চেন্নাই সুপার কিংসে তিন মৌসুম একসঙ্গে খেলেছেন দুজন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে একসঙ্গে থাকছেন আরও তিন মৌসুম। সম্পর্কের উষ্ণতা এখন ঢাকার গরমের মতোই হওয়ার কথা। আজ টসের সময় মহেন্দ্র সিং ধোনি চাইলে প্রতিপক্ষ অধিনায়ককে বলতে পারেন, ‘খেলে আর কী হবে ফ্যাফ? জানো তো, আমার নেতৃত্বে ভারত কখনো সেমিফাইনাল হারেনি!’
ফ্যাফ ডু প্লেসিসের জবাবটাও সে ক্ষেত্রে তৈরিই থাকতে পারে। প্রোটিয়া অধিনায়ক এমন এক ব্যক্তি, যাঁর সঙ্গে আপনি কথা বলতে পারেন দুনিয়ার যাবতীয় বিষয় নিয়ে।
ফ্যাশন, খাবার, ঘুরে বেড়ানো, মোটামুটি সব বিষয়েই তাঁর প্রবল আগ্রহ, বিস্তর পড়াশোনা। ক্রিকেট ইতিহাসটাও ভালো জানেন। ধোনির কথার জবাবে ঠোঁটের কোণে হাসি নিয়ে ডু প্লেসিস বলে দিতে পারেন, ‘তুমি জানো তো, বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে দক্ষিণ আফ্রিকা যে একবার ফাইনাল খেলেছে, সেটা এই ঢাকাতেই!’
কল্পনার আকাশে নানা রঙের ঘুড়ি উড়িয়ে এভাবে কাটাকাটি খেলা যেতে পারে। তবে বাস্তবতার আকাশে সেই কাটাকাটি খেলা খুব একটা জমছে না। ম্যাচের আগে যে ধোনিরা অনেকটাই এগিয়ে! মুখোমুখি লড়াইয়ের ইতিহাসটাই ভীষণ একতরফা, ভারতের ৫ জয়ের পাশে প্রোটিয়াদের জয় দুটি।
আর শুধু এই টুর্নামেন্টে তাকালে ব্যবধানটা মনে হবে আরও চওড়া। টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত একমাত্র অপরাজিত দল ভারত। ধোনিদের দাপট বোঝাতে শুধু অপরাজিত থাকাটাই যথেষ্ট নয়, কোনো প্রতিপক্ষকে দাঁড়াতেই দেয়নি তারা।
দক্ষিণ আফ্রিকা সেখানে তিন ম্যাচ জিতে এসেছে বটে, তবে একটু এদিক-সেদিক হলে হারতে পারত তিনটিই। অনিশ্চিত ফর্মের সঙ্গে কাঁটার মালা সাজিয়ে বসে আছে মিরপুরের উইকেটও।
ডু প্লেসিসরা পারলে চট্টগ্রামের উইকেট সঙ্গে করে নিয়ে আসতেন ঢাকায়। কিন্তু মিরপুরের উইকেট যে এর মধ্যেই জাঁকিয়ে বসে আছেন অশ্বিন-মিশ্র-জাদেজারা! মিরপুরের উইকেটকে যেন মনে হচ্ছে ধোনিদের ফরমায়েশেই বানানো! প্রোটিয়ারা এমনিতেই স্পিনে দুর্বল। আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে কালকের মতো কালবৈশাখী ছোবল দিতে পারে আজও। তবে ভারতীয় স্পিনারদের ছোবলও কম বিপজ্জনক নয়। অথচ এমন স্পিনিং উইকেটে টুর্নামেন্টে প্রথমবার খেলতে হচ্ছে কিনা সেমিফাইনালেই!
দক্ষিণ আফ্রিকার বড় বাধা ওই সেমিফাইনাল শব্দটিও।
আইসিসি টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনাল-সেমিফাইনাল মানেই তো ওই অদৃশ্য শত্রুর প্রকাশ্য উপস্থিতি, চোক! চাপের ম্যাচগুলোয় বারবার ভেঙে পড়েই তো চোকার তকমা সেঁটে গেছে গায়ে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, দুই সংস্করণের বিশ্বকাপ আর আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি মিলিয়ে ১৭টি বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে ৯ বার সেমিফাইনাল খেলে দক্ষিণ আফ্রিকা ফাইনালে চেহারা দেখতে পেরেছে মাত্র একবার!
তবে এই লেখার শুরুর ওই কাল্পনিক কথোপকথনের মতোই ডু প্লেসিসদের সামান্য অনুপ্রেরণা, একমাত্র ওই ফাইনালটিও ছিল এই ঢাকার মাটিতেই। ১৯৯৮ আইসিসি নকআউট টুর্নামেন্ট। অনুপ্রেরণা হতে পারে ইতিহাসের এক অদ্ভুত কাকতালও। মিনি বিশ্বকাপ নামে পরিচিত ওই টুর্নামেন্টেও শেষ চারে খেলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও শ্রীলঙ্কা! এবারও কি তাহলে সময় দক্ষিণ আফ্রিকার?
প্রতিপক্ষ ভারত বলেই কাজটা কঠিন।
স্পিনবান্ধব উইকেট আর ভারতের স্পিনভান্ডার মিলে যে লড়াইয়ের আগেই যে লড়াই হয়ে উঠেছে খানিকটা অসম!
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।