সব ভোট সমীক্ষার ফলাফল বলছে ষোড়শ লোকসভায় নিশ্চিতভাবে ক্ষমতায় আসতে চলেছে বিজেপি। নরেন্দ্রভাই মোদি যার কাণ্ডারি। প্রশ্ন হলো, ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কোন অস্ত্রকে হাতে নেবেন মোদি? গুজরাটের উন্নয়নকে মডেল করে গোটা দেশে তার প্রতিফলন ঘটাতে চাইবেন, নাকি ফিরে যাবেন তার উত্থানের মূল বিষয় হিন্দুত্বে?
আপাতত দেশজুড়ে যে প্রচার করছেন মোদি সেখানে কিন্তু উন্নয়নকেই সামনে রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি বিজেপিও আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছে রামমন্দির নয়, এবার উন্নয়নই হবে তাদের প্রচারের বিষয়। আগামী ৭ তারিখ বিজেপি তাদের নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করতে চলেছে নয়াদিলি্ল থেকে।
সূত্রের খবর, সেই ইশতেহারে রামমন্দিরের বিষয়টির উল্লেখ থাকবে না বা থাকলেও খুবই ছোটভাবে থাকবে। তবে প্রকাশ্যে এ অবস্থান নিলেও যত দিন যাচ্ছে এটা স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে যে, বিজেপি কিন্তু ভোটযুদ্ধে জয়ের জন্য কোনো হাতিয়ারকেই ব্রাত্য মনে করছে না। তারা প্রকৃতপক্ষে দ্বিমুখী কৌশল নিচ্ছে। এক. যখন সোনিয়া গান্ধীর কংগ্রেসসহ অন্যান্য দল মেরুকরণ উসকে দিয়ে বিজেপিকে কোণঠাসা করতে চাইছে, তখন বিজেপি চাইছে উন্নয়নকেই সামনে আনতে। দুই. মোদি সম্পর্কে বিরোধীরা যেসব অভিযোগ তুলছে, সেগুলো প্রকাশ্যে শুধরে দিতে চায় বিজেপি।
সম্প্রতি কোনো ভুল হলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেওয়ার কথা বলেছেন বিজেপি সভাপতি রাজনাথ সিংহ। কিন্তু তারপরেই আর এসএস তথা সংঘ পরিবারের কুনজরে পড়েন তিনি। সংঘের আশঙ্কা ছিল এর ফলে কংগ্রেস গুজরাট দাঙ্গা নিয়ে সরব হওয়ার সুযোগ পেয়ে যাবে। ঘটনা ঘটেছেও তাই। ফলে এখন ভোটের শেষ প্রহরে বিজপি রামমন্দির গুজরাট দাঙ্গার সঙ্গে মোদির দূরত্ব বাড়াতে কোমর বেঁধেছে।
অরুণ জেটিল সাফ জানিয়েছেন, গুজরাট দাঙ্গার জন্য মোদি দায়ী নন, ফলে তার ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই নেই। পাশাপাশি রাজ্যসভায় বিরোধী দলের সদর দফতরের মঞ্চ থেকে জানিয়ে দিয়েছেন, এবারের ভোটে উন্নয়ন ও কংগ্রেসের অপশাসন-দুর্নীতিই আমাদের প্রচারের হাতিয়ার। রামমন্দির কোনো নির্বাচনের ইস্যুই নয়। তবে সার্বিকভাবে মেরুকরণের রাজনীতি এড়াতে মোদি উন্নয়নকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করলেও উত্তর ভারত তথা গোবলয়ের কিছু স্থানীয় বিজেপি নেতা কিন্তু এখনো রামমন্দির নিয়ে সরব। মোদি-ঘনিষ্ঠ অমিত শাহ উত্তর প্রদেশের দায়িত্ব পেয়ে অযোধ্যায় বিতর্কিত কাঠামো দেখতে যান।
উমা ভারতী বলেন, তিনি নিজের জীবদ্দশায় অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণ দেখতে চান। বিশ্ব হিন্দু পরিষদও অযোধ্যায় প্রচার করছে। বিষয়টি হলো, মোদির উন্নয়নের স্বপ্ন ফেরি করার সঙ্গে রামমন্দিরের প্রচারকেও মেলাতে চাইছেন এই নেতারা। তারা বলছেন, মোদি মুখে রামমন্দিরের কথা না বললেও যে শক্তিশালী রাষ্ট্র গঠনের কথা বলেছেন, তা সংঘের মূল ভাবনা এবং সেই ভাবনা ভারতমাতার মন্দির নির্মাণের সমতুল্য এর মধ্যে কোনো ফারাক নেই। বিজেপির এই দ্বিমুখী কৌশল শেষ পর্যন্ত কত আসন দলকে এনে দিতে পারে এখন সেটাই দেখার বিষয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।