আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

১১ নম্বর ব্লক পেল স্যান্টোস-ক্রিস এনার্জি

এ বিষয়ে বুধবার পেট্রোবাংলা ও বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে স্যান্টোস সাঙ্গু ফিল্ড লিমিটেড ও ক্রিস এনার্জি লিমিটেডের চুক্তি সই হয়েছে।

বিদেশি এ প্রতিষ্ঠান দুটির সঙ্গে যৌথভাবে (ক্যারিড ইন্টারেস্ট) থাকছে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাপেক্সও। তেল-গ্যাস পাওয়া গেলে ৫৫ শতাংশ (কস্ট রিকভারি) পাবে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ১০ শতাংশ অংশীদার হিসাবে পাবে বাপেক্স।

বাকি অংশের তেল ও ‘কনডেনসেট’ এর মধ্যে ৫৫ থেকে ৮০ শতাংশ পাবে পেট্রোবাংলা।

বাকিটা যাবে ঠিকাদারের পকেটে।

অনুসন্ধানকারী প্রতিষ্ঠান উত্তোলিত তেল-গ্যাস প্রথমে পেট্রোবাংলার কাছে বিক্রির জন্য প্রস্তাব দেবে, পেট্রোবাংলা প্রত্যাখ্যান করলে দেশের মধ্যেই তৃতীয় পক্ষের কাছে তা বিক্রি করতে হবে।

উত্তোলিত তেল-গাসের দাম নির্ধারিত হয়েছে ‘হাই সালফার ফুয়েল অয়েল’ ভিত্তিতে প্রতি টন ১০০ ডলার থেকে ২০০ ডলারের মধ্যে।

এই ব্লকের জন্য স্যান্টোস ও ক্রিসএনার্জিকে ৮ বছর মেয়াদের জন্য ‘গ্যারান্টি’ হিসাবে ১৫ মিলিয়ন ডলার দিতে হবে।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুসহ মন্ত্রণালয় ও পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা রাজধানীর পেট্রোসেন্টারে এই চুক্তি সাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

মডেল পিএসপি ২০১২ এর আওতায় গত বছর অগভীর সমুদ্রের নয়টি ব্লকে তেল গ্যাস উত্তোলন ও অনুসন্ধানের জন্য দরপত্র ডাকা হলে চারটি ব্লকের জন্য তিনটি কোম্পানি দর প্রস্তাব দেয়। তবে কোনো ব্লকের জন্যই  প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না।

গত ১৭ ফেব্রুয়ারি অগভীর সমুদ্রের ৪ ও ৯ নম্বর ব্লকের কাজ দেয়া হয় ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি ওএনজিসিকে। ওইদিন ওএনজিসি ও অয়েল ইনডিয়ার সঙ্গে এ বিষয়ে চুক্তি করে সরকার।

এছাড়া ৭ নম্বর ব্লকে যুক্তরাষ্ট্রের কনকো ফিলিপসের সঙ্গে আগামী মাসেই চুক্তি হবে বলে পেট্রোবাংলার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

বুধবার চুক্তি সাক্ষর অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী মুহিত বলেন, “জ্বালানি ছাড়া উন্নয়নের কোনো উপায় নেই। আশা করি এ চুক্তির উদ্দেশ্য সফল হবে। ”

অগভীর সমুদ্রের ব্লক ১১ এর আয়তন ৪ হাজার ৪৭৫ বর্গকিলোমিটার। স্যান্টোস ও ক্রিস এনার্জিকে ওই ব্লকে অন্তত একটি কূপে ৮৮৭ কিলোমিটার লাইন দ্বিমাত্রিক সিসমিক সার্ভে করতে হবে।

শর্ত অনুযায়ী, তেল-গ্যাস অনুসন্ধান কাজে অন্তত ৫০ শতাংশ এবং উত্তোলন কাজে অন্তত ৯০ শতাংশ বাংলাদেশি কর্মীকে যুক্ত করতে হবে।

বাংলাদেশের সার উৎপাদন শতভাগ গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল। এছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদনেও ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে জ্বালনি হিসাবে ব্যবহার হচ্ছে প্রাকৃতিক গ্যাস।

অন্যান্য শিল্প কারখানা ও আবাসিক গ্রাহক মিলিয়ে প্রায় ২৫ লাখ গ্রাহককে নিয়মিত গ্যাস সরবরাহ করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে সরকারকে।

বর্তমানে ২৫টি গ্যাস ক্ষেত্র থেকে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২ কোটি ৩০ লাখ ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে, তারপরও প্রায় ৫০ লাখ ঘনফুট গ্যাসের ঘাটতি থেকে যাচ্ছে।

পেট্রোবাংলার হিসাবে, বাংলাদেশ থেকে এখন পর্যন্ত ১১ দশমিক ৭২ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হয়েছে।

এখনো প্রমাণিত মজুদ রয়েছে ১৫ দশমিক ৩২ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের।

এ অবস্থায় ঘাটতি পূরণ করে নতুন গ্রাহকদের গ্যাস দিতে সরকারের পক্ষ থেকে নতুন গ্যাসক্ষেত্র খোঁজা এবং তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির ওপর জোর দেয়া হচ্ছে।

২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে উৎপাদন বণ্টন চুক্তি (পিএসপি) ২০১২ প্রণয়নের পর ভারতের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ ব্লকগুলো বাদ রেখে  ডিসেম্বরে গভীর ও অগভীর সমুদ্রের ১২টি ব্লকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য দরপত্র ডাকে পেট্রোবাংলা।

এর মধ্যে অগভীর সমুদ্রের এসএস-০২ থেকে এসএস-০৪ ও এসএস-০৬ থেকে এসএস-১১ ব্লকের জন্য দুই দফার দরপত্র ডাকা হয়।

কিন্তু গভীর সমুদ্রের ডিএস-১২, ডিএস-১৬ ও ডিএস-২১ ব্লকের জন্য তেল-গ্যাস অনুসন্ধানকারী কোনো আন্তর্জাতিক কোম্পানির প্রস্তাব না পেয়ে গতবছর ফেব্রুয়ারিতে টেন্ডার প্রক্রিয়া স্থগিত করে পেট্রোবাংলা।

ঠিকাদারদের দাবি অনুযায়ী শর্ত শিথিলের জন্য মডেল পিএসসিও সংশোধন করা হয়।

এই তিন ব্লকের জন্য বর্তমানে দরপত্র মূল্যায়ন চলছে। তিনটি ব্লকেই একমাত্র দরদাতা যুক্তরাষ্ট্রের কনকো ফিলিপস।  

এর আগে ২০১১ সালে গভীর সমুদ্রের ডিএস ১০ ও ডিএস ১১ ব্লকের দায়িত্বও কনকো ফিলিপসকে দেয়া হয়েছিল।

বর্তমানে চারটি গ্যাসক্ষেত্র থেকে বিদেশি প্রতিষ্ঠান শেভরন ও তাল্লো দেশের মোট গ্যাসের ৫৪ শতাংশ সরবরাহ করছে।

  


সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।