এই হারে শেষ চারে যাওয়ার ক্ষীণতম সম্ভাবনাটুকুও শেষ হয়ে গেল বাংলাদেশের। একই সঙ্গে সেমি-ফাইনালের স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে ‘ফেভারিট’ অস্ট্রেলিয়ারও।
এই জয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে ভালোমতোই টিকে রইলো পাকিস্তান। আগেই শেষ চার নিশ্চিত করেছিল ভারত। এখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তানের মধ্যে ম্যাচের জয়ী দল সঙ্গী হবে তাদের।
রোববার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে আহমেদ শেহজাদের অপরাজিত শতকে ৫ উইকেটে ১৯০ রান করে পাকিস্তান। জবাবে ৭ উইকেটে ১৪০ রানে থেমে যায় বাংলাদেশের ইনিংস।
বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৩০ রানের উদ্বোধনী জুটি পরও দশ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ায় ৫৩/৪। তামিম ইকবাল, এনামুল হক, শামসুর রহমান ও মুশফিকুর রহিমের বিদায়ে ততক্ষণে ওভারপ্রতি রানের প্রয়োজনীয়তা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় পনেরতে।
নাসির হোসেনের সঙ্গে সাকিব আল হাসানের ৪৪ রানের জুটি বিপর্যরয়ের হাত থেকে রক্ষা করলেও বড় হার এড়াতে পারেননি।
তিন নম্বরে ফিরে ৩২ বলে দুটি করে ছক্কা ও চারের সাহায্যে ৩৮ রান করেন সাকিব।
শেষ ৩০ বলে প্রয়োজন ছিল ১০০ রানে। দশম ওভারে মুশফিকের বিদায়ের পর থেকেই অবশ্য লক্ষ্য তাড়া করার আশা ছেড়ে দেয় বাংলাদেশ। পরাজয়ের ব্যবধান কমানোর চেষ্টাই করেছেন নাসির, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও মাশরাফি বিন মুর্তজা।
এর আগে কামরান আকমলের সঙ্গে শেহজাদের ৪৩ রানের উদ্বোধনী জুটি পাকিস্তানকে ভালো সূচনা এনে দিয়েছিল।
পঞ্চম ওভারে কামরান আকমলকে ফিরিয়ে দলকে প্রথম সাফল্য এনে দেন আব্দুর রাজ্জাকের।
সুইপ করতে গিয়ে বাড়তি বাউন্সের জন্য ঠিকভাবে খেলতে পারেননি কামরান। শর্ট ফাইন লেগে সময় পেলেও বলের ঠিক নিচে যেতে পারেননি জিয়াউর রহমান। তবে শেষ মুহূর্তে ঝাপিয়ে পড়ে অসাধারণ এক ক্যাচ নেন তিনি।
সুপার টেনে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা রাজ্জাকের হাত দিয়েই আসে দ্বিতীয় উইকেট।
নবম ওভারে এগিয়ে এসে খেলতে ফ্লাইটে পুরোপুরি বিভ্রান্ত হয়ে স্ট্যাম্পিং হয়ে যান অধিনায়ক মোহাম্মদ হাফিজ।
পরের ওভারে বল করতে এসেই উমর আকমলকে বিদায় করেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। উমর আকমলের ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে শর্ট থার্ড ম্যানে ক্যাচ গিয়েছিল, ঝাপিয়ে পড়ে তা তালুবন্দী করতে কোনো ভুল করেননি তামিম ইকবাল।
দ্রুত দুই উইকেট হারালেও কোনো প্রভাব পড়তে দেননি শেহজাদ। শোয়েব মালিকের সঙ্গে ৮৩ রানের জুটি গড়ে দলকে বড় সংগ্রহের দিকে এগিয়ে নেন তিনি।
মালিককে (২৬) স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলে ৫০ বল স্থায়ী জুটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান।
শহীদ আফ্রিদির (২২) সঙ্গে শেহজাদের ১২ বলে ৩৪ রানের জুটি দলকে দুইশ’ রানের কাছাকাছি নিয়ে যায়। আল-আমিন হোসেনের করা শেষ ওভারে লংঅনে জিয়ার হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেনে আফ্রিদি।
পাকিস্তানের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে শতক করা শেহজাদ অপরাজিত থাকেন ১১১ রানে। তার ৬২ বলের ইনিংসে ছিল ১০টি চার ও ৫টি ছক্কা।
শেহজাদের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে শেষ ১০ ওভারে ১১৫ রান তোলে পাকিস্তান। এ রান করার পথে জিয়ার এক ওভার থেকেই ২২ রান নেয় তারা।
স্পিনারদের বিপক্ষে সহজে রান আসেনি, তাই পেসারদের ওপর দিয়েই গেছে মূল ঝড়। মাশরাফি বিন মুর্তজা ৪ ওভারে কোনো উইকেট পাননি, দিয়েছেন ৬৩ রান। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এটি দ্বিতীয় খরুচে বোলিং।
২০ রানে ২ উইকেট নিয়ে রাজ্জাক বাংলাদেশের সেরা বোলার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান: ২০ ওভারে ১৯০/৫ (কামরান ৯, শেহজাদ ১১১*, হাফিজ ৮, উমর আকমল ০, শোয়েব ২৬, আফ্রিদি ২২, মাকসুদ ১*; রাজ্জাক ২/২০, সাকিব ১/২১, মাহমুদুল্লাহ ১/২৪, আল-আমিন ১/৩৭)।
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৪০/৭ (তামিম ১৬, এনামুল ১৮, সাকিব ৩৮, শামসুর ৪, মুশফিকুর ২, নাসির ২৩, মাহমুদুল্লাহ ১৭*, জিয়া ০, মাশরাফি ১৭*; গুল ৩/৩০, আজমল ২/২০, আফ্রিদি ১/২১, বাবর ১/২৪)।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।