আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

‘যা-ই করেছেন, এখন নির্বাচন দিন’

শুক্রবার বিকালে রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ আহ্বান জানান।

দ্রুত নির্বাচন না দিলে ‘বন্দুকের জোরে’ সরকার দীর্ঘদিন ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ফখরুল  বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ গোটা বিশ্ব বলেছে, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়নি। তারা বলেছে, সব দলের অংশগ্রহণে অতিদ্রুত নির্বাচন দাও।

“নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় বসে সরকারের মন্ত্রীরা এখন নানা রকম হুঙ্কার ছাড়ছেন।

তারা বলে বেড়াচ্ছেন- ৫ বছর ক্ষমতায় থাকবেন। আমরা সরকারকে বলব, যা করেছেন, করেছেন। এখন দয়া করে সব দলের অংশগ্রহণে অতিদ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। অন্যথায়  ইতিহাস বলে বন্দুকের জোরে দীর্ঘ সময় কেউ ক্ষমতায় থাকতে পারেনি, এই সরকারও পারবেন না। ”

জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ভাসানী স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে ‘ভাষা আন্দোলন ও মওলানা ভাসানী’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।

ভাসানীর কর্মময় জীবনের স্মৃতিচারণা করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “এই জনপদে তার মতো আর কোনো নেতৃত্ব আছে কি না আমার জানা নেই। ভাসানী নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান, নিজেই একটি ইতিহাস। তার আদর্শ থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার সংগ্রামকে এগিয়ে নিতে হবে। ”

দেশের বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ’ অভিহিত করে তিনি বলেন, “১৯৭২-৭৫ সালের সঙ্গে আজকের অবস্থার আমি মিল খুঁজে পাই। তখন রাস্তার পাশে যুবকের লাশ পড়ে থাকতো, গুম করে হত্যা করা হতো বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীদের।

“দেশে একই অবস্থা এখন বিরাজ করছে। বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ক্রসফায়ারে হত্যা করা হচ্ছে। গুম করে নিয়ে গুলি করে খুন করা হচ্ছে।   কবজি কেটে ফেলা হচ্ছে। এ কেমন গণতন্ত্র।

গণতন্ত্রের নাম বলে আজ গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যা করা হচ্ছে। ”

গণমাধ্যমের ওপরও দমনপীড়ন চালানো হচ্ছে দাবি করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, “১৯৭২ সালে ‘হককথা’র সম্পাদক এহসানুল বারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এটা ছিল স্বাধীন দেশে প্রথম কোনো পত্রিকার সম্পাদককে গ্রেপ্তারের ঘটনা। ওই শাসনমালে দেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করে কেবল চারটি রেখে সব পত্রিকার বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল।

“বর্তমান সরকারও  অতীতের মতোই গণমাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণ নীতি অনুসরণ করছে।

আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে। দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি, চ্যানেল ওয়ান প্রভৃতি টেলিভিশন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ইনকিলাব পত্রিকাও বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। সম্প্রতি তা খুলে দেয়া হয়েছে। ”

সরকারের মন্ত্রীদের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, “নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় বসে মন্ত্রী-এমপিরা আত্মভরি করছেন।

অনেকে সোনার ক্রেস্ট ও মুকুট নিচ্ছেন। আবার অনেকে ক্রেস্ট না দিয়ে ক্যাশ নেয়ার কথা বলছেন। এভাবে তারা ছলচাতুরি করে সাকার্সে জোকার সেজে নানা রকম কথা-বার্তা বলে বেড়াচ্ছে। জাতি সরকারের এরকম তামাশা ও সার্কাস থেকে মুক্তি চায়। ”

সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “সরকারকে বলব, সময় পেরিয়ে যাওয়ার আগেই অতিদ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।

মানুষের সভা-সমাবেশ করার মৌলিক অধিকার হরণ করবেন না। ”

সংগঠনের সভাপতি জিয়াউল হক মিলুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে ভাষা সৈনিক আবদুল মতিন, জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমেদ, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল হালিম,  ভাসানী স্মৃতি সংসদের সাবেক সভাপতি নুর মোহাম্মদ খান, নজমুল হক নান্নু, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মনিরুল হুদা, মাহমুদুল হক মানু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।


সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।