সাপের শরীর হয়ে আঁধারের গাছ/ কুয়াশার বন্যায় ডুবো দেবী মাছ!
১.
এখন আমি একা! কালো জুতোটি বসে আছে পায়ে লাল রক্তের ফুল নিয়ে! সাবধানী চুমু নিয়ে ভেবনাতো। বড় হয়ে গ্যালে চুমু খেতে হয়। শৈশব লজ্জায়! হাত নেড়ে নেড়ে বলতে হয় বিদায় অতীত। এসবের পরই আমি একা! ফুলের জুতো পরে হাঁটছে সময়। ওহ কিভাবে দেখছে দ্যাখো প্রাচীন দেয়াল! আমাকে দেখছে রোদচশমার উপর দিয়ে!আর তখনি..
পা ঝুলিয়ে বসে আমি একা!
২.
ঘরের ভেতর ঘোরের মধ্যে একটি প্রজাপতি
উড়তেছিলো আর ঘুরতে ঘুরতে যেমন নদী
হঠাত্ ই নেয় বাঁক
প্রজাপতি তেমন করে দেখতো চেয়ে যদি
ধরতেছিলো ইলাবতির হাত
বাইরে ঘরে চার জোনাকির ঝাঁক!
দেখতে পেত প্রজাপতি
চোখের ভেতর শান্ত ঋষি
ঘোরের ভেতর ওঘবতী নদী!
জলের ভেতর তলের পাঁকে অমোঘা নিয়তি।
৩.
মেঘের ঠোঁটে হাওয়াই মিঠাই হাসি! তুমি কেন যাবে?
কি জানি আলোতে কোন বেপরোয়া ছায়া
মেঘের হ্যাঙারে লটকাবে!
মাথার দিকে জানলা খোলা
লতাপাতা কামুক
মাথার ভেতর মেঘ নেমে যায়
কি জানি কোন অসভ্যতা !
অস্থিরতা রাখো
হাসো এবং মেঘের ঠোঁটে
গোলাপ হাসি। কেন যাবে?
দু হাতে দুই হাওয়াই মিঠাই মোটে। কোন পথে সেই দুয়ার? তুমি কি ভাবে পৌঁছাবে?
যেওনা রাঙা পা দক্ষিনে সমুদ্র সন্ন্যাসী!
৪.
স্পর্শ ভালবাসি তোর একটি নরম চুমো।
আকাশের থেকে নেমে আসা তারা। বারুনীর বুকঘরে মরন ঢেউ! মানকচু ছাতা ধরে বৃষ্টি থামাই।
বুনো মেঘ আঁচলের তলে এসে ঘুমো!
৫.
এখনো যে সব বেগুনী সময় শূণ্যে ভেসে আছে তারা থাক। টুপ করে ঝরে যাক দুপুর। হুড খোলা লোনা শরীরের স্বাদ। এখনো অভিমান বয়ে আনে গরমের দিন। শূণ্য সৌজন্যে আমাদের চোখ।
ঝরে যায় সুপারীর ফুল! হে অতশী দুপুর, আমাদের ডাকো, আমাদের ভাত ঘুম ভাঙে, আমাদের হাতে দ্যাখো রূপালী বকুল।
৬.
জলছানা আমাকে ধরো। বেসনের ভেতরে ডুবিয়ে ভেজে তোলো পরিচয়ের পরের দিন। ভুল করে ফেলে আসা ফোনের বোতামে তুমি ঘুম মেখে দাও। জলছানা তুমি এক গোলাপি বিছানে বসে থাকো।
সাদা কাপে চা খাও। হাতে রস মেখে জিলাপি। লটারিতে নাম নেই বলে যে আমি কাঁদে, থানার লাঠিটা হাতে তাকে আরেকটু কাঁদাও।
জলছানা আমাকে ধরো। তোমার হাতটা দাও! আমার স্বপ্ন শোনার তোমার সত্যি সময় নেই? রান্নাবাটি খেলার সময় জেদের বসে ফেলতো ছুঁড়ে খড়ের মিষ্টি, মনে আছে জলছানা তোমার? এই মেয়েটি সেই!
৭.
আহবানের পথ খোলা নেই কোনো
একটি সমাজ আমার কাছে এসে
চারশো বছর পিছিয়ে দিলো বাঁচা!
দুই চড়ুইয়ের দু হাত ধরে নাচার
ঘুমিয়ে থাকা ইচ্ছে প্রিয়তমো!
৮.
বুনো বিকেল এ চোখ করে লাল কাঁদে ডোরবেল।
হাত গলা ললিপপ। বুবুনের ইচ্ছে! পাগলা হাতির জু!
রিকশা কাঁদে। টুংটুং ঘন্টি। বুবুনের টিয়া পাখি ঠোঁট! ফুলে ফুলে কাট্টি! বুবুনটা শোনেনা। পা দাপিয়ে কান্না ।
মামনি মামনি চিড়িখানা ভুঁ...!
৯.
এই পুতুল মন বলে কিছু নেই তোর চুপ করে থাক। ওরা সব ঘুরে আসুক নদী আর শহরের ঘন লোকালয়। ওরা সব হিসেবি মানুষের মত। খাতায় কষুক পাওয়া ভালবাসা, ভালবাসা না পাওয়ার যোগ গুন ভাগ!
১০.
মানুষ উড়ে যায়। কেউ যদি ডানা হয়।
মানুষ দূরে যায়। দূরে যাওয়া ভাল যদি সমস্ত মানা হয়! সাড়ে ন'শ দিন ধুঁকে ধুঁকে মরার চে ন দিন আনন্দে বাঁচা ভালো; আনন্দই আলো।
এসব শুনে উড়ে যাওয়া ধনেশ -আমাদের পালা পাখি চোখ ঘুরে তাকালো!
১১.
তারপর সেই সবুজ টিকটিকি হলো দূধ্বর্ষ গল্পের এনিমেটেড ক্যারেকটার। বড় পায়ের বানর মানুষের মত করে হাঁটলো। ফাঁকা বনের পরে ঝরনা ছেড়ে আসা জলের খাড়ি।
আমার বন্ধুরা এলোমেলো। প্রাচীন এক ক্যামেরায় আমি তুলে নিলাম স্মৃতিকান্ড। কাতর সময়ের শেকড়! আমার স্বপ্ন হলো রঙ্গন ফুল। আমার বন্ধুরা সে ফুল ছোঁড়াছুড়ি করলো জলের ধারে!
আমার তবু বন্ধু প্রিয় স্বপ্ন প্রিয় আর প্রাচীন প্রেম!
১২.
আহা গোল্ডফিস আরঙা জলে
খেলিছো শৈবালে পুরনো সখা
উঠিয়া আসো হে ফিস রাত ভারি হয়
জল ফেলে আসিয়া উঠো নলিনী আঙ্গুলে!
১৩.
তাহাকে জাগিয়ে তোলো সমুদ্র জল
তাহাকে জাগাও বলো গোলাপের বন
তাহাকে হলুদ বলো রোদেলা অমন!
১৪.
কবুতর উড়ে এসে মাটির দেয়ালে ঝুলানো খোপকাটা কলসের ঘরে
এসে বসে রোজ
শীত মাখা কুড়কুড়ে গমের দানা
জমা করে প্রতিদিন অনাগত ভেবে
কবুতরী তার আগলিয়ে আছে ডিমের ভেতরে থাকা কবুতর ছানা!
১৫.
শূন্যতা চেওনা প্রিয় মধুস্বর! তোমাকে ধরে আছি শূন্যের ওপার থেকে আজানুলম্বিত স্পর্শে! সারাবছরের বসন্ত হয়ে থাকো! দীর্ঘতম বৃক্ষ হয়ে অমর হতে চাও। গল্প চাও কবিতাও! শূন্যতা চেওনা শুধু পীত প্রিয় দরদী!
১৬.
কবি কখনো উজ্জল মুখে বের হবেনা ঘর থেকে, আড্ডা থেকে, সম্পাদকের কাগজ ছাপাখানা থেকে।
কবি মলিন হওয়া কাগজ পকেটে ঘুরতে ঘুরতে হঠাত্ একদিন সম্মুখে পাবে গোলাপ বাগান। আলাপ হবে শ্রোতার সাথে। কবি তবু উজ্জল মুখ লুকিয়ে রাখবে বিষাদ ছলে। কবির সুখী হওয়া নিষিদ্ধ ঘরে আড্ডায় অথবা কবিতা ছাপার পরেও।
কবি যখন , মন খারাপের পোষাক থাকা ভালো!
শ্রোতা হলো প্রজাপতি , গোলাপ বাগান আলো!
১৭.
ঘুম থেকে ওঠা কুয়াশার নদী একটি বিকেল শেষ
ডিসেম্বরের চৌদ্দ তারিখ
আমার বাংলাদেশ
মোম জ্বলে জ্বলে নিভে এসেছিলো
শহীদ সিঁড়ির বেদি!
লাল সবুজের বুকের ভেতর পুত্র হারা দুখ-
দুঃখগুলো জ্বলছে এখনো ভীষন তপ্ত জেদি!
১৮.
চারপাশে এত শব্দ এত দোল! শুধু এখানে কোন শব্দ নেই।
জল পড়ার শব্দ নেই। পাতা পড়ার শব্দ নেই। বিষন্ন শখের ভেতর চুপ করে ঢুকে বসে আছো অভিমানে! তুমি কাঁদছো স্বদেশ?
তুমি ঠিক আমার মত করে কাঁদছো। তোমার বুকের ভেতর সবুজ পাতা। লাল রক্তের দাগ।
তোমার স্বপ্নেরা কাঁদে ঠিক কুয়াশার মত। চারিদিকে শব্দেরা। কত রকমের ডায়াগ্রাম। নক্সি রঙ কমলা রঙের শব্দ। শুধু এখানে কোন শব্দ নেই!
সকাল থেকে দুপুর অব্দি অপেক্ষার শেষে এখন তাই নিরবতা বসে আছে নিঃশূন্য বাগানেই।
১৯.
এখানে ওখানে ঘুমের গন্ধ চাতালের তলে মাতালের মুখে
সুখে অসুখে ঘুরিয়া ব্যাড়ায়
জীবন কি পারে শিখিতে ওসব গোপন সুখের কথা!
সারাদিনমান ঘামের গন্ধে ব্যস্ত চাপের ভিড়ে
এপারে ওপারে বনে ও বাদাড়ে
জীবন কি পারে শিখিতে ওসব অসুখেই অযথা!
২০.
শুধু স্বপ্ন দেখছি
স্পর্শ দেখছি মানুষ!
একটা মানুষ
গালের কাছে
চশমা ঠেলে..
আমি স্পর্শের গন্ধ পাই
স্বপ্ন ভেবেছে এটা স্বপ্নই
আর কেঁপে গেলো দেখেছি
ঠিক টলমলে জলের ভেতর হওয়ার কাঁপন
স্বপ্ন এভাবে কেঁপে গেল...
একটা হলুদ শিফনে সাদা
স্পষ্ট দেখেছি শাড়ির কাজ
কুরুচ কাটায় বোনা ব্লাউজের হাত
সাদা মুক্তোর চাঁদ!
স্বপ্ন দেখেছি...
দীর্ঘ অচিন পাখি ।
জংলা জামার ফাস!
বৃষ্টি...
জলের ভেতর এ কার দীর্ঘশ্বাস!
২১.
নটা বেজে গ্যালে আর কিছু ভাল্লাগেনা। মনে হয় পৃথিবীর এক পাশে সকাল হল তবু জাগলোনা ভোর! নটা বেজে গ্যালে প্রজাপতি ঘোরে আর ওড়ে বিস্ময়ে ঘরের ভেতর! নটা বেজে গ্যালে আর ভাল্লাগেনা রাত। মনে হয় শেষ হোক। শেষ হোক দূরের আঘাত!
রাত জাগা মাছ ঘুমুচ্ছে হাত ধরে জলের! নটা বেজে গ্যাছে ছি! হাঁটুর উপর দ্যাখো বসে আছে বিবি প্রজাপতি! দেখো কারা বসে আছে খুব কাছাকাছি।
অ;ট বছরটা প্রায় শেষ! আমার জীবনেও নতুন সময় শুরু। সবাই ভাল থাকুক। শুভ হোক প্রতিদিন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।