহণ করছে। নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি বনাম ঢাকা মেডিকেল কলেজ মধ্যে অনুষ্ঠিত কোয়ার্টার ফাইনালের প্রতিযোগিতাটি আগামীকাল সকাল ১১টা ১০ মিনিটে এটিএন বাংলা’য় প্রচারিত হবে। প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে রাখেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলী খান।
দশম জাতীয় নির্বাচন কেন্দ্রীক এই বিতর্কের আয়োজন নিয়ে অনুষ্ঠানের পরিচালক হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেছেন নানান কথা।
প্রশ্ন: ‘নির্বাচনী বিতর্ক’ আয়োজনের কাঠামোগত বিষয় সম্পর্কে জানতে চাই?কিরণ: এটি মক পার্লামেন্টের আলোকে করা হয়। প্রতিটি দলে পাঁচজন করে বিতর্কিক রয়েছেন। যেখানে সরকারীদল হিসেবে ছায়া প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, এমপিও রয়েছেন। একই সাথে বিরোধী দলেও ছায়া এমপিরা রয়েছেন। যেখানে স্পিকার, প্রধানমন্ত্রী, এমপিরা উপস্থিত থাকেন।
এরপর ছায়া সংসদের সরকারি দল, বিরোধী দল তাদের পক্ষের যুক্তি, মতামত প্রদান করেন। দল-মত নির্বিশেষে সমাজের বিশিষ্ট্য জনের মধ্যে প্রতিটি অনুষ্ঠানে একজন করে প্রধান অতিথি আনা হয়। বিতর্কের শেষ পর্যায়ে তিনি বিতর্কিকদের উত্থাপিত বিভিন্ন বিষয়, প্রেজেন্টেশন, যুক্তিতর্ক, পয়েন্ট এসব বিষয় নিয়ে মতামত দেন।
প্রশ্ন: ‘নির্বাচনী বিতর্ক’র আয়োজন সম্পর্কে কিছু বলুন ?কিরণ: এটিএন বাংলাতে সমসাময়িক ইস্যুতে নিয়মিতভাবে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহনে বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিযোগিতামূলক বিতর্ক অনুষ্ঠানের আয়োজনের অন্যতম একটি ধারা সংসদীয় পদ্ধতির বিতর্ক। কদিন আগে আমরা ‘স্টুডেন্ট পার্লামেন্ট’ শিরোনামে প্রতিযোগিতা শেষ করি।
এরই ধারাবাহিকতায় জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা বিশেষ ‘নির্বাচনী বিতর্ক’ শুরু করেছি। যাচাই-বাচাই করে ১৬ বিশ্ববিদ্যালয়কে এই বিতর্ক প্রতিযোগিতার জন্য সিলেক্ট করা হয়েছে।
প্রশ্ন: আপনিতো অনেকগুলো সংসদীয় ধারার বিতর্ক প্রতিযোগিতা করলেন। কিরণ: আগেই বলেছি সর্বশেষ এটিএন বাংলাতে প্রচারিত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ‘স্টুডেন্টস পার্লামেন্ট’। এর আগে বিজয়ের রঙে আঁকি সম্প্রীতির সম্মিলন-এই শ্লোগানে ‘বিজয় দিবস’ বিতর্ক প্রতিযোগিতা প্রচারিত হয় এটিএন বাংলাতে।
মূলত বিজয়ের ৪০ বছর পূতি উপলক্ষে এই বিতর্ক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলাম। দেশের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিজয় দিবস বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। বিজয় দিবস বিতর্কের আগে এটিএন বাংলাতে আয়োজন করি ‘ক্যাম্পাস পার্লামেন্ট’ বিতর্ক প্রতিযোগিতা। এ প্রতিযোগিতাতেও দেশের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ অংশগ্রহণ করে। এর আগে এটিএন বাংলাতে প্রচারিত হয় ‘ইয়থ পার্লামেন্ট’ বিতর্ক প্রতিযোগিতা।
প্রশ্ন: সংসদীয় ধারার বিতর্ক প্রতিযোগতার প্রতি আপনার এত আগ্রহ কেন?কিরণ: আসলে এই ছায়া সংসদটাতো মিনি পার্লামেন্টের মতো। দেখুন এখানে ছায়া সরকারি দল এবং বিরোধী দল যে কোনো ইস্যুতে নির্বিবাদে কথা বলছে। তারা যুক্তি তর্ক দিয়ে বলছে কোনটা সত্য আর কোনটা সত্য নয়। কোথায় সংবিধান লঙ্গিত হয়েছে, কোথায় আইন ভঙ্গ হয়েছে-ইত্যাদি ইত্যাদি। আমাদের এখানে যারা গেস্ট হিসেবে আসেন তারা প্রায়শই বলেন, ‘দেশের সংসদ এমন প্রাণবন্ত হলে অনেক জাতীয় সমস্যারই সুন্দর সমাধান হতো।
’ আমিও এই বক্তব্যেও সাথে একমত। অনেকবার আমিও এ কথা বলেছি এবারের আয়োজনের উদ্বোধনী দিনে প্রয়াত সাবেক বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান এসেছিলেন। উনিও বিতার্কিকদের বিতর্কের প্রচন্ড প্রশংসা করেন। আমরা আসলে বিতর্কের এই ধারাটি ছড়িয়ে দিতে চাই সর্বত্র। ’
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।