আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কে এই আল কায়েদা, কি তার উদ্দেশ্য??



সম্প্রতি বাংলাদেশে জিহাদের ডাক দিয়ে একটি ভিডিও প্রচার করেছে আল কায়েদার বর্তমান প্রধান আয়মান আল জাওয়াহিরি। এতে অনেকের মনে বিষয়টি প্রশ্ন জাগতে শুরু করেছে আল কায়েদা সম্পর্কে। আমি অতি সংক্ষেপে ছবির মাধ্যমে আল কায়েদা সম্পর্কে আলোচনা করব, যদিও অনেকের কাছে এগুলো বহু পুরাতন বিষয়।

আল কায়েদার সম্পর্কে সবচেয়ে খোলাসা করে বক্তব্য দিয়েছিল ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী রবিন কুক।



রবিন কুক বলেছিল: “এটাই সত্য যে আল কায়েদা নামে কোন ইসলামী আর্মি বা সন্ত্রাসী বাহিনী নেই।

এবং প্রত্যেক গোয়েন্দা বাহিনীর লোক এ বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত। তবে এ নিয়ে মিডিয়ায় নাটক রচনার উদ্দেশ্য, সাধারণ মানুষের কাছে মার্কিনীদের সম্রাজ্যবিস্তারে কথিত ‘সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধ’র গ্রহনযোগ্যতা সৃষ্টি করা।

এ বক্তব্যদেয়ার কিছুদিন পর অতি রহস্যজনকভাবে স্কটল্যান্ডের পাহাড় থেকে পরে মারা যায় রবিন কুক ।


মার্কিন সাংবাদিক ওয়াইনি ম্যাডসেন আল কায়েদা সম্পর্কে প্রকাশেই বলেছিল:`আল কায়েদা হচ্ছে সিআইএ ও মোসাদের বানানো এক রূপকথার নাম'



মূলত: আল কায়েদা বলতে বোঝায়, সউদী ফান্ডিং এ পরিচালিত ওহাবিপন্থী সংগঠন, যারা সউদী ভায়া হয়ে মার্কিনী স্বার্থ উদ্ধার করছে। বলাবাহুল্য বর্তমানে সউদীরা মার্কিন ইহুদীবাদীদের প্রকাশ্য এজেন্ট।



আসলে, আল কায়েদা শব্দটি থেকে সারা বিশ্বের মানুষ ওসামা বিন লাদেন শব্দটির সাথে বেশি পরিচিত। ওসামা বিন লাদেনের কাধে ভর করেই আল কায়েদার এত পরিচিতি। মূলত: সউদী কোটিপতি লাদেন পরিবারের অন্যতম সদস্য ওসামা বিন লাদেন, যে পূর্ব থেকেই ছিল সিআইএ এজেন্ট। আশির দশকে আফগান-সোভিয়েত যুদ্ধে এই লাদেনের মাধ্যমে কলকাঠি নেড়েছিল সিআইএ, যোগান দিয়েছিল অস্ত্র ও টাকার। উদ্দেশ্য আফগানিস্তানকে যেন সোভিয়েত রাশিয়া খেতে না পারে, যা পরে গলাধঃকরণ করবে আমেরিকা।




আফগান যুদ্ধের সময় মাকিন নিরাপত্তা উপদেষ্টার সাথে ওসামা বিন লাদেন।


ভেতর থেকে আগেই রিমোর্ট কন্ট্রোল বোমা সেট করা ছিল টুইন টাওয়ারের ভেতর, কিন্তু বলা হলো ওসামাই নাকি এ বোমা ফাটিয়েছে, আর এ পক্ষে পুতুলের মত মুখ নেড়ে গেলো ওসামা। ব্যস এ অজুহাতে লক্ষ লক্ষ মুসলমানকে শহীদ করা শুরু করলো আমেরিকা। এখনও সারা বিশ্বে প্রতিদিন অসংখ্য বোমা ফাটায় সিআইএ-মোসাদ কিংবা এমআই-৬। কিন্তু সে সমস্ত সন্ত্রাসীপনা মুসলমানদের ঘাড়ে চাপানোর জন্য এর দায়ভার স্বীকার করে আলাকায়েদা।



আসলে কে এই ওসামা বিন লাদেন??

ওসামা বিন লাদেন হচ্ছে সৌদি ব্যবসায়ী লাদেন পরিবারের সদস্য। এ ব্যবসায়ী পরিবারটি এখন সৌদি আরবসহ সারা বিশ্বে বিন লাদেন গ্রুপ নামে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মান করে থাকে। এই লাদেন পরিবারের সাথে আফগান যুদ্ধের অনুমতিদানকারী বুশ পরিবারের সাথে ছিল দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব। তাদের সম্মিলিত শেয়ারে কার্লিলে গ্রুপ নামে একটি বিশালী প্রতিষ্ঠান আছে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে, মার্কিনবাহিনীর অত্যাধুনিক অস্ত্র খাতে বিশাল ইনভেস্ট ছিল এই কার্লিলে গ্রুপের।

বিষয়টা এমন দাড়াচ্ছে, এই লাদেন পরিবারের টাকা দিয়েই বিশ্বজুড়ে মুসলমান মেরে থাকে মার্কিনীরা।

বুশ ও লাদেনর পরিবারের মধ্যে সম্পর্ক

লাদেনের কিছু ছবি:

১৯৭১ সালে সুইডেনে ভাই-বোনদের সাথে তোলা ছবি। (লাল বৃত্তে ওসামা)


ওসামা বিন লাদেনের পুত্র ও পুত্র বধু


ওসামা বিন লাদেনের ভাই সালেম বিন লাদেন ও তার পরিবার। সালেম ছিল বাদশাহ ফাহাদের ঘনিষ্ট বন্ধু, এছাড়া ভবিষ্যত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লুউ বুশের সাথে যৌথ ব্যবসা ছিল। সালেম ১৯৮৮ সালে বিমান দুর্ঘটনায় মারা যায়।




মার্কিন স্টেট ফ্লোরিডাতে ওসামার ভাই খলিলের বিলাসবহুল বাড়ি।


ওসামা বিন লাদেনের ভাতিজি মার্কিন গায়িকা ও মডেল ওয়াফা দুফোরের ছবি:

মূলত: আল কায়েদা এমন একটি বস্তু, যাকে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ
কখন নিয়ে যায় ইয়েমেনে, সোমালিয়ায় কিংবা পাকিস্তানে তার উছিলা দিয়ে ড্রোন হামলা করার যায়,
কখন নিয়ে যায় ইরাকে, যার উছিলা দিয়ে মার্র্কিন সৈন্য চিরস্থায়ী ঘাটি করা যায়,
কখন নিয়ে যায় থাইল্যান্ড, কখন নাইজেরিয়া, কখন ফিলিপাইন কিংবা কখন ইউরোপ-আমেরিকায় যার মাধ্যমে সৃষ্টি করার মুসলিম নিপীড়নের নতুন নতুন কৌশল। এখানে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, প্রত্যেক দেশেই কথিত আল কায়েদা সে সময় ভর করে থাকে, ঐ দেশে সৌদি অর্থ ও মদদপুষ্ট ওহাবী সালাফি লামাযহাবী গ্রুপগুলোর উপর।


তবে মজার বিষয় হচ্ছে সব এলাকায় যে আমেরিকা আল কায়েদার বিরোধী হিসেবে আবির্ভূত হয় তা কিন্তু না। বর্তমানে সিরিয়ায় কথিত আল কায়েদার পক্ষ নিয়ে কথা বলছে আমেরিকা, ইসরাইলও আল কায়েদাকে অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করতে বলছে।




আসলে কূটচক্রী মার্কিনীরা নিজস্ব মিডিয়ায় ব্যাপক প্রোপাগান্ডা সৃষ্টির মাধ্যমে সাধারণ মানুষের চোখে ধূলো দিয়ে থাকে। যার ধারাবাহিকতায় এবার বাংলাদেশেও উস্কানি সৃষ্টির চেষ্টা করছে কথিত আল কায়েদা নেতা আয়মান জাওয়াহিরি। তবে বাংলাদেশের মুসলমানরা যদি শক্তভাবে এর প্রতিবাদ করে তবে বাংলাদেশে আগ্রাসণ চালানোর সুযোগ পাবে না মার্কিনীরা। ইনশাআল্লাহ।

সূত্র:

ক) Click This Link

খ) http://en.wikipedia.org/wiki/The_Carlyle_Group

গ) http://en.wikipedia.org/wiki/Al-Qaeda

ঘ) Click This Link

ঙ) Press tv

চ) Click This Link





অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।