শনিবার বিকালে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “আইন প্রতিমন্ত্রীর মতো বেয়াদব ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মতো চরম বেয়াদবরা ক্ষমতায় থাকলে তারেক রহমান আপনি দেশে আসবেন না। আপনি কেন আসবেন, যে দেশে কোনো আইনের শাসন নেই। আপনাকে আমরা সময় মতো যথাযোগ্য মর্যাদায় দেশে বরণ করবো। ”
জিয়াউর রহমান ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ‘অপপ্রচার’ বন্ধেরও আহ্বান জানান তিনি।
গত ২০ মে লন্ডনে যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতাদের নিয়ে এক বৈঠকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগকে চাপ দিতে প্রবাসীদের সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
পাঁচ বছর ধরে যুক্তরাজ্যে অবস্থানকারী তারেক রহমানের সেটিই ছিল প্রথম প্রকাশ্য সভা।
লন্ডনের ওই সভার পর মুদ্রা পাচারের একটি মামলায় তারেককে ইন্টারপোলের মাধ্যমে দেশ আনতে পরোয়ানা জারি হয়েছে। তবে আদালতের আদেশের আগেই আইন প্রতিমন্ত্রী এক সভায় বলেছিলেন, তারেক রহমানকে দেশে আনতে যা যা করার দরকার, তার সবই করা হবে।
এছাড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর চট্টগ্রামে এক অনুষ্ঠানে জানান, লন্ডনে জনসভায় অংশ নিয়ে সেখানে রাজনৈতিকভাবে বিকৃত বক্তব্য উপস্থাপন করে তারেক রহমান তার মুচলেকার শর্ত লঙ্ঘন করেছেন।
জরুরি অবস্থার সময় গ্রেপ্তার তারেক উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্যে যান।
এক ডজনেরও বেশি মামলা মাথায় নিয়ে স্ত্রী-সন্তাননসহ তিনি এখনো সেদেশে রয়েছেন।
দলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৩২তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি শনিবার বিকালে ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে ওই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
এতে অতিথি সারিতে বসে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বক্তব্য শুনেন।
আলোচনা সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “১৯৭৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকার দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ হয়ে দেশে জরুরি অবস্থা জারি করেছিলো। সব মৌলিক অধিকার তারা কেড়ে নিয়েছিলো।
অতীতের মতো একই কায়দায় আজ তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার চক্রান্ত করছে। ”
এর বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
১৯৮১ সালের ৩০ মে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামে সেনা অভ্যুত্থানে নিহত হন। বিএনপি এ দিনটি তার ‘শাহাদত দিবস’ হিসেবে পালন করে। দিবসটি পালনে দলের ১৪ দিনের কর্মসূচি চলছে।
খালেদা জিয়া আলোচনা সভায় যোগ দেয়ার আগে দুপুরে রাজধানীর ৮টি স্পটে জিয়ার স্মরণে দুঃস্থদের মধ্যে খাবার বিতরণ করেন।
ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, “১/১১ সরকার দেশে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিলো। ওই সময়ে খালেদা জিয়া কারাগারে বন্দি অবস্থায় গণতন্ত্রের জন্য নীরব সংগ্রাম করেছিলেন। ”
স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “শহীদ জিয়াউর রহমানকে আওয়ামী লীগ ভয় পায়। জিয়ার পরিবার ও বিএনপির বিরুদ্ধে তারা ষড়যন্ত্র করছে।
তারা চায়, জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করে দিয়ে এদেশেকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে। ”
এজন্য শেখ হাসিনা সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করে আগামী নির্বাচন দিতে ভয় পাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জামিন সম্পর্কে মন্ত্রীদের বক্তব্যের সমালোচনা করে মওদুদ আহমেদ বলেন, “তৎকালীন সরকারের অনুমতি নিয়ে এবং সুপ্রিম কোর্টের শর্তহীন জামিনে চিকিৎসার জন্য তারেক রহমান লন্ডন গেছেন। সুপ্রিম কোর্টের জামিনের আদেশে কি লেখা আছে, তা না পড়ে বর্তমান সরকারের মন্ত্রীরা নানা রকম বক্তব্য রাখছেন। ”
দলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সাদেক হোসেন খোকার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় স্থায়ী কমিটির রফিকুল ইসলাম মিয়া, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ওসমান ফারুক,সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, যুব দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুস সালাম আজাদ, মহিলা দলের সভানেত্রী নুরী আরা সাফা, ছাত্রদলের সভাপতি আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল প্রমুখ নেতারা বক্তব্য রাখেন।
জিয়ার জীবনীর ওপর বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজ উদ্দিন আহমেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক খন্দকার মুস্তাহিদুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন দলের প্রচার সম্পাদক জয়নুল আবদিন ফারুক।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।