আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বই পড়া বিষয়ক ক্যাচাল

শেষ বারের মতো সতর্ক করছি... আমার লাইব্রেরিতে এসে পাকা চুলের কিছু মানুষ জানতে চায়। অনেক পুরনো বই কি আছে? আমি একটা বাক্যেই বুঝে ফেলি তিনি আসলে কি জানতে চান। কিন্তু আবার প্রশ্ন করি। কেমন পুরনো। বাতিল বই খুঁজছেন? তিনি মাথা নাড়েন এবং বলেন আগের বই।

আমি জানতে চাই আগের মানে কি রবীন্দ্রনাথের বই কি আগের নয়। এগুলা হলে চলবে? গ্রীক সভ্যতার বই? এরিস্টটল,সক্রেটিস,প্লেটোর দর্শনের চেয়ে পুরনো? এগুলো আছে। তিনি একটা তাচ্ছিল্যের দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকান। এবার আমি বিনিত ভাবে একটা বই এর নাম জানতে চাই। তিনি বলেন কায়দে আজম মোহাম্মদ আলী জিন্নার বই কি আছে? তিনি অবশ্য বইটার নামও বলেছিলেন কিন্তু আমি ভুলে গেছি।

এই ধরনে নাক উঁচু পাঠকও হয়তো আছে। আমি মাঝে মধ্যেই এদের সাক্ষাত পাই। পিতা তার সন্তানকে লাইব্রেরির কাছ থেকে নিয়ে যেতে যেতে বলেন। " তোমার বাসায় তো অনেক বই আছে। এখন বই পড়লে লেখা পড়া খারাপ করবে।

তুমি তো তোমার স্কুলের বইই পড়ে শেষ করতে পারো না। " আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে হে অভিভাবক আপনি কি আপনার সকল একাডেমিক বই পড়ে শেষ করেছিলেন? উত্তর হয়তো পাব না। উত্তর আশাও করিনা। বই বলতেই মানুষ দুই ধরনের বই বুঝে। বেশির ভাগ মানুষ পাঠ্য পুস্তক বুঝে।

এর বাইরে অল্প পরিমান মানুষই আছে। তারাও আবার অপাঠ্য বই বলতে বুঝে গল্প , কবিতা, উপন্যাস। আর কিছুটা বই পড়ে এমন লোকেরা হয়তো ভ্রমন,জীবনী,ইতিহাস সাথে যোগ করেন। কিন্তু এসবের বাইরেও তো বই আছে। যদিও বাংলা ভাষাতে ব্যতিক্রম বই এর সংখ্যা খুব বেশি নয়।

বিজ্ঞান নিয়ে কিছু বই ইদানিং বের হচ্ছে। কিন্তু অনেক বিষয় আছে যে সব বিষয়ে এখনো বই লেখার কথা চিন্তাও করা হয়নি। এসব প্রতিবন্ধকতার পরেও কিছু বই আছে কিন্তু তা এতই কম যে তার সন্ধান অনেকেই জানে না। চোখের সামনে অনেক বই প্রদর্শন বলতে তো বই মেলা। এবং একটি বই মেলা ঢাকার মাঝে হওয়ায় আমাদের মতো অনেক মফস্বলের মানুষ এসবের সন্ধান খুব একটা পায় না।

আর একদিন, কিংবা দুই দিনে এত প্রকাশনার বিশাল বই দেখে ফেলাও কঠিন। ক্যাটালগ দিয়ে হয়তো কিছু নাম পাওয়া যায়। কিন্তু নাম দিয়েই তো বই পছন্দ করা যায় না। আগে থেকে কোন বই পড়া থাকলে , অথবা কোন লেখকের সম্পর্কে কোন ধারনা থাকলে হয়তো ক্যাটালগ দিয়ে বই কেনা যায়। কিন্তু উৎসুক মানুষের মনে খুঁত খুঁত থেকেই যায়।

অর্থনীতি,বাজার,পশুপালন,খামার করা,গাছ চেনা,ফুল পাখি,নদী,মাটি এসব নিয়ে হাজার হাজার বই থাকতে পারে। একাডেমিক যে বই গুলা বাজার থেকে সংগ্রহ করা যায় তা পড়ার যোগ্য নয়। আমরা সার্টিফিকেটের জন্য হয়তো বাধ্য হয় এসব পড়তে। কিন্তু ভাল যে লাগে না এই বিষয়ে সবাই হয়তো এক মত হবেন। ফেবুতে তাই যাকে পাই তাকেই অনুরোধ করি, আপনার পড়ার বিষয়ে ছোট ছোট ব্লগ লেখতে শুরু করেন।

বলা তো যায় না আপনার ব্লগ গুলোই এক সময় বই আকারে বের হতে পারে। অনেক খামখেয়ালী তো বিখ্যাত হয়েছে আপনিও এমন একটা খাম খেয়ালি করেন দেখেন না। নাম প্রতিপত্তি না হোক কিছু মানুষ তো পড়তে পারল। লস তো আর হলো না। তো সেই ব্যতিক্রম বই গুলা নিয়ে ছোট ছোট রিভিউ লিখে একটা ওয়েবসাইট করতে পারলে ভাল হতো।

আমার নিজেরই দৈন্যতার শেষ নেই। কিন্তু সবাই যদি মিলে এমন একটি বিষয় শুরু করি তাহলে নিশ্চয় সফল না হলে উপায় নেই। ব্যক্তি মালিকানা হীন,সবার জন্য উন্মোক্ত এমন একটি বিষয় কি চালু করা যাবে না? অনেক দিন পর সামুতে ফিরে আসলাম। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।