দুই দিনের সফরে বাংলাদেশে এসে সরকার, গার্মেন্ট মালিক, শ্রমিক ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিয়ে শনিবার সফরের শেষদিন রাজধানীর লা ভিঞ্চি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন তিনি।
রায়না বলেন, “এটা অনেক দুঃখজনক যে, এখনো ৪০ শতাংশ কারখানা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়ন করেনি। আমরা এ বিষয়ে বিজিএমইএর সঙ্গে কথা বলেছি। ব্র্যান্ডগুলোর সঙ্গেও আমাদের কথা হয়েছে। ”
লোহা, খনি, রাসায়নিক, টেক্সটাইল ও চামড়া শিল্পসহ সাধারণ শিল্প শ্রমিকদের আন্তর্জাতিক সংগঠন ইন্ড্রাস্ট্রিঅল গ্লোবাল ইউনিয়ন গঠিত হয় ২০১২ সালে।
সংগঠনটি বিশ্বের ১৪০টি দেশের পাঁচ কোটি শ্রমিকের অধিকার ও কারখানার কর্মপরিবেশ নিয়ে কথা বলে আসছে।
ফাইল ছবি
শ্রমিকদের প্রয়োজনকে উপলব্ধি করে ন্যূনতম মজুরি বাড়ানোয় সরকারকে ধন্যবাদ জানান আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংগঠনের এই নেতা।
তিনি বলেন, “এখানেই থেমে থাকলে চলবে না।
ধীরে ধীরে তাদের মজুরি আরো বাড়াতে হবে, যাতে তারা একটি সম্মানজনক জীবনযাপন করতে পারেন। ”
তিনি বলেন, “এদেশে পোশাক শ্রমিকদের অবস্থা মোটেই ভালো নয়। তারা দিনরাত কষ্ট করেও সম্মানজনক জীবন পান না। এটি রীতিমত অমানবিক। এজন্যই তাদের মজুরি ক্রমান্বয়ে আরো বাড়াতে হবে।
”
এ বিষযে বিজিএমইএর নেতাদের সঙ্গে কথা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
রায়না বলেন, “মালিকরা মনে করেন মজুরি বাড়ালে ক্রেতারা চলে যাবে। আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে বিশ্বের বড় ১৫০টি ব্র্যান্ডের সঙ্গে কথা হয়েছে। আর তারা একমত হয়েছেন যে, অন্তত পাঁচ বছর তারা এদেশে থেকে অন্য কোথাও ব্যবসা নিয়ে যাবেন না।
“অন্যদিকে এখন তারা যে অনুপাতে অর্ডার দিচ্ছেন আগামী দুই বছর একই অনুপাতে অর্ডার করতে সম্মত হয়েছেন।
”
তিনি জানান, বাংলাদেশের কারখানা পরিদর্শনের জন্য ইতোমধ্যে ৩০ জন আন্তর্জাতিক পরিদর্শক নিয়োগ করা হয়েছে। তারা কারখানার কর্মপরিবেশ যাচাই করবেন।
আগামী কিছুদিনের মধ্যে আরো ৪০ জন পরিদর্শক এই দলে যোগ দেবেন জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা ২৫ জন বাংলাদেশি প্রকৌশলীকেও এই পরিদর্শক দলে অন্তর্ভুক্ত করবো, যাতে করে আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে পরিদর্শনের কাজ শেষ করতে পারি। ”
আগামী সেপ্টেম্বর নাগাদ সব কারখানা পরিদর্শন করা হবে বলে জানান তিনি।
এরপর তাদের দেয়া প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এদেশের পোশাক শিল্পের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা হবে বলে জানান তিনি।
এছাড়া আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলোর সমন্বয়ে ৪০ মিলিয়ন ডলারের একটি তহবিল গঠন করা হয়েছে বলে ইন্ডাস্ট্রিঅলের সাধারণ সম্পাদক।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের শ্রম-আইন সংশোধনেরও পরামর্শ দেন তিনি।
এ সময় ইন্ডাস্ট্রিঅলের দক্ষিণ এশিয়া সম্পাদক সুদর্শন রাও এবং বাংলাদেশ কাউন্সিলের সভাপতি নজরুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।
গত বছরের ৫ ডিসেম্বর পাঁচ হাজার ৩০০ টাকা ন্যূনতম মজুরি ধরে তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের জন্য নতুন মজুরি কাঠামোর গেজেট প্রকাশ করে সরকার।
নতুন এই বেতন কাঠামো ডিসেম্বরের প্রথম দিন থেকেই কার্যকরের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।