আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জবি ছাত্রলীগের দুই নেতার সামনেই হামলা করা হয়

ভালো কিছু করতে চাই বিশ্বজিতের আরেক 'ঘাতক' ইমদাদুল গ্রেফতার, ৭ দিনের রিমান্ডে আবুল খায়ের 'আমরা বিশ্বজিত্ দাসকে পিটিয়েছি, কুপিয়েছি ও ছুরিকাঘাত করেছি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ছাত্রলীগের সভাপতি শরীফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামের সামনেই হামলার ঘটনা ঘটেছে। ওই সময় পুলিশসহ অনেকেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তারা নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন না করে বিশ্বজিেক উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গেলে হয়তো সে বেঁচে যেতো। ' বিশ্বজিত্ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশগ্রহণকারী পাঁচজনের অন্যতম ইমদাদুল হক মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদে এ সব কথা জানিয়েছেন।

গত সোমবার গভীর রাতে ডিবির একটি দল গোপন তথ্যের ভিত্তিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার আরামবাগ এলাকার স্বপ্নপুরী রেস্ট হাউজ থেকে ইমদাদুলকে গ্রেফতার করে। সেখান থেকে তাকে সরাসরি ঢাকায় ডিবির কার্যালয়ে নিয়ে আসে। গতকাল মঙ্গলবার ইমদাদুলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক তাজুল ইসলাম তার ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করেন। আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে তাকে ডিবি কার্যালয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

ইমদাদুল পুলিশকে জানায়, বিশ্বজিত্ হত্যাকাণ্ডের পর সে বেশ কয়েকবার স্থান পরিবর্তন করে। সর্বশেষ শীতের পোশাক বিক্রেতা সেজে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ওই রেস্ট হাউজে ওঠে। পালিয়ে থাকার সময় কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতার সহযোগিতা চেয়েছিলেন। নেতারা তাকে বলে, 'এ মুহূর্তে কিছুই করার নেই। আমরাই বিপদে আছি।

তুমি ৩/৪ বছর বাইরে থাকো। পরিবেশ স্বাভাবিক হলে তখন একটা কিছু করা যাবে। ' এক নেতার পরামর্শে ইমদাদুল ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টার অংশ হিসাবে চাঁপাইনবাবগঞ্জে যান। সেখান থেকে গোদাগাড়ি সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করতেন। গত ৯ ডিসেম্বর অবরোধ চলাকালে পুরনো ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কের কাছে ছাত্রলীগের মিছিল অতিক্রমকালে একটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটলে নিরীহ পথচারী বিশ্বজিত্ আতংকে দৌড় দেয়।

এসময় ছাত্রলীগের মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা বিশ্বজিেক বোমা নিক্ষেপকারী ও জামায়াত কর্মী ভেবে ধাওয়া করে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে। এই হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা ইমদাদুল পুলিশের কাছে স্বীকার করে ওইদিনের ঘটনার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন। ঘটনার সময় ইমদাদুল রড দিয়ে বিশ্বজিেক পিটিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন। চাকরি পেতে ইমদাদুল ছাত্রলীগে যোগ দেয়! জানা গেছে, ইমদাদুল ২০০৮-২০০৯ শিক্ষাবর্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন শাস্ত্রে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী নেন। লেখাপড়া শেষ করার পর একটি বেসরকারি কোম্পানির শোরুমে পাঁচ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করতেন।

পরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকশন অফিসার পদে চাকরির জন্য ছাত্রলীগের শরীফুল গ্রুপে সক্রিয় সদস্য হিসাবে যোগ দেন। তবে ২০০৯ সালের ৯ এপ্রিল সন্ত্রাস, চাঁদাবাজিসহ সংগঠন বিরোধী কার্যকলাপের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ ৩৭ জনের সঙ্গে ইমদাদুলকেও বহিষ্কার করে। যশোর শার্শা উপজেলার পাঁচকাছরা গ্রামের বাসিন্দা মো. আকরাম আলীর পুত্র ইমদাদুল। তারা দুই ভাই। তার পিতা কয়েক বছর আগে মারা যান।

দরিদ্র পরিবারের সন্তান ইমদাদুল। তার আশা ছিল কিভাবে বড়লোক হওয়া যায়, এ কারণে সে ছাত্রলীগে যোগদান করে বলে তার ভাই জাকির জানান। জাকির গ্রামের বাড়িতে থাকেন। কৃষক হলেও তিনি জামায়াত সমর্থক। তার চাচা শাহজাহান এলাকার জামায়াতের সক্রিয় কর্মী।

তার মা মহুয়া বেগম পুত্র ইমদাদুলের গ্রেফতারের খবরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেও স্থানীয় সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, 'আমার ছেলে যে মায়ের বুক খালি করেছে তার জন্য কষ্ট হচ্ছে। সে অন্যায় করেছে, তার সাজা হওয়া উচিত। '  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।