একবার আমি একটা চেরাগ কুড়িয়ে পেয়েছিলাম। ভোরের ফাঁকা রাস্তা ছিল।
আলাদিনের কার্টুন ছাড়া আর কোথাও এমন চেরাগ আমি দেখিনি কখনও। তবে এটা জানতাম চেরাগ পেলেই ওতে ঘষা দেওয়া ফরজ। ফরজ পালনের উদ্দেশ্যে চেরাগটা উঠিয়ে হাতের তালু দিয়ে দিলাম দুটো ঘষা।
আর যায় কোথায়?
চারদিক মুহুর্তে আঁধার হয়ে গেল! আঁধার ভেদ করে ধবধবে শাদা এক অবয়ব বেরিয়ে এল। বুঝলাম এটা সম্ভবত চেরাগের মাঝের সেই কিংবদন্তি দৈত্য! তবে এই দৈত্যর গায়ে ওভারকোট। মাথায় হ্যাট!
নিয়মিত হরর মুভি দেখার কারণে ভুত প্রেত এইসব প্রজাতির উপরে আমার বিরক্তি ধরে গেছে। সে কারণে ভয় না পেয়ে চেরাগের দৈত্যের দিকে তাকিয়ে রইলাম একরাশ বিরক্তি নিয়ে! চেরাগ থেকে বেরিয়ে দৈত্যদের বিকট অট্টহাসি দেবার নিয়ম। অথচ ওভারকোট অলা দৈত্য দেখি খানিকটা গম্ভীর হয়ে আমার দিকে চেয়ে আছে।
দৈত্যের সাথে আমার কথোপকথন যা হল তা মোটামুটি এই রকম।
সে যেহেতু চুপ হয়েই ছিল, বাধ্য হয়ে জিজ্ঞেস করলাম- কি ব্যপার?
শাদা চামড়া দৈত্য বলল- ব্যপার আর কি? অনেক বছর পর আপনি আমাকে মুক্ত করেছেন মালিক। আমার উচিত আপনার একটা ইচ্ছা পুরণ করা!
- একটা? আমিতো জানতাম তিনটা ইচ্ছা!
-আমাদের নিয়ম বদলে গেছে।
- ও আচ্ছা।
- আপনি আপনার ইচ্ছা ব্যক্ত করুণ মালিক।
- আমার একটাই ইচ্ছা। আমাকে ইউ,এস,এর প্রেসিডেন্ট বানিয়ে দাও।
কথাবার্তার এই পর্যায়ে দৈত্য হঠাৎ খুব বিমর্ষ হয়ে গেল। আমি জানতে চাইলাম- কি হল? ইচ্ছা পুরণ কর!
শাদা চামড়ার ওভারকোট অলা দৈত্যের যে ইয়া মোটা গোঁফ আছে ব্যপারটা এতক্ষণ খেয়াল করিনি। সেই গোঁফ ঝুলে পড়েছে।
এবং খেয়াল করলাম- দৈত্য ধিরে ধিরে হাওয়ায় মিলিয়ে যাচ্ছে। মিলিয়ে যেতে যেতে দৈত্য বলল- আপনার ইচ্ছা পুরণ আমার পক্ষে সম্ভব না। ইউ,এস, এ একটা পুঁজিবাদী দেশ। আর আমি হলাম গিয়ে সমাজতান্ত্রিক দৈত্য! আপনি দেখেও বুঝছেন না, আমার গোঁফজোড়াও লেনিনের মতো!
ধোঁয়ার কুন্ডলি বাতাসে মিলিয়ে যাবার সাথে সাথেই চেরাগটা আমি রাস্তায় ফেলে বেদম এক লাথি মারলাম! শালার দৈত্যরাও আজকাল ধান্দাবাজ হয়ে গেছে!
ফ্রুটফলঃ তামার চেরাগে লাথি মারার ফল শুভ হয়নি। স্যান্ডেল পরেছিলাম।
চেরাগের কোনা লেগে পা কেটে সে এক রক্তারক্তি কান্ড! পায়ের পাতায় এখনও সেই কাটা দাগ অক্ষত আছে! বিশ্বাস না হলে আমার সাথে যোগাযোগ করুন।
**(জনাব আহসান হাবিবের কথা কৃতজ্ঞতাভরে স্মরণ করছি। এই আহসান হাবিবের উন্মাদ নামের একটা পত্রিকা আছে)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।