আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প-এ পায়েল, প-এ পায়েলঃদ্বিতীয় পর্ব

অদ্ভূত বিষয়গুলোতে বিস্ময়াভূত হওয়া একটি চমকপ্রদ ব্যাপার!! প- এ পায়েল, প-এ পায়েল প্রথম অংশ পড়তে এখানে ক্লিক করুন। তা না হলে খেই হারিয়ে ফেলতে পারেন ৩। পায়েল বসে বসে মনোযোগ দিয়ে হাতে মেহেদী লাগাচ্ছে। বেশ অনেক্ষন যাবৎ কুসুম হাত পেতে আছে ওকে মেহেদী লাগিয়ে দেওয়ার জন্য। কিন্তু ওদিকে পায়েলের মনোযোগ নেই।

রবিও পায়েলকে খালি তাড়া দিচ্ছে, “ও বুবু আপাকে মেহেদী লাগিয়ে দাও না? বুবু, ও বুবু, দাও না বুবু। ” কিন্তু কুসুম বেশ হাসি হাসি মুখ করে বসে আছে পায়েলের কাছে। ওর অপেক্ষা করতে খুব একটা কষ্ট হচ্ছে না। কেননা বুবুর মেহেদী লাগানো দেখতে খুব ভাল লাগছে ওর । বুবুর সুন্দর সুন্দর হাতে মেহেদীর কারুকার্য হাতকে যেন আরো বেশি সুন্দর করে তুলেছে।

কুসুম মনে মনে ভাবে ও যখন বড় হবে, ও-ও ঠিক বুবুর মত সুন্দরী হবে। বুবুর মত সুন্দর জামা পরবে, সুন্দর করে চুল বাঁধবে, হাতে মেহেদী পড়বে। চোখে কাজল দিবে। কাজল দেওয়ার কথা মনে হতেই ওর কাজল স্যারের কথা মনে পরল। সাথে সাথেই উঠে গিয়ে ও বুবুর জানালার পাশে দাড়ালো।

একটু উঁকি দিতেই কাজল স্যারের ঘরটা নজরে পরল ওর। স্যার তাঁর খাটের অপর বসে বসে বই পড়ছেন। কুসুমের কিছু একটা মনে হতেই ফিক করে হেসে ফেলল। ওর হাসি শুনে রবি ও পায়েল দুজনেই চোখ তুলে তাকালো। পায়েল বলল, কিরে ওখানে কি করিস? আয় তোকে মেহেদী পড়িয়ে দেই।

” কুসুম জানালার পাশ থেকে চলে আসে। ওর মুখ এখনো হাসি হাসি। রবি ব্যাপারটা খেয়াল করে বলল, “আপা তুমি হাস কেন?” কুসুম কথাটা লুকাতে গিয়ে বলল, “কই হাসি? হাসি নাতো। চুপ থাক। ” রবি বলল, “ঐ যে তখনো হাসলে, এই বুবু তুমি বলো, আপা হাসে নি?” পায়েল চুপচাপ কুসুমের হাতে মেহেদী লাগাচ্ছে।

কিছু বলল না। রবি আবারও বলল, “আপা বলো না আপা। তুমি হাসলে কেন?” কুসুম পায়েলকে আড়াল করে রবিকে ইশাড়া করল চুপ থাকতে, পরে সব বলবে। এই বলে কুসুম ফিক করে আবারও হেসে দিল। এবার রবিও সাথে যোগ হল।

পায়েল ওদের হাসি দেখে একবার দুজনের দিকেই তাকালো। তারপর আবার মেহেদী পরাতে শুরু করল। মেহেদী পরাতে পরাতে বলল, “তোদের স্যার কেমন পড়ায়?” দুজনেই একসাথে বলে উঠল, “ভাল পড়ায়। ” কুসুম বলল, “স্যার খুব ভাল মানুষ। আমার দেখা পৃথিবীর দ্বিতীয় সেরা ভাল ছেলে মানুষ।

” পায়েল চোখ পাকিয়ে বলল, “হুহ। একদিনেই পৃথিবীর সেরা ভাল মানুষ হয়ে গেল?” কুসুম বলল, “জানো বুবু আমার কি মনে হয়?” কি মনে হয়? আমার মনে হয় কাজল স্যারের কখনো চাকুরী হবে না। উনি আমাদের বাড়িতেই থাকবেন। কেন এ কথা মনে হল? সেটা বলা যাবে না। একটা মানুষের নামে এরকম অহেতুক কথা বলা কে শেখালো তোকে? কেউ শেখায় নি।

তাহলে বলিস কেন? পায়েল হাতে মেহেদী পড়ানো শেষ করে ফেলল। কুসুম আরেক হাতের জন্য আবদার করবে ভেবেও করল না। কেননা ওর হাসির কারণটা রবিকে না বলা পর্যন্ত ওর শান্তি হচ্ছে না। সাবধানে হাতটা সরিয়ে রবিকে নিয়ে পায়েলের ঘর থেকে চলে গেল ওরা। পায়েল তারাতাড়ি হাত শুকানোর জন্য জানালার ধাঁরে রোদে এসে বসল।

এমন সময় ওর চোখ গেল কাজলের ঘরের দিকে। কাজল তখনো বই পড়ছে। ছেলেটা খালি গায়ে। পায়েল ভাবল এই শীতের দিনেও এই ছেলে খালি গায়ে থাকে, অদ্ভুত তো। পরক্ষনেই ওর চোখ গেল উঠানের কোনার দিকের দড়িটার দিকে।

ওখানে একটা শার্ট আর একটা প্যান্ট শুকাতে দেওয়া। এগুলো এই বাড়িরই কারো নয়। তারমানে এগুলো কাজলের। পায়েল ভাবল, আচ্ছা কাজলের কি আর কোন জামা কাপর নেই? একটা ধুয়ে দিয়েছে বলে এই শীতের দিনেও সে খালি গায়ে শুয়ে আছে! কুসুম রবিকে নিয়ে বাড়ির সবচেয়ে গোপন জায়গাটায় চলে গেল। এখান থেকে কেউ কথা শুনতে পাবে না বলে ওর বিশ্বাস।

সিড়ির নিচের এই ঘরটা ওদের দুজনের প্রায় সব গোপন মিটিং এর জন্য ব্যাবহৃত হয়, এটা বাড়ির বছরের চাল ডাল রাখার মজুদ ঘর। তাই খুব একটা লোকজনের আসা যাওয়া নেই এখানে। কুসুম রবিকে বলল, “তোকে এখন আমি যে কথাটা বলব এটা পৃথিবীর সেরা গোপন কথা, আগে ওয়াদা কর কাউকে বলবি না। ” এই বলে কুসুম হাত পেতে দিল ওয়াদা করার জন্য। রবি বাধ্য ছেলের মত সাথে সাথে কুসুমের হাতের ওপর হাত রাখল।

ওয়াদা করা হয়ে গেলে কুসুম ঘরের দরজাটা আরো একবার পরীক্ষা করে আসল আশেপাশে কেউ আড়ি পেতেছে কিনা। সবকিছু ঠিকঠাক নিশ্চিত হয়ে ও ফিরে এল রবির কাছে। রবির কানের কাছে মুখ এনে ফিস ফিস করে বলল, “বুবুর সাথে কাজল স্যারের প্রেম হবে। ” রবি যেন কথাটার আগা মাথা কিছু বুঝল না। ঠোট উল্টিয়ে বলল “কি বলো?” কুসুম আবার বলল, “দেখিস পায়েল আপার সাথে কাজল স্যারের প্রেম হবে।

কেন বললাম শোন। বুবুর জানালা দিয়ে কাজল স্যারের ঘর দেখা যায় আর কাজল স্যারের জানালা দিয়ে বুবুর ঘর। ওদের প্রেম হবেই হবে। ” রবি ফিক করে হেসে ফেলল। ও প্রেম মানে জানে না।

তবু ওর কাছে মনে হল এটা একটা মজার ব্যাপার। রবি বলল, তুমি কি করে বুঝলে প্রেম হবে। আমি তো আর তোর মত গাধা না। দেখলেই বোঝা যায়। বুবু খুব সুন্দর, কাজল স্যারের সাথে তাঁর প্রেম হবে না কেন? কাজল স্যার আমার দেখা পৃথিবীর সেরা দ্বিতীয় ছেলে।

প্রেম হলে ভালই হবে। তোর কি মনে হয়? রবিও খুব খুশি হয়ে যায় ,হ্যা খুব ভাল হবে। আচ্ছা প্রথম সেরা ছেলে কে? কুসুম খিল খিল করে হাসে, সেটা তোকে বলা যাবে না। এমন সময় কে যেন মজুদ ঘরের দরজা খুলে ভিতরে আসল। কুসুম আর রবিউল ভয় পেয়ে যায়।

মা হলে আজকে ওদের খবর আছে। এর ভিতরে কেন ঢুকেছে ওরা? কি বলবে মাকে? কপালটাই খারাপ। দরজা খুলে ঘরে মা-ই ঢুকেছে। ওদের দুজনকে একসাথে দেখে বলল, “তোরা এখানে কি করিস? আর ঘর নেই? এখানে কেন?” মায়ের ঝাড়ি শুনে দুজন মাকে ফাকি দিয়ে দৌড়ে এক পাশ দিয়ে বের হয়ে গেল। কুসুম আর রবি দুজন কাজলের ঘরে পড়তে গেল।

কাজল তখন ঘরে ছিল না। হয়তো খেতে গেছে। ঘরে বসে ওরা দুজন অপেক্ষা করতে লাগল। এর মধ্যে কুসুম উঠে জানালার ধাঁরে গেল। পায়েলের ঘরের দিকে তাকিয়ে দেখল জানালায় পর্দা টানা।

কুসুম হাসি হাসি মুখ করে রবিকে বলল, বুবু জানে এ ঘর থেকে বুবুর ঘর দেখা যায় তাই সে পর্দা দিয়ে রেখেছে। তা না হলে দক্ষিনের জানালায় পর্দা দিয়ে রাখবে কেন? শীতের সময় তো দক্ষিনের জানালায় রোদ পরে। রবি ঠোট উল্টালো যে সে ব্যাপারটা সম্পর্কে বুঝতে পারছে না ঠিকমত। কুসুম হেসে বলে, “কাজল স্যারকে আমার খুব ভাল লাগে। স্যারের সাথে বুবুর প্রেম হলে......” রবি ঠোটে আঙ্গুল দিয়ে কুসুমকে চুপ করতে ইশারা করল।

কেননা তখন কাজল ঘরে চলে এসেছে। কাজল চলে আসলে কুসুম জায়গামত এসে বসে। কাজল ওদের পড়াতে বসেছে। মাঝে মাঝে নিজের একটা বই একটু আধটু চোখ বুলাচ্ছে। এমন সময় কি যেন মনে পড়ল এমন ভাবে কাজল বলল, আচ্ছা তোমাদের বড় বোন কী পড়াশুনা করছে? কুসুম আর রবি একে অপরের দিকে তাকালো।

কুসুমের হাসি পাচ্ছে তবুও অনেক কষ্টে হাসি চেপে রেখে বলল, কেন কি দরকার? একথা শুনে থতমত খেয়ে গেল কাজল। আসলেই তো কি দরকার? কাজল একটু হেসে বলল, না তেমন কোন দরকার নেই। সেদিন উনার সাথে একটু আধটু ইতিহাস নিয়ে কথা হয়েছিল তো তাই। উনি যদি ইতিহাসের ব্যাপারে ইন্টারেস্টেড হোন তাহলে আমার কাছে অনেক বই আছে। উনি নিয়ে পড়তে পারেন।

কুসুম আর রবি আবার একে অন্যের দিকে তাকালো। রবি হাসি হাসি মুখ করে বলল, স্যার আপনি কি আমার পায়েল বুবুর নাম জানেন? একথা শুনে কাজল হেসে ফেলে বলল, "নাহ, তোমার পায়েল বুবুর নাম আমি কি করে জানব?" কুসুম মুখে হাত চেপে রেখে হাসতে লাগল। রবিটা সবসময় বোকার মতই প্রশ্ন করে। বিকেল গড়িয়ে গেলে পায়েল উঠানে এল। ওর লাগানো কিছু গাছ আছে উঠানের এক পাশে।

ঠিক কাজলের ঘরের পাশ দিয়ে। পায়েল গাছ গুলোতে পানি দিচ্ছে। কয়েকটাতে ফুল ফুটেছে বেশ সুন্দর। পায়েল ফুল গুলোকে ছুয়ে ছুয়ে দেখছে। গাছ থেকে ফুল ছিড়তে ওর কখনোই মন চায় না।

এমনকি ফুল ঝরে পড়লেও ওর মন খারাপ হয়ে যায়। আজকে একটি গোলাপ ঝরে পড়ে আছে। পায়েল ফুলটাকে হাতে নিল। ওর এখন মন খারাপ। যেই না ফুলটা নিয়ে ও চলে যাবে ওমনি কাজল ওর জানালা থেকে বলল, “বাহ খুব সুন্দর বাগান তো আপনার।

এতদিন এ বাড়িতে আছি, অথচ বাগানটাই আমার চোখে পড়ল না। ” পায়েল মিষ্টি করে হেসে চলে যেতে উদ্যোত হতেই কাজল আবারও বলল, “আপনি যদি কিছু মনে না করেন আমি কি রোজ আপানার বাগানের পরিচর্যা করতে পারি?” এই কথা শুনে বিস্মিত হয়ে তাকালো পায়েল। কাজল আবারও বলল, এই যেমন প্রতিদিন পানি দেওয়া, মাঝে মাঝে সার দেওয়া, গাছের গোড়া নিংড়ে দেওয়া। পায়েলের মুখে কথা ফুটল এতক্ষনে, “কেন?” কাজল এবার একটু থতমত খেয়ে গেল। কেন? কি কারন? কিভাবে? এই প্রশ্নগুলো ওর কাছে বেশ অদ্ভুত লাগে।

তাৎক্ষনিক উত্তর খুজে পায় না কাজল। ধীরে ধীরে বলে, “এই মানে, আসলে সারাদিন আমার কোন কাজ থাকে না তো তাই একটু কাজ টাজ করতে পারলে নিজের কাছে ভাল লাগত। ” আপনাকে তো একটা কাজ দিয়েই এ বাড়িতে রাখা হয়েছে। ওটা তো এককালীন কাজ। দিনে একবার।

সারাদিন কাজের জন্য আমাদের অন্য অনেক মানুষ আছে। আপনি যদি চান কুসুম রবিকে দিনে দুবার পড়াবেন তো পড়াতে পারেন। অসুবিধা তো নেই। না মানে। আমি চেয়েছিলাম একটু অন্যরকম কাজ।

আমার বাগানে আমি কাউকে হাত দিতে দেই না। এই কথা শুনে দ্বিতীবারের মত থতমত খেয়ে গেল কাজল। কথা ঘুরাতে ও অন্য প্রসঙ্গ নিয়ে এল। আচ্ছা আপনি কি ইতিহাস ভালবাসেন? মানে ইতিহাস নিয়ে পড়াশুনা করতে, ইতিহাস জানতে। মাঝে মধ্যে।

সম্রাট আকবরকে নিয়ে সেদিন কথা হচ্ছিল। আপনি চাইলে আমার কাছ থেকে একটা বই নিয়ে পড়তে পারেন। সম্রাট আকবরকে নিয়ে লেখা আবুল ফজলের বই আইন-ই-আকবরী। আবুল ফজল ছিলেন আকবরের প্রধানমন্ত্রী, আকবর ও তাঁর প্রশাসনকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন তিনি। তাই এই বইয়ে আকবরের গৃহ থেকে শুরু করে আকবরের প্রশাসন, সেনাবাহিনী, বিচার বিভাগ, রাজকর্ম-কর্মচারী, দর্শন, সাহিত্য, বিজ্ঞান, রাজনীতি সকল কিছুর বর্ণনা এখানে পাবেন।

এক কথায় বলা যায় আকবরের শাসনামলের একটি নিবন্ধন বইটি। খুব ভাল লাগবে। আমি বইটি তিনবার পড়েছি। আপনি চাইলে পরতে পারেন। দিব? আমার তো মনে হচ্ছে বইটি আবুল ফজল লিখেন নি, লিখেছেন আপনি।

ভালই তো বইয়ের পাবলিসিটি করতে পারেন। কাজল একটু হাসল। বলল। “বইটি আমার পড়া অসাধারণ একটি বই। যার কারণে যে কাউকে বইটি আমি পড়তে বলি।

” পায়েলও মৃদু হাসল। হঠাৎ পায়েল খেয়াল করল উঠানে আর কাজলের শার্ট প্যান্ট শুকাতে দেওয়া নেই। তারপর-ই ও খেয়াল করল ঐ শার্টটাই গায়ে দিয়ে আছে কাজল। এত পাতলা একটা শার্ট গায়ে দিয়ে কিভাবে শীত মানাচ্ছে বেচাড়াই জানে। পায়েল একবার ভাবল জিজ্ঞেস করবে কিনা তাঁর পরিধানের জন্য কাপড় চোপর আছে কিনা।

তারপর-ই ভাবল না থাক এটা তাঁকে আঘাত করতে পারে। একটা মানুষকে আঘাত দিয়ে কথা বলাটা ঠিক না। পরক্ষনেই ওর মনে হল, ইতোমধ্যে তো বেশ কয়েকবারই আঘাত করে কথা বলা হয়ে গেছে। ছেলেটা বাগান পরিচর্যা করতে চাইল তা করতে দিল না, এদিকে বইটি না নিলেও অভদ্রতা। বইটি নিতে চাইছিল না পায়েল।

এই ছলের সাথে কোন প্রকার লেনাদেনায় জড়ানো কোন মানে হয় না ওর কাছে। শেষ্পর্যন্ত পায়েল বলল, আচ্ছা আইন-ই-আকবরি বইটা আমাকে দিন তো। পড়ে দেখি একটু। ভাল লাগলে পুরোটা পড়ব নয়তো ফেরত পাঠিয়ে দিব। কাজল হাসল।

টেবিল থেকে বইটা এনে পায়েলের হাতে দিয়ে বলল, আশা করি আপনি পুরোটাই পরবেন। আমার কাছে আরো অনেক বই আছে। আপনি চাইলে নিয়ে নিয়ে পরতে পারেন। কোন অসুবিধা নেই। ইতিহাস, দর্শন, সাহিত্য-রবীঠাকুর, শরৎ সমগ্র সব-ই আছে আমার কাছে।

রবী-শরৎ দুটো সমগ্র-ই আমি পড়েছি। বঙ্কিম পড়েছেন? নাহ। অনেক কঠিন। প্রায় শব্দই বোঝা যায় না। কি বলছেন? একটু চেষ্টা করলেই বোঝা যাওয়ার কথা।

অবশ্য আমার কাছে একটি বাংলা একাডেমী ডিকশনারীও আছে। আপনি চাইলে সেটাও নিতে পারেন। আমার মতে আর কোন সমস্যা থাকার কথা না। ওহ ডিকশনারী দেখে বই পড়া আমার পক্ষে সম্ভব না। একটা একটা ওয়ার্ড খুজে বই পড়তে ভাল লাগে নাকি কারো? তাই বলে এত অসাধারণ উপন্যাস গুলো না পড়া থাকবে।

এটা ভেবে ভাল লাগাটা তৈরি করে নেওয়া যেতে পারে। আপনি কপাল-কুন্ডুলা, দুর্গেশ নন্দিনী পড়ে তবেই বুঝবেন সাহিত্য সেগুলোই। আর আমাদের ভাগ্য যে আমরা সেগুলো পড়তে পেরেছি। আপনি রবি ঠাকুরের শেষের কবিতা পড়েছেন তো? পড়েছি। তারপর একটু থামল পায়েল।

বলল, “শুধু প্রথম দু পৃষ্ঠা। ” হো হো করে হেসে ফেলল দুজনেই। হাসি থামার সাথে সাথেই পায়েলের মনে হল এখানে দাঁড়িয়ে ও এতো গল্প করছে কেন? ছেলেটাকে কি ও একটু বেশি পাত্তা দিয়ে ফেলছে? সাথে সাথেই চলে যাবার জন্য ব্যাস্ত হয়ে গেল। পায়েল বলল, আচ্ছা আমি আসি। প্রয়োজন হলে বই চেয়ে পাঠাবো কুসুম কিনবা রবিকে দিয়ে।

এই বলে ওখান থেকে চলে গেল পায়েল। পায়েলের চলে যাওয়া পথের দিকে তাকিয়ে রইল কাজল। একটা সময় দেখল একটা সময় দেখল বাড়ির সর্ব দক্ষিনের ঘরটায় আলো জ্বলে উঠল। কাজল ভাবল ওটাই বুঝি পায়েলের ঘর। কিছুক্ষন তাকিয়ে রইল ও ঘরটার দিকে।

পর্দা উল্টিয়ে পায়েল একবার কাজলের ঘরের দিকে তাকাতেই কাজল বিদ্যুৎবেগে জানালা থেকে সরে গেল। এতক্ষন নিজের ঘরের বারান্দা থেকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সমস্ত কিছু দেখছিলেন রেহানা। বাড়ির মাস্টারের সাথে পায়েলের এত কি কথা থাকতে পারে তিনি ভেবে পেলেন না। তারপর কি নিয়ে এত হাসাহাসি, আবার একটা বইও দিল মাস্টার। ব্যাপারটা খুব একটা ভাল লাগল না রেহানার কাছে।

তিনি পায়েলকে জিজ্ঞেস করবেন কিনা ভেবে দেখলেন। পরক্ষনেই সীদ্ধান্ত পাল্টালেন। কেননা পায়েলকে বলার আগে আরেকজনকে জানানোটা আর বেশি জরুরী মনে হল তাঁর কাছে। চলবে...... তৃতীয় পর্ব এখানে ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।