কুমিল্লার চান্দিনায় ৪১তম বিজয়ের মাসে মুক্তিযোদ্ধা মধু মাষ্টারের আকুতি ‘জয় বাংলা’-ই হোক এদেশের বাঙালি জাতির একমাত্র স্লোগান। বিশ্বের কোনো দেশেই একাধিক জাতীয় স্লোগান নেই। কিন্তু আমাদের দেশের রাজনৈতিক নেতারা নিজেদের স্বার্থে এদেশে একাধিক স্লোগান প্রতিষ্ঠা করেছেন। যা কোনে অবস্থাতেই মেনে নেওয়া যায় না।
যদি রাজনৈতিক দলগুলো সম্মিলিতভাবে নিজেদের স্বার্থ চিন্তা না করে দেশ ও বাঙালি জাতি সত্ত্বার কথা চিন্তা করেন তাহলে এদেশের জাতীয় স্লোগান হিসেবে ‘জয় বাংলা’কে অবশ্যই বিতর্কিত রাখবেন।
৭২ বয়স-উর্ধ্ব মুক্তিযোদ্ধা মনিরুল ইসলাম মধু মাষ্টার চান্দিনা উপজেলার চান্দিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ১৯৬৩ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে স্নাতক পাশ করে ওই সালেই শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত হন।
ছাত্রাবস্থায় তিনি ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। ১৯৬৪ সালে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী মফিজ উদ্দিন এর গাড়ি ভাঙ্গা মামলায় ১৩ জন আসামির মধ্যে তিনি একজন।
১৯৬৯ সালে পাক বাহিনী শেখ মুজিবুর রহমানকে আটক করলে তার নেতৃত্বে প্রায় ত্রিশ হাজার লোকের সমন্বয়ে ‘জেলের তালা ভাঙ্গব, শেখ মুজিবকে আনব’ স্লোগানে মিছিল বের করেন।
পত্রিকাতে ওই সংবাদটি প্রকাশিত হওয়ার পর তৎকালীন ছাত্রনেতা তোফায়েল আহমেদ চান্দিনাতে এসে তাকে ধন্যবাদ জানান।
৭১’র স্বাধীনতা যুদ্ধে ছোট ভাই আব্দুল কাদেরকে যুদ্ধে পাঠান এবং তিনি পালাটানা ট্রেনিং ক্যাম্পে ট্রেনিং শেষে কমান্ডার ক্যাপ্টেন সুজাত আলী’র নির্দেশে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে সংগঠনের সব নেতাকর্মী ও মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্বুদ্ধ করে যুদ্ধে পাঠান।
অপরদিকে তিনি চান্দিনার মাধাইয়া ছাদিম উচ্চ বিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেন এবং অনেক দেশের গান রচনা করেন। তার লেখা একাধিক গান তৎকালীন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে স্বাধীনতার প্রেরণায় উৎসাহী শিল্পীদের কন্ঠে প্রচারিত হয়। তার লেখা ‘জননী জন্ম ভূমি দাঁড়াও একবার/ আলতা পড়া পায়ে মাগো, জানাই নমস্কার’সহ একাধিক গান রয়েছে।
কিন্তু এই মুক্তিযোদ্ধা স্বাধীনতার ৪১’র বছর পরও মুক্তিযোদ্ধাদের গেজেটে অন্তর্ভূক্ত হয়নি।
তিনি স্বাধীনতার তাৎপর্য উল্লেখ করে বলেন, “স্বাধীনতার পূর্বে যখন পূর্ব পাকিস্তান হিসেবে চিহ্নিত ছিল এদেশে। যাদের জাতীয় স্লোগান ছিলো ‘জিন্দাবাদ’। তখন-ই বাঙালি জাতিকে তার জাতিসত্ত্বা ফিরিয়ে দিতে জন্ম নেয় বাঙালি জাতির সূর্য সন্তান শেখ মুজিব।
আর বাঙালি জাতির জন্য মুক্তি স্লোগান হয়ে উঠে ‘জয় বাংলা’।
তিনি আকুতি জানিয়ে বলেন, ‘আমি আপনার লেখার মাধ্যমে সব রাজনৈতিক দলগুলোর নীতিনির্ধারকদের কাছে আবেদন করছি, আপনারা যে দল-ই পরিচালনা করেন না কেন! বাঙালি জাতির স্লোগান হিসেবে দলীয় স্লোগানেও সবার সমন্বয়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান উচ্চারণ করুন। তাতে মুক্তিকামী ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মা শান্তি পাবে
সুত্র:বাংলানিউজ ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।