আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হোম বেসড বিজনেস

ব্যবসা শুনেই ভয় পাবেন না। কম পুঁজি এবং কম লোকবল নিয়েও ব্যবসা হয়। তার জন্য খুব বেশি ছোটাছুটি করারও দরকার নেই। সংসার, সন্তান সামলিয়ে যে সময় পান, সেই সময়ে অনায়াসে শুরু করতে পারেন হোম বেসড বিজনেস। পড়াশোনার জন্য ওড়না স্টাইলাইজ করা ছেড়ে দিয়েছিলেন? বা রান্নার ক্লাস খোলার আগেই বিয়ে হয়ে গিয়েছিল? বা ছোটবেলা থেকেই স্কুল খোলার শখ কিন্তু সন্তান হওয়ার পর আর করা হয়ে ওঠেনি? এখন এগুলো আর কোনো সমস্যাই নয়।

নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী শুরু করে দিন ব্যবসা। তাও কিনা বাড়িতে বসেই।

ব্যবসা শুরুর আগে : বাড়ির কোনো এক অংশ নিজের কাজ বা ব্যবসার জায়গা হিসেবে আলাদা করুন। তা চিলেকোঠার ঘর হোক, গ্যারেজের এক দিক হোক বা ফাঁকা কোনো ড্রইংরুম হোক। সেই ঘরকে অফিসের মতো সাজিয়ে ফেলুন।

কারণ কাজের আবহাওয়া আপনাকে নতুনভাবে, অন্যরকম করে অনেক বেশি প্রফেশনালি ভাবতে সাহায্য করবে। প্রথমেই কাজের সময় নির্দিষ্ট করতে হবে। নিজের সুবিধা অনুযায়ী যে কয়েক ঘণ্টা কাজ করতে চান তা আগে থেকেই ঠিক করে নিন। সেইসময় ক্লায়েন্ট মিট, বিভিন্ন কাজের তদারকি করার জন্য সময় রাখুন। বিজনেস প্ল্যানও সেইসময় করুন।

কাজের সময়ে শুধু কাজই করবেন। বাড়িতে আছেন বলেই গেস্ট এলে গল্প করা বা ফোনে অনেকক্ষণ কথা বলা ঠিক নয়। সবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন। সবাইকে বলুন আপনি ব্যবসা শুরু করেছেন। কেউ না জানলে ব্যবসা বাড়ানো যায় না।

প্রয়োজন হলে বিজ্ঞাপন দিন। বিভিন্ন কনটাক্ট গড়ে তুলতে হবে। সবার সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখুন যাতে প্রয়োজনে সাহায্য চাইতে পারেন।

ব্যবসার জন্যে আলাদা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা জরুরি। পাশাপাশি ফোন এবং ফ্যাঙ্রে লাইন বাড়ির লাইনের সঙ্গে আলাদা করাও জরুরি।

অফিসে যাওয়ার মতোই ড্রেস-আপ করতে পারেন। এতে কাজে আলাদা উৎসাহ পাওয়া যাবে। কোনো ক্লায়েন্ট এলে তাকে বসিয়ে রেখে কখনোই বাড়ির কাজ সারবেন না, তা সে যত জরুরি কাজই হোক না কেন। প্রতিটি খুঁটিনাটি বিষয়ের দিকে লক্ষ্য রাখুন। কোন খাতে কত খরচ হবে, কি রকম ডিজাইন আপনার অফিসের পক্ষে উপযুক্ত- সবকিছু নিজে দেখুন।

ব্যবসার সব কাজ ডিটেইলে আপনি জানলে তবেই কিন্তু এই নিয়ে এগোতে পারবেন। অন্যথায় প্রথমেই বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে। ট্যাঙ্ এবং আইনি বিষয় দেখাশোনার জন্য প্রফেশনাল কারও সাহায্য নিলে ভালো। কোথা থেকে লোন পাবেন, কি ধরনের ইনভেস্টমেন্ট প্রয়োজন, কি ধরনের লাইসেন্স লাগবে তারাই আপনাকে বলে দেবেন।

পরিকল্পনার সময় লক্ষণীয় : প্রথম ২ বছরে আপনি কি কি করতে চান তা পরিকল্পনা করুন।

এমন কোনো লক্ষ্য নির্দিষ্ট করবেন না, যা পূরণ করা সম্ভব নয়। ' িধাপে ধাপে প্ল্যানিং করুন। কাজও সেই অনুযায়ী করতে হবে। কোনো স্টেপ স্কিপ করবেন না। অর্থাৎ প্রথম ধাপের পর দ্বিতীয় ধাপে কোনো সমস্যা দেখলে সেটি না করে তৃতীয় ধাপে চলে যাবেন না।

িসবাই করে বা এতদিন এগুলো করে আসছেন বলেই কোনো কিছু করবেন না। প্ল্যানিংয়ের সময় ভেবে নিন আপনার ব্যবসার জন্য ঠিক কোনটা প্রয়োজন। িবার বার প্ল্যান চেক করতে হবে। ভালোভাবে দেখে নিন কোথাও কোনো ফাঁক আছে কিনা। িপ্ল্যানিং করার সময় লোকসানের দিকটিও মাথায় রাখতে হবে।

অথবা আপনার কাছে কি রিসোর্স আছে যা আপনি কাজে লাগাতে পারবেন। যেমন- আপনার যদি অনেক বড় বাড়ি থাকে এবং সম্পূর্ণ একটা ফ্লোর আপনার পক্ষে ছেড়ে দেওয়া সম্ভব হয় তাহলে আপনি কিন্ডার গার্টেন স্কুল খুলতে পারেন। একেবারে ঝামেলা নিতে না চাইলে পেইং গেস্ট রাখতে পারেন। নিজের পছন্দ, এঙ্পার্টাইজ এবং সুবিধা অনুযায়ী ক্রাইটেরিয়া ঠিক করুন। িআপনি যদি ক্রিয়েটিভ হন, আধুনিক ট্রেন্ড সম্পর্কে ধারণা থাকে তাহলে খুলে ফেলতে পারেন কোনো বুটিক বা জুয়েলারি শপ।

এ জন্য আপনাকে ডিজাইনিং শিখতে হবে তার কিন্তু কোনো মানে নেই। ফ্যাশনেবল জিনিস বিভিন্ন জায়গা থেকে কিনে এনে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এমনকি অনায়াসে খুলে ফেলতে পারেন একটি আধুনিক বিউটি পার্লার।

কিছু বিজনেস আইডিয়া

হোমডেলিভারি : আপনি যদি রান্না করতে ভালোবাসেন, রান্না নিয়ে নিত্য-নতুন এঙ্পেরিমেন্ট করতে ইচ্ছুক থাকেন, তাহলে কম পুঁজিতে হোমডেলিভারির ব্যবসা চালাতে পারেন। প্রথমে প্রচারের জন্য বেশ কিছু লিফলেট ছাপিয়ে ফেলুন অথবা লোকাল কোনো কাগজে বিজ্ঞাপন দিন।

প্রাথমিকভাবে নিজে রান্না করতে পারেন। একা সামলাতে না পারলে সাহায্য করার জন্য লোক রাখুন। আর ২ জনকে নিয়োগ দিন যারা খাবার পেঁৗছে দিতে পারবে।

ওয়েডিং প্ল্যানার : বিয়েবাড়ি ভাড়া করে দেওয়া থেকে, বাবুর্চি ঠিক করা, ডেকোরেশন, তত্ত্ব সাজানো- সবটাই ওয়েডিং প্ল্যানারের কাজ। ক্লায়েন্টের প্রয়োজন অনুযায়ী আপনাকে পুরো বিয়ের আয়োজন করতে হবে।

পুরো দায়িত্ব নিতে অসুবিধা থাকলে এর মধ্য থেকে কিছু বাদ দিয়ে দিন। টাকার অঙ্কও সেই অনুযায়ী কমিয়ে দিন। তাহলে আপনার ঝামেলাও কম থাকবে আর ক্লায়েন্টের টাকাও কম দিতে হবে।

গিফট বাস্কেট তৈরি : আপনি যদি নানা ধরনের হাতের কাজ জানেন, তাহলে গিফট বাস্কেট তৈরি করতে পারেন। একই ধরনের হাতের কাজ একঘেয়ে হয়ে গেলেও এই বাস্কেট গিফট হিসেবে ভালো লাগবে।

বিভিন্ন অনুষ্ঠানের কথা ভেবে বানাতে পারেন এই বাস্কেট। যেমন- জন্মদিনের জন্য বাস্কেটে রাখুন নিজের তৈরি করা পেনসিল ব্যাগ, বুকমার্ক, ছোট পার্স, বাহারি মোমবাতি, পারফিউম, চকোলেট। বেতের বাস্কেটে সব জিনিস সাজিয়ে রিবন দিয়ে বেঁধে পরিবেশন করুন। বিয়ে, অ্যানিভার্সারি, চাকরি পাওয়া, সন্তান হওয়া- সবকিছুর জন্য আলাদা আলাদা বাস্কেট বানান।

টিউটোরিয়াল : জায়গা থাকলে খুলে ফেলতে পারেন টিউটোরিয়াল বা কোচিং।

এর জন্য পড়াশোনায় তুখোড় হতে হবে না। বিভিন্ন বিষয়ের টিচার নিযুক্ত করুন। স্থানীয় স্কুল-কলেজে বিজ্ঞাপন দিন। ছাত্র এলে বিভিন্ন ধরনের প্যাকেজের ব্যবস্থা রাখুন। যেমন- কেউ হয়তো শুধুই হিউম্যানিটিজ পড়তে চায়।

সে ক্ষেত্রে চার্জ এক রকম হবে। আবার সব সাবজেক্ট পরলে অন্যরকম চার্জ। সুতরাং ক্রিয়েটিভ হলে শুরু করতে পারেন এ বিজনেস। এতে সংসার খরচে স্বামীর সঙ্গে শেয়ার করতে পারবেন।

 



অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।