আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

১৪ কোটি বছরের প্রাচীন জীবন্ত প্রাণী লাউয়াছড়ায় !!

বিং হিউম্যান ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর ১৪ কোটি বছরের পুরনো প্রজাতির দুটি সরীসৃপ জাতীয় প্রাণী খুঁজে পেলেন বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ড. রেজা খান ও বন্যপ্রাণী গবেষক তানিয়া খান। এর বৈজ্ঞানিক নাম ‘চিকিলা ফুলেরি’ (CHIKILA FULLERI)। ফলে এটি প্রমাণিত হলো যে, ১৪ কোটি বছর পূর্বে এ অঞ্চলে প্রাণীর অস্তিত্ব ছিল। Photo : The Daily Star গতকাল বুধবার সকালে মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতরের ছড়ার(ঝর্ণার) পাশে গর্ত খুঁড়ে তারা ১৯ সেন্টিমিটার ও ১৭ সেন্টিমিটার আকারের দুটি প্রাণী খুঁজে পেয়েছেন। এর মধ্যে একটি প্রাণী ছেড়ে দিয়েছেন এবং অন্যটি গবেষক দল ডিএনএ টেস্টের জন্য ঢাকায় নিয়ে যাবেন।

জানা যায়, গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ভারতীয় গবেষকরা লন্ডনের ‘রয়্যাল সোসাইটি অব জার্নালে’ এই প্রাণীটির বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় ১৪ কোটি বছর আগে প্রাণীদের আবির্ভাব হয়েছিল বিশ্বে। তাদের একটি দল হয়তো ভারতবর্ষে রয়ে যায় এবং অন্য দলটি আফ্রিকা ও আরেকটি দল দক্ষিণ আমেরিকায় রয়ে যায়। গবেষকরা জানান, এই প্রাণীটি বেশিক্ষণ শুকনো বা ডাঙায় থাকতে পারে না পানি ছাড়া। এরা হাত-পা ছাড়া ব্যাঙসদৃশ প্রাণী।

এরা সাপ নয়, কেঁচো নয়, এরা উভচর প্রাণী। এদের মেরুদণ্ড আছে। ১০ ইঞ্চি গভীর মাটির নিচে এরা বাস করে থাকে। এরা মাটির নিচে বাস করে খাদ্য গ্রহণ করে, ঘুমায় এবং মাটির নিচেই মারা যায়। এই প্রাণীটির কোনো বিবর্তন নেই।

তারা জানান, লোকজন মনে করতে পারে এটি কেঁচো বা দুমুখো সাপ। তবে আমরা মনে করছি এটি ‘চিকিলা ফুলেরি’। তবে এটি চিকিলা ফুলেরি কি না সে ব্যাপারে চূড়ান্তভাবে নিশ্চিত হওয়ার জন্য ডিএনএ টেস্ট করা হবে। তারা আরও জানান, এধরনের একটি প্রাণীর অস্তিত্ব গত ফেব্রুয়ারি মাসে ভারতে পাওয়া যায়। ভারতের জিওলজিক্যাল সার্ভে মিউজিয়ামে এই প্রাণীর নকশা রয়েছে।

এছাড়া এই প্রজাতির প্রাণীর ভিন্ন নামে ভারতের আসামেও রয়েছে। এছাড়া গত ৫ বছর ধরে ভারতীয় বিজ্ঞানী ও গবেষকরা এই প্রাণীটির আবাস, বসবাসস্থল, বিচরণ ইত্যাদি নিয়ে গবেষণা শুরু করেন এবং গত ২ বছর ধরে তারা পুরো উদ্যমে এই প্রাণীটি খুঁজে বের করার জন্য কাজ করছেন। তারা আরও জানান, এই ‘চিকিলা ফুলেরি’ প্রাণীটি সম্বন্ধে ‘এলকক’ নামে ভারতীয় এক গবেষক ১৯০৪ সালে তথ্য প্রদান করেন। বন্যপ্রাণী গবেষক তানিয়া খান জানান, গত সেপ্টেম্বরে তিনি লাউয়াছড়ার ভেতরে ঝর্ণার পাশে ‘চিকিলা ফুলেরি’ সরীসৃপের একটি কঙ্কাল পেয়ে ছবি তুলে ড. রেজা খানকে ই-মেইলে তা পাঠান। এরপর প্রাথমিকভাবে ধরা হয়, এটি ‘চিকিলা ফুলেরি’রই কঙ্কাল।

এরপর বনবিভাগের অনুমতি নিয়ে বুধবার সকালে মৌলভীবাজারের বন কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় একইস্থানে গর্ত খুঁড়ে দুটি জীবিত চিকিলা ফুলেরি খুঁজে পান। প্রাণী বিশেষজ্ঞ ড. রেজা খান বলেন, আজ জীবিত এই প্রাণীটি খুঁজে পাওয়ার পর একশ ভাগ প্রমাণিত হলো যে, বিশ্বব্যাপী যে প্রাণীটি নিয়ে গবেষণা চলছে সেটা বাংলাদেশেই আছে এবং আমাদের দেশের গবেষকরা এতদিন এটি খুঁজে বের করতে পারেনি বা তাদের সেই সুযোগ হয়নি। এই প্রাণীটি নিয়ে আমাদের দেশের বিজ্ঞানী ও গবেষকদের গবেষণা এখন শুরু করা উচিত বলে তিনি মনে করেন। লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে প্রাণীটি সন্ধানের পাওয়ার সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বণ্যপ্রাণী গবেষক মনির আহমেদ খান, সরীসৃপবিদ রোকেয়া সুলতানা, বণ্যপ্রাণী পরিদর্শক মো. সোহেল রানা মৌলভীবাজার বনবিভাগের বণ্যপ্রাণী পরিদর্শক ইশরাত জাহান প্রমুখ। সুত্রঃ আমাদের অর্থনীতি  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।