আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কিন্ডারগার্টেন-বাণিজ্য নয় শিক্ষা চাই

আমার এই লেখাটি আলোকিত বাংলাদেশ পত্রিকায় গত ০৯/০৩/১৪ ইং তারিখে ছাপানো হয়। লেখাটি হুবুহু দিলাম।



কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোর অধিকাংশের নেই কোনো সরকারি অনুমোদন। তারপর আবার এখানে যারা শিক্ষা দিতে আসেন, তাদের বেশিরভাগের নেই প্রশিক্ষণ। এছাড়া নেই শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশও।


শুরু করি ভর্তি দিয়ে। আপনার সন্তানকে ভর্তি করতে হলে প্রয়োজন ভর্তি ফি। এ ফি প্রতি বছর বহন করতে হবে। এছাড়া বই কিনতে হবে, তবে তা স্কুল বা স্কুলের নির্দিষ্ট লাইব্রেরি থেকে। একজন প্লে বা নার্সারির শিশুর জন্য নির্ধারিত হয় স্কুলভেদে ছয় থেকে আটটি বই।

যার মধ্যে তিন থেকে পাঁচটি বই এ বয়সে দেয়া যায় কিনা তা তারা জানেন না। এ বইগুলো থেকে স্কুলের লাভ হয় জনপ্রতি প্রায় ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা।

তার মানে যদি ওই স্কুলে ছাত্র হয় ২০০ জন তবে বই বিক্রি বাবদ লাভ কত? অপ্রাসঙ্গিক বইগুলো হলো_ ওয়ার্ড বুক, অ্যাক্টিভ ইংলিশ, অঙ্কন, বাংলা কবিতা, সাধারণ জ্ঞান। প্লে ও নার্সারির জন্য বাংলা, ইংলিশ ও গণিত কি যথেষ্ট নয়? সরকারি স্কুলগুলোয় যে এত কম বই দেয়া হয়েছে, তা কিনা বুঝেই দেয়া হয়েছে? এ বই পড়ে কি কেউ ভালো কিছু হয়নি? এত অল্প বয়সে এতগুলো বই শিশুর মানসিক বিকাশে কি ক্ষতি করে না? এছাড়া ছোটবেলায়ই পড়ালেখার প্রতি কি বিতৃষ্ণা ও ভীতির জন্ম দেয় না?
কিছুদিন আগে দেখলাম নার্সারির এক ছাত্রকে পড়া দিয়েছে বাংলা কবিতা না দেখে লেখা। ওই ছাত্র অক্ষর চেনে না ঠিকমতো, আর ও লিখবে কবিতা!

তার মানে বোঝা যায়, ছাত্রটি জানে বেশি; কিন্তু পারে কম।

স্কুলগুলোয় বাংলা, ইংলিশ বা গণিত অক্ষরের ওপর কম জোর দেয়া হয়, কারণ ওগুলো বাবা-মা শেখাবেন।
শিক্ষকদের ট্রেনিংয়ের ব্যাপারটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ ট্রেনিং না করলে কোনো ছাত্রই নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। শুধু ডায়েরিতে লিখতে হয় আপনার বাচ্চা খুব দুষ্টু।
এবার আসি শিক্ষকের বেতন প্রসঙ্গে।

শিক্ষক কখনোই খারাপ করে পড়ান না। কিন্তু মাস শেষে যে পয়সা পান, তা দিয়ে তো কিছুই হয় না। ঢুকে যায় নতুন চাকরির ধান্দা। এখন ছাত্র পড়ে ছাত্রের মতো; শিক্ষক পড়ান নিজের মতো। টিফিন পিরিয়ডে বাচ্চারা খেলা

করবে এটাই স্বাভাবিক।

কিন্তু ক'টা স্কুলে খেলার মাঠ আছে? বাসায় যাওয়ার পর যে খেলা করবে তারও উপায় নেই। বাবা-মায়েরাও বাড়িতে পড়ার চাপ দেন। প্লে, নার্সারির পড়া ক্লাসে শেষ করে দেয়া উচিত। আর পড়াটাই যেন হয় খেলা। তাহলে বাচ্চারা পড়েও মজা পাবে।

আদব-কায়দা, সম্মান এগুলো কি স্কুলে শেখানো উচিত নয়? আমার মনে হয়, সরকারিভাবে সব ক্লাসের সিলেবাস করে দেয়া উচিত এবং তদারকির যথাযথ ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। ভর্তি বাণিজ্য নিয়ে তদন্ত শুরু হলেও কী অবস্থা তা আজও জানা যায়নি।
গণবিশ্ববিদ্যালয়, সাভার। ।

সোর্স: http://prothom-aloblog.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।