আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ধরে নিয়ে গুলির অভিযোগ, পুলিশের অস্বীকার

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসাধীন মো. আরাফাতের (২৫) তিন দফা অস্ত্রোপচার শেষে বাঁ পায়ের নিচের অংশ কেটে ফেলা হয়েছে।

‘ধরে নিয়ে গুলি’ করার অভিযোগ করলেও পুলিশের বিরুদ্ধে কোনো মামলায় যেতে চান না তিনি। আহত হওয়ার পর  দুয়েকজন ছাড়া বিএনপির অন্য নেতাকর্মীরা খোঁজ না নেয়ায় অসন্তোষও রয়েছে তার।

গত বৃহস্পতিবার হাসপাতালে আরাফাতের সঙ্গে কথা হয় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

তিনি বলেন, গত ৭ জানুয়ারি নগরীর আকবর শাহ এলাকার শহীদ লেইন বিহারি কলোনি থেকে তিন পুলিশ তাকে ধরে থানায় নিয়ে যায়।

“সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে থানা থেকে আমাকে বেড়িবাঁধ এলাকায়  নিয়ে যাওয়া হয়। বাঁ পায়ের হাঁটুর নিচের মাংসপেশিতে গুলি করা হয়। ওইদিন রাত সাড়ে ৯টা-১০টার দিকে আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

“এরপর কয়েকবার অপারেশন শেষে করে হাঁটুসহ বাঁ পায়ের নিচের অংশ কেটে ফেলতে হয়। ”

আরাফাত বলেন, “গুলি করার আগে প্রাণে বাঁচতে আমি নিজের থেকে পুলিশকে টাকা দেয়ার কথা বলি।

তবে পুলিশ আমার কাছ থেকে কোনো টাকা দাবি করেনি। ”

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন বলেন, “আরাফাতকে ধরে নিয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি আদায়ের চেষ্টা করে পুলিশ। রাজি না হওয়ায় তার পায়ে গুলি করা হয়। ”

তবে তাদের অভিযোগ নাকচ করে পুলিশ বলছে, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের দুই দিনের মাথায় নগরীর সাগরিকা এলাকায়  পাহাড়তলি থানার ওসি আজিজুর রহমানের গাড়িতে পেট্রোল বোমা ছোড়ে অবরোধকারীরা। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ গুলি ছুড়লে আরাফাত আহত হন।

এছাড়া সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের কর্মসূচিকে ঘিরে নগরীর একে খান-পাহাড়তলী এলাকায় সড়ক অবরোধ, অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর, হাতবোমা বিস্ফোরণ ও পুলিশের ওপর হামলার সঙ্গে আরাফাত সরাসরি জড়িত ছিল বলে দাবি পুলিশ কর্মকর্তাদের।

ওসির গাড়িতে হামলার বিষয়টি অস্বীকার করলেও সে সময় বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেয়ার কথা স্বীকার করেছেন আরাফাত।

ওসির গাড়িতে হামলার সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন জানিয়ে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (পশ্চিম) এস এম তানভীর আরাফাত বলেন, “পুলিশের গাড়িতে পেট্রোল বোমা ছুড়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় বিরোধী জোটের কর্মীরা।

“পুলিশ সদস্যরা আত্মরক্ষার্থে গুলি ছুড়লে হামলকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আরাফাতকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আরাফাতকে একটি ছুরিসহ গ্রেপ্তার করা হয় জানিয়ে পাহাড়তলি থানার এসআই আবু ছালেক বলেন, “ধরার পর আমরা দেখতে পাই, তার পা থেকে রক্ত ঝরছে। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ”

ধরে নিয়ে গুলি করার অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সাগরিকা মোড়ে লোকজনের সামনেই তাকে ধরা হয়। এটা জনসমক্ষে ঘটেছে। ”

এ ঘটনায় নগরীর পাহাড়তলি থানায় পুলিশের করা দুটি মামলায়ই আরাফাতকে আসামি করা হয়।

কে আসা

এর আগে গত বছরের ৩০ নভেম্বর অবরোধ চলাকালে এ কে খান এলাকায় রেল লাইন অবরোধ ও পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি-বোমা ছোড়ার ঘটনায়ও আরাফাত অংশ নিয়েছিলেন বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তারা। অং

ওই ঘটনার পর মহানগর পুলিশের ফেইসবুক পৃষ্ঠায় একটি ছবি প্রকাশ করা হয়, যাতে ককটেল হাতে আরাফাতকে দেখা যায়।  

আরাফাত জানান, নগরীর সাগরিকা এলাকায় একটি ভাঙ্গাড়ির দোকান আছে তার। তার একভাই ছাত্রদল এবং আরেকজন ইসলামী ছাত্র শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুধু নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন তার খোঁজ-খবর নিয়েছেন।

অবশ্য সম্প্রতি বিএনপির অনেকেই আসছেন জানিয়ে আরাফাত বলেন, এতোদিন পর বিষয়টি নিয়ে আলোচনার পেছনে ‘রাজনীতি’ আছে বলেই ধারণা তার।

হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর আর রাজনীতিতে থাকার ইচ্ছা নেই বলেও জানান যুবদলের এই কর্মী।

তিনি বলেন, “কেউ কেউ এসে বলে ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) কাছে নিয়ে যাব। যখন আমি সুস্থ হওয়ার পথে তখন সবাই আসছে। আপনারাও আসছেন।

“এটা নিয়েও রাজনীতি শুরু হয়েছে। আমি পা হারিয়েছি, আমিই জানি কি যন্ত্রণা। আর রাজনীতি করব না। ”


সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।