আমার মতে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্য হচ্ছে মানুষের হাসি। তাই আমি সারাজীবন মানুষকে হাসি মুখে দেখতে চাই
লুল কুতুবের মনে আজ বেজায় আনন্দ। আজকে প্রপোজ ডে। তার বন্ধু ঘোড়া মজিদ বলেছে আজকে মেয়েদের প্রপোজ করলে নাকি তারা ফিরিয়ে দেয় না। অবশ্য গতকাল তার দিনটা বেশী ভাল যায় নি।
গতকাল ছিল রোজ ডে। জরিনা সুন্দরীকে গোলাপ দিতে গিয়ে সে চড় খেয়েছে। অবশ্য সে মাইন্ড খায় নি। নরম হাতের চড় খেতে মজাই লাগে। মনে হয় যেন দুধে ভেজানো পাউরুটি কেউ গালে লেপ্টে দিচ্ছে।
মেয়েদের হাতে চড় আর দৌড়ানি খেতে খেতে তার বয়েই গেছে। মেয়েদের কাছে সে পরিচিত লুইচ্চা কুতুব নামে। আর ছেলেদের কাছে লুল কুতুব।
এত অপমান হয় তবুও তার লুলগিরি কমে না। ঘোড়া মজিদ তাই বলেই ফেলল,
ঘোড়া মজিদ: এত থাবর এত দৌড়ানি খাছ তবুও তোর ভিতর থিকা প্রেম কমে না।
লুল কুতুবঃদোস্ত কি করুম?মন কিযে চায় বল যারে দেখি লাগে ভাল।
ঘোড়া মজিদঃআজকেই লাষ্ট। তোর জন্য মাইয়াগো পিছে ঘুইরা আমার শ্যামলা শরীর কালা হইয়া গেছে।
লুল কুতুবঃআরে তোর তো শরীর কালা হইছে আর আমিযে ২ মাস জন্ডিসে ভুগলাম। ইশ কত্তগুলারে ফেসবুকে পটাইলাম মাগার দেখা করতে পারলাম না।
ঘোড়া মজিদঃযাই কিছু হোক। আজকের পরে তোমার সাথে আমি আর নাই।
লুল কুতুবঃএমন করছ কেন?তোরে কি আমি চা,সিগারেট খাওয়াই না।
ঘোড়া মজিদঃকি তুই আমারে খোটা দিলি?
লুল কুতুবঃখোটা কছ কেন?আমরা আমরাইতো।
আরে ক্যাটরিনা আসতাছে পিছে লাগ।
আর সিদ্দিকরে ফোন লাগা। তিনজন থাকলে সাহস বাড়ব।
ঘোড়া মজিদঃওরে দিয়া কি দরকার?মাইয়াগো দেখলে শরীর কাঁপে।
লুল কুতুবঃথাক ফোন দেওন লাগবনা। আইসা পারছে।
সিদ্দিকঃখালি তোর শেষ দেখার জন্য আজকে ভর দুপুরে বের হইছি। কিছু না করতে পারলে খবর আছে।
লুল কুতুবঃআরে চিন্তা করিছ না হইব হব।
ক্যাটরিনার আসল নাম লুল কুতুব জানে না। দেখে ভাল লেগেছে তাই আজ প্রপোজ করবে।
দেখতে সুন্দর তাই নাম দিয়েছে ক্যাটরিন। দুইদিন আগে ঘোড়া মজিদ বাসা চিনে এসেছে। লুল কুতুব প্রপোজ করার জন্য ৮০০ টাকা খরচ করে ক্যাডবেরি সিল্ক আর চকলেট কিনে এনেছে। কোন র্যাপিং পেপার লাগায় নি। শুধু হাতে করে নিয় এসেছে।
সিদ্দিকের এ নিয়ে বেজায় রাগ। তার আরো রাগের কারন লুল কুতুবে আজকে কমেডিয়ানের মত লাগছে। ক্যাপ ঘুরিয়ে পড়েছে ,কালো সানগ্লাস,কালো টি শার্ট,কালো প্যান্ট। সাথে নিউ মার্কেট থেকে সদ্য কেনা দেরশো টাকা দামের স্যান্ডেল।
ক্যাটরিনা আসছে।
ঘোড়া মজিদ আর সিদ্দিক একসাথে বলে উঠল আরে মামা যা। লুল কুতুব বলে দোস্ত ডর লাগে। সিদ্দিক রেগে গিয়ে বলে এইজন্য কি আমি আসছি। ঘোড়া মজিদ বলে চেতিছ না । দোয়া পইরা ফু দে।
তারা হাটতেই থাকে । ঘোড়া মজিদ বলে বাসার কাছাকাছি চইলা আসছি তাড়াতাড়ি যা।
লুল কুতুব পা বাড়ায়। ক্যাটরীনা কে ডাক দেয়। ক্যাটরিনা দাড়ায়।
লুলকুতুব বলে তোমাকে আমি পছন্দ করি। এগুলো তোমার জন্য। বলে চকলেট এগিয়ে দেয়। ক্যাটরিনা বলে দেখেন এগুলো আমি পছন্দ করি না। আর আমি আপনাকে চিনি।
আপনতো সেই ছেলে যে রাহাফকে গত সপ্তাহে প্রপোস করেছিলেন ।
ঘোড়া মজিদ আর সিদ্দিকের মাথায় হাত। লুল কুতুব আর দাড়ায় না। চকলেটের বাকশো নিয়ে হাটা দেয়। রিকসা নিয়ে বাসায় রওনা দেয়।
ঘোড়া মজিদ আর সিদ্দিক বলে আমাদেরও নিয়া যা।
তিনজন মিলে লুল কুতুবের বাসায় যায়।
সিদ্দিক বলে দোস্ত মন খারাপ করিস না। এইবার মন থেকে প্রেম কর। লুল কুতুব টেবিলে ঘুষি মেরে বলে এটাই শেষ।
এই মেয়েরেই আমি বিয়া করমু। বলেই সে ক্যাডবেরি খুলে ঘোড়া মজিদ আর সিদ্দিকের হাতে দেয়। দুজনই হতবাক। তাদের আকাশ থেকে পরার অবস্থা।
এত দামি চকলেট আমাদের পুরাটা দিলি।
লুল কুতুব বলে আরে মাইয়াদের খাওয়াইয়া লাভ কি?তোরা খাইলেই আমি খুশি। তোরাই তো আমার সব। তোরা না থাকলে তো মেয়েদের সামনেই যেতে পারতাম না।
ঘোড়া মজিদ আর সিদ্দিক লুল কুতুবকে ধরে কেঁদে ফেলে। আসলেই তো কিসের মাইয়া কিসের কি ?বন্ধুই সব ।
লুল কুতুব আজ প্রবাসে। ঘোড়া মজিদও একজনকে মনে গেথে রেখেছে আজীবনের জন্য।
সিদ্দিক এখনো সিঙ্গেল। লুল কুতুবের চকলেটের বক্সটা সে স্মৃতি হিসেবে শুকেসে সাজিয়ে রেখেছে। প্রপোস দিবস আসলে সে ওই দিনের কথা মনে করে আর মিটি মিটি হাসে।
লুল কুতুব আর ক্যাটরিনার জন্য শুভ কামনা রইল।
কাল্পনিক
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।