অ্যালার্জি বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষের কাছে এক অসহনীয় ব্যাধি। অ্যালার্জি, হাঁচি থেকে শুরু করে খাদ্য ও ওষুধের ভীষণ প্রতিক্রিয়া ও শ্বাসকষ্ট হতে পারে। কারও কারও ক্ষেত্রে অ্যালার্জি সামান্যতম অসুবিধা করে, আবার কারও ক্ষেত্রে জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে। ঘরের ধুলাবালি পরিষ্কার করেছেন? হঠাৎ করে শুরু হলো হাঁচি এবং পরে শ্বাসকষ্ট অথবা ফুলের গন্ধ নিচ্ছেন রা গরুর মাংস, চিংড়ি, ইলিশ মাছ, গরুর দুধ খেলেই শুরু হলো গা চুলকানি বা চামড়া লাল লাল চাকা হয়ে ফুলে ওঠা। এগুলো হলে আপনার অ্যালার্জি আছে ধরে নিতে হবে।
আমাদের অনেকেরই ধারণা অ্যালার্জির কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। ওষুধ দিয়ে উপসর্গ কিছু দিন দমিয়ে রাখা যায় এবং ওষুধ বন্ধ করলেই শুরু হয় উপসর্গ। তাই অ্যালার্জি রোগীদের জানা দরকার আপনার রোগটা আদপে অ্যালার্জিজনিত কিনা, তা অ্যালার্জি বিশেষজ্ঞের কাছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সঠিকভাবে নির্ণয় করে তার চিকিৎসা করা। তাই অ্যালার্জিজনিত রোগের তিনটি চিকিৎসা পদ্ধতি : প্রথমত অ্যালার্জি দ্রব্যাদি থেকে এড়িয়ে চলা, দ্বিতীয় ওষুধ চিকিৎসা, তৃতীয়ত ভ্যাকসিন বা ইমুনোথেরাপি। অ্যালার্জিজনিত হাঁপানি (অ্যাজমা), অ্যালার্জিক রাইনাইটিস ও অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিস এর ক্ষেত্রে এই ভ্যাকসিন অত্যন্ত কার্যকরী বলে অভিমত প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও অন্যান্য মেডিকেল রিসার্চ ইনস্টিটিউট।
এলারজেন ভ্যাকসিন বা ইমুনোথেরাপি এমন একটি পদ্ধতি যেখানে স্বল্পমাত্রা থেকে পর্যায়ক্রমে উচ্চতর মাত্রায় অ্যালার্জেন (যে অ্যালারজেন দ্বারা রোগীর শরীরে উপসর্গ দেখা দেয়) অ্যালার্জিক ব্যক্তির শরীরে প্রবেশ করানো হয়, যাতে পরবর্তীতে অ্যালার্জেনের সংবেদনশীলতা কমে যায়। কিভাবে কাজ করে: ১. রক্তের আইজিই (যা অ্যালার্জির জন্য মূলত দায়ী) তাকে ধীরে ধীরে কমিয়ে দেয়। ২. রক্তে আইজিজির মাত্রা বাড়িয়ে দেয় যা অ্যালার্জি প্রতিরোধ করে। ৩. মাস্ট সেল যা হিস্টামিন নিঃসরণ করে তা কমিয়ে দেয়। আগে ধারণা ছিল অ্যালার্জিজনিত রোগের কোনো চিকিৎসা বাংলাদেশে নেই।
তাই গরিব রোগীরা তাবিজ-কবজের দিকে ঝুঁকে পড়েন আর সচ্ছল রোগীরা পাশর্্ববর্তী দেশসহ বিভিন্ন দেশে চিকিৎসা নিতে গিয়ে দেশের মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা ও সময় দুটোই অপচয় করছেন। এ জন্য রোগীদের জানা দরকার যে, সঠিক সময়ে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসা নিলে এ থেকে পরবর্তীতে হাঁপানি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। প্রতিকার নয় প্রতিরোধ উত্তম।
ডা. গোবিন্দ চন্দ্র দাস, সহযোগী অধ্যাপক,
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা। ফোন: ৮১২৯৩৮৩
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।