সন্ত্রাসে অর্থায়ন ও মানি লন্ডারিংয়ের ধূসর তালিকা থেকে বেরিয়ে আসছে বাংলাদেশ। এই দুই ভয়াবহ দৈত্য প্রতিরোধের আইনি কাঠামো আন্তর্জাতিকমান অর্জন করায় বাংলাদেশকে ধূসর তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। চলতি সপ্তাহে ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন রিভিউ গ্রুপের (আইসিআরজি) পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত একটি ঘোষণা দেওয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ধূসর তালিকা থেকে বেরিয়ে আসায় বিনিয়োগ ও ব্যবসা সহযোগিতার ক্ষেত্রে বিদেশি কোম্পানিগুলোর কাছে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে। এই অগ্রগতি বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের ক্ষেত্রে মানদণ্ড হিসেবে বিবেচিত হবে। বাংলাদেশে অর্থ পাচার এবং সন্ত্রাসে অর্থায়নবিরোধী কার্যক্রম শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেওয়া হয় বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে। বিদায়ী মহাজোট সরকার এই দুই ঘৃণ্য আপদের বিরুদ্ধে শক্তভাবে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন বন্ধে আইনি সংস্কার করে অপরাধীদের দেশ থেকে বের করে দেওয়ার বিধানও সংযুক্ত করা হয়। ফিন্যানশিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্সের (এফএটিএফ) পরামর্শে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ২০০৭ সালে বিদেশে অর্থ পাচার ও জঙ্গি কার্যক্রমে অর্থায়ন বন্ধে দেশে আন্তর্জাতিকমানের আইনি কাঠামো তৈরির উদ্যোগ নেয়। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ২০১২ সালে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ অধ্যাদেশ-২০১২, সন্ত্রাসবিরোধী আইন (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০১২ এবং অপরাধ সম্পর্কিত বিষয়ে পারস্পরিক সহায়তা অধ্যাদেশ-২০১২ নামে তিনটি অধ্যাদেশ জারি করে। সংশ্লিষ্ট আইনি কার্যক্রমে অস্পষ্টতা রয়েছে অভিযোগ তুলে এফএটিএফের আঞ্চলিক সংস্থা এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ অন মানি লন্ডারিং (এপিজি) বাংলাদেশকে ধূসর থেকে কালো তালিকাভুক্তির হুমকি দেয়। এর পরই নড়েচড়ে বসে সরকার। নতুন করে আবারও আইনি কাঠামো শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এপিজির পরামর্শে আইনগুলোকে আন্তর্জাতিকমানে উন্নীত করতে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে একটি জাতীয় সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়। এছাড়া অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবের নেতৃত্বে একটি ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করা হয়। এই দুই কমিটি ১০০টিরও বেশি বৈঠক শেষে আইসিআরজির কাছে মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে নিজেদের সক্ষমতা তুলে ধরতে সমর্থ হয়। সন্ত্রাসে অর্থায়ন ও অর্থ পাচার বর্তমান দুনিয়ার এক জাজ্বল্যমান সমস্যা। এ আপদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ লড়াইয়ের সক্ষমতা অর্জন করেছে এটি একটি সুখবর বৈকি। এ সাফল্যকে যে কোনো মূল্যে ধরে রাখতে হবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।