আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সৌর বিদ্যুতে প্রণোদনা দেবে সরকার: বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী

তিনি বলেছেন, “একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে শহরে সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কিন্তু দেখা গেছে তা ফলপ্রসূ হয়নি। অথচ গ্রাম পর্যায়ে সৌর বিদ্যুৎ কাজ করছে।
“এজন্য আমরা ঠিক করেছি, যারা গ্রীন বিল্ডিংয়ে যাবেন তাদের জন্য বিশেষ সুবিধা দেব। কিন্তু সেটা কোথায় কীভাবে দেওয়া হবে তা এখনো ঠিক হয়নি।

এজন্য আরো আলোচনা করতে হবে। ”
বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে এক গোল টেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি।
‘বিদুৎ সংযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রে সোলার প্যানেল বসানোর শর্ত আরোপের যৌক্তিকতা’ বিষয়ে এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে জ্বালানি ও বিদ্যুতবিষয়ক পাক্ষিক এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার।
সাময়িকীটির সম্পাদক মোল্লা আমজাদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েটের অধ্যাপক ইজাজ হোসেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী নসরুল বলেন, “আমরা ভাবছি সোলার ইউজারদের ট্যাক্স বেনিফিট দেয়া যায় কিনা বা অন্য কোনো প্রণোদনা, যাতে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সোলার পাওয়ার ব্যবহার করে।


বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব তাপস কুমার রায় বলেন, “নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালা সংশোধন করা হচ্ছে। আমরা চাচ্ছি নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে গ্রাহকবান্ধব করতে। ”
প্রবন্ধকার ইজাজ হোসেন বলেন, সরকার আবাসিক ভবনে বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ার শর্ত হিসেবে সৌর বিদ্যুৎ প্যানেল বসানোর শর্ত দেওয়ায় অনেকেই যেনতেনভাবে কাজটি করেছে। অধিকাংশ সৌর বিদ্যুৎ পানেল বসানো হয়েছে জাতীয় গ্রীডের সংযোগ পাওয়ার জন্য, ব্যবহারের জন্য নয়।
“এজন্য বাজারে নিম্নমানের সৌর বিদ্যুৎ প্যানেল যন্ত্রপাতি ভরে গেছে।


তাছাড়া সোলার প্যানেল বসানো নিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতি হচ্ছে বলে জানান এই জ্বালানি বিশেষজ্ঞ।
তিনি বলেন, “এসব সৌর প্যানেলে কি পরিমান বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে বা আদৌ সচল আছে কি না তা দেখার কেউ নেই। অনেক জায়গায় ভাড়া করে প্যানেল বসিয়ে জাতীয় গ্রিডের সংযোগ পাওয়ার পর তা ফেরত দেওয়া হচ্ছে। ”
সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার নিয়ে পত্রিকার উদ্যোগে পরিচালিত একটি জরিপের প্রতিবেদন তুলে ধরেন বুয়েটের আরেক অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম খান।
তিনি জানান, লালমাটিয়ার ২৪টি বাড়িতে সৌর বিদ্যুৎ প্যানেল বসানো হয়েছে।

সেগুলোর মধ্যে মাত্র ৭টি প্যানেল সচল আছে। আর এগুলো থেকে উৎপাদিত বিদ্যুত গ্যারেজ ও সিডিতে ব্যবহার করা হচ্ছে।
সৌর প্যানেল বসানো নিয়ে সমস্যার কথা বললেন ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নজরুল হাসানও।
নিজ সংস্থার জরিপের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, “আমরাও দেখেছি অনেক প্যানেল বসানো হলেও তার ব্যবহার হচ্ছে না। মূলতঃ নিম্নমানের ব্যাটারি দিয়ে প্যানেল বসানোর পর দ্বিতীয়বার কেউ খরচ করতে চাচ্ছে না।


“প্যানেগুলোতে অত্যন্ত নিম্নমানের মালামাল ব্যবহার করা হয়েছে। অনেক সরবরাহকারী আছে, যাদের একদম অভিজ্ঞতা নেই।
“এরকম অনেক সমস্যা রয়েছে এখাতে, যা একটি নীতিমালার মধ্যে এনে ঠিক করা যেতে পারে। ”
সৌর বিদ্যুৎ বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত হয়নি বলে মতপ্রকাশ করেন ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসআইয়ের সহ-সভাপতি হেলালউদ্দিন।
তিনি বলেন, তাৎক্ষণিক প্রয়োজন মেটাতে অথবা বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে বাধা তৈরির একটি উপায় ছিলো এটি।

কিন্তু আমরা চাই, সৌর বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বাস্তব পরিস্থিতির সাথে তাল মিলিয়ে যেখানে প্রয়োজন সেখানে করা হোক। ”
আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাবের সহ-সভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়া আবাসিক ভবনে বিদ্যুৎ সংযোগের শর্ত হিসেবে সৌর বিদ্যুৎ প্যানেল স্থাপনের শর্ত তুলে নেওয়ার দাবি জানান।
তিনি বলেন, “এটা করে একধরনের নেতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। আবাসিক ভবনের মালিকরা যেনতেনভাবে প্যানেল বসিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ নিচ্ছেন। কিন্তু সৌর বিদ্যুতের মূল উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হচ্ছে না।


বৈঠকে পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মাদ হোসেন বলেন, “সৌর বিদ্যুত ব্যবহার বন্ধ করা ঠিক হবে না। বরং এটি কীভাবে বাড়ানো যায় তার একটি পরিকল্পনা বের করা যেতে পারে। ”

সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।