বর্তমান প্রেক্ষাপটে ক্যারিয়ার দৌড়ে টিকে থাকা এবং পছন্দ অনুযায়ী পেশায় পা দেওয়া খুবই কষ্টকর। অনেক চেষ্টার পর কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছা যায়। আবার অনেকেই আছেন যারা চেষ্টার পরও সফলতার মুখ দেখতে পান না। মনে রাখা উচিত যেকোনো কাজে সফলতা পেতে প্রথমেই টার্গেট নির্ধারণ করতে হবে। ছোটবেলা থেকেই সিলেবাসে এইম ইন লাইফ রচনাটি ঠোঁটস্থ করে এসেছি।
আসলে কর্মজীবনে ঢুকে এইম ইন লাইফ রচনাটি বাস্তবায়ন করতে হবে। যে কোনো কাজ বাস্তবায়ন করতে হলে পরিকল্পনা দরকার। পরিকল্পনাবিহীন কোনো কাজই সফলতার মুখ দেখতে পারে না। যে সব কারণে ক্যারিয়ার দেঁৗড়ে সফল হওয়া যায় না তা নিয়ে আলোচনা করা হলো-
সচেতনতার অভাব : নিজের মাঝে ক্যারিয়ার নিয়ে সচেতনতা বাড়ান। দুর্বলতাগুলোর একটি তালিকা তৈরি করুন।
পর্যায়ক্রমে ওই তালিকা নবায়ন করুন। পড়াশোনার ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়ে পিছিয়ে পড়ছেন সেগুলো নির্ধারণ করুন। ঘনিষ্ঠ বন্ধু, সহপাঠীদের সঙ্গে আলোচনা করুন।
লক্ষ্য নির্ধারণ করুন : পড়াশোনার অ্যাকশন প্ল্যানের ক্ষেত্রে জরুরি হলো আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি অর্থাৎ আপনি নিজেকে প্রকৌশলী, পাইলট, চিকিৎসক কিংবা তথ্য প্রযুক্তিবিদ হিসেবে দেখতে চান? কারণ আমাদের পড়াশোনার মূল লক্ষ্যই হলো পেশাজীবনে উন্নতি করা, সম্মানজনক চাকরি করা। স্বাভাবিকভাবেই পড়াশোনার বিষয় নির্ধারণ সেভাবেই করতে হবে।
এক্ষেত্রে বলতে পারেন, যে কোনো ডিগ্রিই গুরুত্বপূর্ণ।
দুর্বলতা খুঁজে বের করুন : ভবিষ্যৎ লক্ষ্য নির্ধারিত হয়ে গেলে এবার পরিকল্পনা করুন কিভাবে লক্ষ্য পূরণ করবেন। ধরুন আপনি প্রকৌশলী হবেন। এক্ষেত্রে পড়াশোনার শুরুটা বিজ্ঞান সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে হবে। বিষয় নির্বাচন শেষে এবার ভেবে দেখুন প্রকৌশলী হওয়ার জন্য আপনাকে পড়াশোনায় কতটা শ্রম দিতে হবে।
অনেক শিক্ষার্থী কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পেঁৗছতে পারে না, কারণ তারা দুর্বলতা খোঁজে না।
ভুলগুলো থেকে শিক্ষা না নেওয়া : অনেকেই ভুলগুলোকে নিজের অযোগ্যতার লক্ষণ হিসেবে মনে করেন। তারা তখন মনে করেন, তাদের পক্ষে কখনোই কোনো কিছু অর্জন করা সম্ভব নয়, এমনকি তারা চেষ্টা করাও ছেড়ে দেয়। ব্যর্থতা আমাদের সফল হতে সাহায্য করে যদি আমরা সেই ভুলের কারণগুলো বের করতে পারি এবং তা থেকে শিক্ষা নিতে পারি। যদিও ব্যর্থতা সাফল্যকে পিছিয়ে দেয়, কিন্তু ব্যর্থতা থেকে আমরা যে অমূল্য শিক্ষা পাই তাতে নতুন নতুন লক্ষ্য খুঁজে পাওয়া যায়।
অন্যের কথা শোনেন না : আমরা কখনোই অন্যের সাহায্য ছাড়া কোনো কিছু অর্জন করতে পারি না। আপনার শক্তি আছে, দুর্বলতাও আছে। তাই যখন কেউ আপনাকে সাহায্য করতে চাইবে, তাকে করতে দিন। তাই বলে এমন নয় যে, সব কথাই আপনাকে মানতে হবে। কিন্তু অন্যের কথাগুলো সিরিয়াসলি শুনুন, ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিন।
মেধার বিকাশ করেন না : আমরা মাঝে মাঝেই আমাদের মেধাকে লুকিয়ে রাখি। ভাবি, আমাদের মেধা যদি কপি হয়ে যায়। আর আমরা আমাদের মেধাগুলোকে আমাদের মনের এক কোণে রেখে দিই, গোপন করি। এই গোপন করার কারণে আপনার পার্সোনাল সম্পদ বোঝায় পরিণত হয়। মেধাকে বিকশিত করতে হবে।
সঞ্চয় করেন না : আপনার মূল্যবান সম্পদ টাকা পয়সা, সময়, এনার্জি, আত্দসম্মান এগুলো আপনি বাঁচিয়ে রাখতে পারেন না। খরচ করে ফেলেন। ভালো প্ল্যানিংয়ের অভাবে এটা হয়। যখন এগুলো ফুরিয়ে যায় তখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায়। তাই এ সম্পদগুলোকে বুঝেশুনে পরিকল্পিত উপায়ে ব্যয় করুন।
অর্থ, আবেগ ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করুন।
সাফল্যকে ভয় পান : ব্যর্থ হওয়ার ভয় যেমন খারাপ, সফল হওয়ার ভয় আরও খারাপ। ওপারে হয়তো সাফল্য, কিন্তু জানেন ওপারে কি আছে। এপারে আপনার জীবন কষ্টের ত্যাগের কিন্তু ওপারের অজানা জগৎ আপনার চেনা জগতের চেয়েও বিপজ্জনক হতে পারে (যদি আপনি ওই জগৎ সম্পর্কে ধারণা না রাখেন)। আপনি যদি সাফল্যকে ভয় পান তাহলে আপনাকে আপনার মনের ভেতরে পজিটিভ চিন্তাকে বিকশিত করুন।
সুতরাং সফল না হওয়ার এ কারণগুলো পর্যালোচনা করে নিজের ক্যারিয়ারকে ত্বরান্বিত করুন। এগিয়ে চলুন উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে। অর্জন করুন কাঙ্খিত লক্ষ্য।
হতে হবে কৌশলী : ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রের মানুষের সঙ্গে মানিয়ে-গুছিয়ে কাজ করতে হয়। প্রত্যেকেরই নিজস্ব কিছু দুর্বলতা আছে।
শুধু দোষ নয়, সহকর্মীদের নিশ্চয় অনেক গুণও রয়েছে। এদের মধ্যে অনেকেই হয়তো কাজের ব্যাপারে খুব অভিজ্ঞ, পরোপকারী। চেষ্টা করুন বন্ধু ও সহকর্মীদের সঙ্গে সবসময় সুসম্পর্ক বজায় রাখতে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।