আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাহিত্য ধারণ করে সময়কে; জীবন-মোম পোড়ানো আর্দ্র উত্তাপের কবিতা মুহূর্ত থেকে শতাব্দী, কাল-কালান্তর হয়ে দাগ কেটে যায় সময় বালির বুকে



সাহিত্য ধারণ করে সময়কে; জীবন-মোম পোড়ানো আর্দ্র উত্তাপের কবিতা মুহূর্ত থেকে শতাব্দী, কাল-কালান্তর হয়ে দাগ কেটে যায় সময় বালির বুকে। উর্বর ভূমিতে সিক্ত শস্যদানার মতো কিছু কিছু কবিতা, কবিতার পদচিহ্ন শেকড়, ডালপালা ছড়িয়ে দীর্ঘস্থায়ী ঠাই করে নেয় সময়ের বুকে। কে কেমন রূপ ধারণ করবে, কে কেমন আঘাত হানবে, চিরস্থায়ী ক্ষত’র মত অগাধ, অমলিন হয়ে বাজবে অথবা বাজাবে, এর বিচার সময় করবে! আমরা বরং পড়ি এই পাঁচ কবির কবিতা, আবিষ্কার করি আরশি নগরের পড়শিরা কোন সুরে বাজাচ্ছেন তাদের বীণ।

“পূর্বজন্মের হিরন্ময় স্মৃতি কাতরতায় ভেসে যায় প্রাণহীন রাজহাঁস! পৃথু একা হাটুক এই বৈশাখে! সবটুকু রোদ নিজের মধ্যে নিয়ে রোদ পুরুষ হয়ে উঠুক!”

‘ঘাসফুল’, ‘কৃষ্ণচূড়া’, ‘মাছরাঙা’ কিম্বা ‘খাঁখাঁ বালিয়াড়ি’ প্রকৃতির মাঝে প্রিয়ার মুখ খুঁজে বেড়ান কবি নীলসাধু। প্রতিটি কবিতাই যেন অন্তহীন এক মহাকাব্য’র অংশ বিশেষ; ছিন্নকথন।

যে মহাকাব্য জীবনকে ঘিরে, সময়কে ঘিরে। প্রেম ও প্রকৃতিকে ঘিরে যে জীবন, নির্মল আনন্দ আর ব্যথাতুর বিচ্ছেদের যে সময়। কবি নীলসাধু’র দশটি কবিতা থাকছে এই সংকলনে।

“এক নদী আকুলতা নিয়ে কুড়িয়ে পাওয়া রোদবালিকা চিঠি লেখে... হঠাৎই সে চিঠিতে জড়ো হয় কুচিকুচি মেঘ, সদ্য মুক্ত একলা ঘুড়ি আর গাঢ় বিষাদের নোনাজল!”

বস্তুগত পৃথিবীর বাইরে এসে কবিতায় অনুভূতিময় এক অন্তর্জগতের গল্প শোনাচ্ছেন কবি আলভিনা চৌধুরী। খোঁদাই শিল্পীর মতো সামান্যতে খুড়ে খুড়ে অসামান্যকে বের করে আনার আপ্রাণ প্রচেষ্টা তাঁর।

কিছু কবিতা সত্যিই মর্ম ছুঁয়ে যাওয়ার মতো। এই সংকলনে কবির থাকছে ষোলটি কবিতা।

“মিনিটের প্রতিটি সেকেন্ড কাটে নিমজ্জিত হতাশায় অন্ধ আজও স্বপ্ন আমার, চিম্বুক পাহাড়ের চূড়ায়। নির্লজ্জ আমি, জানাই নিজেই নিজের বিজ্ঞাপন আজ অন্যের মতই সুযোগ সন্ধানী অশরণ। ”

মাটি কিম্বা কাঠ নয়, পরিশ্রমী শিল্পীর মতো পাথরের ভাস্কর্যের দিকেই যেন মন কবি তাহমিদুর রহমান এর।

একই ধাঁচেরও নয়, নয় একই ছাঁচেরও। বিভিন্ন সময়ে লেখা এই সংকলনের প্রাণবন্ত ২০টি কবিতা অনন্য হয়ে ওঠেছে প্রত্যেকেই আলাদা আলাদা স্ব-মহিমায়। শব্দের ব্যবহারে মিতব্যয়ী এই তাহমিদুর রহমানকে কবিতায় সমকালীনতা আর ভাবের বহিঃপ্রকাশে কৃপণ বলা যাবে না কিছুতেই।

“হিজলের বনে আজো আনমনে, দ্বীপ জ্বেলে যাই অলুব্ধ মন যদি কখনো সখা ফিরে আসে হিরণ্ময়ীর নি:স্বার্থ প্রেমের টানে”

কবি নাসরিন চৌধুরীর কবিতায় আছে কোমল আবেগ যা পাঠকের মন ছুঁয়ে যাবে। নিয়ন্ত্রিত শব্দের ব্যাবহার কবি প্রকাশ করেছেন বাঙ্গালির চিরন্তন আবেগকে।

প্রেম ভালোবাসা, বিরহ সহ আবেগী নানা অনুভবের পরিমিত ব্যাবহার রয়েছে তার লিখিত কবিতাগুলোতে। নাসরিন চৌধুরীর ১৫টি কবিতা রয়েছে বইটিতে।

“আজ থেকে, সত্যের পয়গাম বইবে দশহাজার পদাতিক ডিভিশন আণবিক সাবমেরিনে রপ্তানি হবে মনুষ্য কল্যাণ।
আর একটিও বুলেট নয় হে পুঁজিবাদী, সুবিধাভোগী, বন্য নেকড়ের দল! সংযত হও। ”


কেবলই প্রেম ও প্রকৃতি আর সময়ই নয় কাজী মেহেদী হাসান কবিতার স্বপ্নমুর্তি সাজান দ্রোহ দিয়েও।

‘বুনোহাঁসের দলে’র ‘দুরন্ত শৈশব’ এর কবি তাই প্রগাঢ় ক্ষোভ থেকে দারুণ স্পর্ধায় উচ্চারণ করেন- “আর একটিও বুলেট নয়”। এই সংকলনের বৈচিত্র্যময় ১৫টি কবিতায় প্রজ্বলিত হয়ে ওঠে দ্রোহ, অন্তর্গত গভীর বিষাদ।


কাজী মামুন



নির্বাসিত জোছনাদল

নীলসাধু, আলভিনা চৌধুরী, তাহমিদুর রহমান, নাসরিন চৌধুরী, কাজী মেহেদী হাসান [নির্বাচিত কবিতা সংকলন]
প্রকাশক: এক রঙা ঘুড়ি
প্রচ্ছদ: চারু পিন্টু

এক রঙ্গা এক ঘুড়ির স্টলে বইটি পাওয়া যাবে।
লিটল ম্যাগ চত্বর। ২৫ নম্বর স্টল।




নির্বাসিত জোছনাদলের মোড়ক উন্মোচন করেছেন কথা সাহিত্যিক আনিসুল হক।



এক রঙ্গা এক ঘুড়ি
ফেসবুক গ্রুপ
ওয়েবসাইট।

সোর্স: http://prothom-aloblog.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।