নিজেকে চিনতে চাই..... যেতে হবে অনেক দূর..... অসীম গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা.....
মহান আল্লাহ পাক বলেন, ‘যে ব্যক্তি এক জাররাহ পরিমাণ নেকী করবে, সে তার বদলা পাবে। আবার যে এক জাররাহ পরিমাণ বদী করবে সেও তার বদলা পাবে। ’
আর হাদীস শরীফে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘যে ব্যক্তি অন্যকে দুনিয়াবী ফায়দা দেয়ার লক্ষ্যে নিজের পরকালকে ক্ষতি করে; সে হচ্ছে সর্বাধিক নিকৃষ্ট ব্যক্তি। ’
সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে মুসলমানদের উপর হিন্দুদের নির্মম নির্যাতনে প্রতিভাত হচ্ছে এদেশে মুসলমান হওয়াই যেন অপরাধ! এদেশে হিন্দু হলেই তারা অগ্রণী ভূমিকায় থাকবে। প্রশাসন আর মিডিয়া তাদেরকে অবাধ তোষণ করবে।
সংখ্যালঘু বলে গলা ফাটিয়ে আজ সংখ্যালঘু হিন্দুরাই মুসলমানদের উপর নির্বিচারে নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। মুসলমান মহিলাদের সম্ভ্রম লুণ্ঠন করছে। শত শত মিথ্যা মামলা দিয়ে মুসলমানদের গ্রামকে গ্রাম, মাসের পর মাস পুরুষশূন্য করে রাখছে। মসজিদগুলোতে জুমুয়ার নামায হচ্ছে না। এমনকি পাঞ্জেগানা জামাত ও আযান পর্যন্ত হচ্ছে না।
সম্প্রতি বরিশাল, সাতক্ষীরা, দিনাজপুরের কর্ণাইসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এসব ঘটনা অত্যন্ত নির্মমভাবে সংঘটিত হচ্ছে। বিভিন্ন পত্রিকায় ও ওয়েব সাইটে এসব খবর প্রকাশিত হচ্ছে।
খবরে জানা যায়, ঘটনাস্থল বরিশালের চরকাউয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ। ব্যাডমিন্টন খেলায় তর্ক বিতর্ককে কেন্দ্র করে পারভেজ নামের একজন মুসলমান ছেলেকে কয়েকজন হিন্দু পরিকল্পিতভাবে জবাই করে হত্যা করে। পরিকল্পিত কারণ- সাথে করে তারা ছোরা নিয়েই এসেছিল।
ব্যাডমিন্টন খেলার আগেও পারভেজ-এর সাথে ঝগড়া হয়েছিল।
বাবা সেলিম গাজী অভিযোগ করেন, ক্রিকেট খেলা নিয়ে কিছুদিন আগে পীযূষ, শান্ত, শ্যামল, ধীমানসহ কয়েকজনের সঙ্গে তার ছেলের হাতাহাতি হয়েছিল। ওই ঘটনাকে মাথায় রেখে ব্যাডমিন্টন খেলার সময় পরিকল্পিতভাবে পারভেজকে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। বাধা দিতে গেলে শামীম গাজী ও জহিরুল ইসলাম নামক আরো দু’জনকে কোপানো হয়; যাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় হিন্দুপাড়ায় কিছু বাড়িঘর পোড়ানো হয়, তবে কেউ হতাহত হয়নি।
এ ঘটনা নিয়ে প্রথম আলোর রিপোর্ট- “খেলা নিয়ে খুন, তারপর হিন্দুদের বাড়ি ঘরে আগুন। ”
রিপোর্ট-এর শিরোনাম শুনে মনে হয়- খেলা নিয়ে খুন করা কোনো অপরাধ নয়; তবে রক্তপাতহীন অগ্নিকান্ড বিরাট অপরাধ।
সন্ত্রাসী হিন্দুদের আক্রমণে শহীদ পারভেজ গাজীর মা পারভীন বেগম বুকফাটা আর্তনাদ নিয়ে বলেছেন, “পত্রিকা ও টিভিতে অপনারা শুধু একতরফাভাবে আগুনে পোড়া বাড়িঘরের ছবি দেখাচ্ছেন; কিন্তু আমার পারভেজকে যে মন্দিরের সামনে গাছের সাথে বেঁধে ঝুলিয়ে এবং রাস্তার উপর ফেলে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে, সেই রক্তের চিত্র কি আপনাদের চোখে পড়ে না? আমি আমার জায়গা-জমি সব বিক্রি করে হিন্দুদের বাড়িঘর পোড়ানোর ক্ষতিপূরণ দেবো, তবে আপনারা আমার পারভেজকে এনে দেন!”
এ ঘটনা নিয়ে পরস্পর বিরোধী দুটি মামলা হয়েছে। হিন্দুরা যে প্রশাসনকে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে হিন্দুদের মামলার আসামির সংখ্যা দেখলে স্পষ্ট হয়ে যায়। মুসলমানরা এক হত্যা মামলার জন্য আসামি করেছে ১৩ সন্ত্রাসী হিন্দুকে।
সেখানে হিন্দুরা মামলা করেছে দেড় হাজার জনকে আসামি করে। আর এতে হিন্দুদের জন্য ঘরছাড়া হয় এলাকার সমস্ত মুসলমান পুরুষ।
পত্রিকায় প্রকাশ হয়েছে- দিনাজপুরের কর্ণাইয়ে “ .... গ্রেপ্তারের আতঙ্কে গ্রামের মুসলমান-অধ্যুষিত পাড়াগুলো পুরুষশূন্য হয়ে পড়ায় ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পুনর্ভবা নদীর দুই তীরঘেঁষা গ্রামের শত শত বিঘা জমির আলু তোলাই সম্ভব হয়নি। সময় মতো তৈরি হয়নি বোরো বীজতলা। থেমে গেছে ভুট্টা আবাদের কাজও।
....”
“..... এখানকার মুসলমান পাড়াগুলোতে কথা বলার জন্য দু-তিন দিনে কোনো পুরুষ মানুষ পাওয়া যায়নি। তবে নারীরা অভিযোগ করেন, কর্ণাই বাজারে মুসলমানদের দোকানগুলোতে হামলা চালিয়ে মালামাল লুট করেছে আওয়ামী লীগ-সমর্থক হিন্দুরা। এছাড়া ভোটের পরদিন রাতে যৌথ বাহিনীর অভিযানের সময় মহাদেবপুরের ৩০টির বেশি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের জন্য হিন্দুদের দায়ী করেন তারা। .....” (তথ্যসূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ২৪শে জানুয়ারি ২০১৪ ঈসায়ী)
বর্তমানে সরকারের নির্দেশে দিনাজপুরের কর্ণাইতে বিজিবি সদস্যরা ইট সিমেন্ট দিয়ে হিন্দুদের কাঁচা ঘরের স্থলে পাকা বাড়ি বানিয়ে দিচ্ছে। হিন্দুদের পরিবারকে রান্না করা খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।
কি খাবার দেয়া হচ্ছে এ বিষয়ে হিন্দুরা জানায়, সকালে হালুয়া, লুচি; দুপুরে মুরগি ভাত ডাল আর রাতে মাছসহ অন্যান্য তরিতরকারি দেয়া হয়। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সহযোগিতা পেয়েছে তারা। নগদ অর্থও পেয়েছে। হিন্দুদের ভিটেতে মাটির ঘরের জায়গায় এখন পাকা দালান উঠছে। তাই তারা বেশ খুশি।
অপরদিকে প্রাপ্ত খবরে জানা যায়- মুসলমান অধ্যুষিত এলাকা সাহাপাড়া ও বকরীপাড়ায় করুণ দৃশ্যের অবতারণা হয়। শত শত মুসলিম মহিলা ও শিশু অঝোর কান্নায় ভেঙে পড়ে। কেউ কেউ পা জড়িয়ে ধরেন, কেউ বুক চাপড়ে কাঁদতে থাকেন আর বলেন, আপনারা আমাদের বাঁচান। আমরা সাহায্য চাই না। আমরা নিরাপত্তা চাই।
আমাদের ঘরের পুরুষরা দুই মাস ধরে বাড়িতে থাকতে পারছেন না। তারাই আমাদের একমাত্র উপার্জনক্ষম পুরুষ। তারা বাড়িতে না থাকায় এখন আমরা বাচ্চাদের নিয়ে না খেয়ে আছি। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
মুসলমান উনাদের বাড়ি-ঘর এখনও লুটপাট করা হচ্ছে, মহিলাদের সম্ভ্রম লুণ্ঠন করা হচ্ছে।
মুসলমান মেয়েদের জোর করে সিঁদুর পরিয়ে দেয়া হচ্ছে, মুসলমান উনাদের গ্রাম-ছাড়া করার হুমকি দেয়া হচ্ছে। গ্রামে জুমুয়া নামায হচ্ছে না, মসজিদে আযান ও নামায হচ্ছে না।
আশ্চর্যের বিষয়! হিন্দুরা হুমকি দিয়ে বলেছে- গ্রামে একটি মুসলমানও রাখা হবে না। যুবতী মেয়েদের সিঁদুরও পরিয়ে দেয়া হয়। গ্রেফতারের ভয়ে এলাকার প্রতিটি গ্রাম পুরুষশূন্য।
গ্রামের কোনো পুরুষই বাড়িতে থাকেন না। হিন্দুরা আরো বলেছে- মুসলমান উনাদের গ্রামে রাখবো না।
মুসলমান উনাদের উপর হিন্দুদের এরূপ নির্মম নির্যাতন, সম্ভ্রম লুণ্ঠন, মুসলমান পুরুষশূন্য করা, মসজিদে জুমুয়া, নামায ও আযানশূন্য করা। এ অবস্থা শতকরা ৯৭ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত দেশে বরদাশত করা যায় কিভাবে? সরকারের স্মরণ রাখতে হবে, বাংলাদেশের মুসলমানগণ পাকিস্তানের যালিমদেরকে বরদাশত করেনি; বরং তাদেরকে দেশ থেকে বের করে দিয়েছে। অতএব, অন্য কোনো সম্প্রদায় বাংলাদেশের মুসলমানদের যুলুম করলে তাদেরও একই পরিণতি হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।