শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি পদত্যাগ করেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে রাজনীতিতে আসার এক বছরের মাথায় বিধানসভা নির্বাচনে জয় লাভ করে গতবছর ২৮ ডিসেম্বর দিল্লিতে সরকার গঠন করে কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি (এপিপি)।
১৯৫২ সালে আংশিক ক্ষমতা নিয়ে নির্বাচিত হওয়া কংগ্রেস দলীয় মুখমন্ত্রী চৌধুরী ব্রাহাম প্রকাশের (৩৪ বছর বয়সে) পর ৪৫ বছর বয়সী কেজরিওয়ালই দিল্লির কনিষ্ঠতম মুখ্যমন্ত্রী। তিনি প্রথমবারের মতো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এ সম্মান অর্জন করেন। দিল্লির তিন বারের মুখ্যমন্ত্রী ক্ষমতাসীন কংগ্রেস নেত্রী শিলা দিক্ষীতকে ২২ হাজার ভোটে হারিয়েছিলেন তিনি।
যন্ত্রপ্রকৌশল বিদ্যায় পড়াশুনা করা কেজরিওয়াল ১৯৯৫ সালে ‘ইন্ডিয়ান রেভিনিউ সার্ভিস’ এ কর্মজীবন শুরু করেন। ২০০১ সালে ট্যাক্স কর্মকর্তার চাকরি ছেড়ে তিনি দুর্নীতি বিরোধী প্রচারভিযান শুরু করে দেশব্যাপী পরিচিতি পান।
সরকারি চাকরি ছাড়ার পর এ প্রচারাভিযানের পথ ধরেই ২০০৫ সালে ভারতে চালু হয় তথ্য অধিকার আইন। পরের বছর এই কাজের জন্য তিনি পান মর্যাদাসম্পন্ন ‘রেমন ম্যাগসেসে পুরস্কার’।
২০১১ সালে কেজরিওয়াল সমাজকর্মী আন্না হাজারের দুর্নীতি বিরোধী লোকপাল আইন পাশ করার আন্দোলনে যোগ দেন।
ওই আন্দোলনের ফলেই নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও আমলাদের ঘুষ-দুর্নীতি তদন্তে ‘জাতীয় লোকপাল’ পদের সৃষ্টি করা হয়।
তাদের দাবি দীর্ঘদিন উপেক্ষিত হওয়া এবং আন্না হাজরের সঙ্গে কেজরিওয়ালের সম্পর্কের অবনাতি হলেও দুর্নীতি বিরোধী প্রচারাভিযান কেজরিওয়ালকে জাতীয় নেতায় পরিণত করে। কেজরিওয়াল দিল্লির প্রধান হিসেবে শপথ নেয়ার কিছুদিন আগেই লোকপাল আইনটি সংসদে পাশ হয়।
২০১২ সালের ১৫ নভেম্বর কেজরিওয়াল আম আদমি পার্টি চালু করেন। আন্না হাজারে এ আন্দোলনকে রাজনৈতিক সংগঠনে রূপ দেয়ার বিরুদ্ধে থাকায় এর ফলে দুজনের সম্পর্কের অবনতি ঘটে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার কৌশলের পথ ধরে আম আদমি পার্টিও সমর্থকদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অনুদান থেকে ২০ কোটি রুপি আয় করে। ওয়েবসাইটে সমর্থকদের নামের তালিকাও প্রকাশ করে।
সংসার জীবনে দুই সন্তানের জনক কেজরিওয়াল মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ভারী নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও বড় আয়োজনের সরকারি বাংলো ব্যবহারে অস্বীকৃতি জানান। অধিকাংশ সময়েই তিনি নিজের ব্যক্তিগত নীল রঙের ওয়াগন আর গাড়িটি ব্যবহার করতেন।
গত জানুয়ারিতে ক্ষমতা গ্রহণের কিছু দিনের মাথায় কেজরিওয়াল দিল্লির পুলিশ প্রশাসন ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে ৩৩ ঘণ্টার অভূতপূর্ব প্রতিবাদে অংশ নেন।
রাস্তায় ঘুমিয়ে কাটান এক রাত।
কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধীর মেয়ে-জামাই রবার্ট ভদ্র এ সময় কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টির লোকজনকে ‘ম্যাংগো পিপল ইন বেনানা রিপালিক’ বা ‘কলা গণতন্ত্রের আম জনতা’ বলে খোঁচা দেন।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।