ফ্যাশন হাইজ আর ডিজাইনাররা তাই নতুন প্রজন্মের বিয়ের সাজ নিয়ে প্রতিনিয়ত গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে।
বাংলার নারীর বিয়ের সাজ নিয়ে জল্পনা কল্পনার শেষ নেই। হাল ফ্যাশনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিয়ের সাজেও এসেছে নতুনধারা। তবে বাংলার সেই পুরাতন লাল বেনারসির সাজ যে একেবারেই পাল্টে ফেলা হয়েছে তাও নয়। পুরাতনকে ধরে রেখেই কনেসজ্জায় আনা হয়েছে নতুনত্ব।
হাল ফ্যাশনে কেমন হবে কনের সাজ আর মেইকআপের পরশ কোথায় গিয়ে ঠেকবে, এসব মাথায় রেখে ডিজাইনার এবং কোরিওগ্রাফার শাহরুখ আমিন ফ্যাশন আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছেন।
ধানমন্ডি ৬ নং রোডে, চিত্রক গ্যালারিতে বিউটি স্যালুন ‘রেড’-এর আয়েজিনে ৩ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে ব্রাইডাল ফ্যাশন ফটোগ্রাফি এক্সিবিশন ‘ভিএলসিসি প্রেজেন্টস দ্য বিউটিফুল ব্রাইড’।
এ আয়োজনে প্রধান সহযোগী প্রতিষ্ঠান মধ্যপ্রাচ্য, পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়ার ফিটনেস ও বিউটি চেইন ‘ভিএলসিসি’। প্রদর্শনীতে সহযোগিতা করেছে তৈরি পোশাক বিক্রয়ের প্রতিষ্ঠান ‘মান্ত্রা’। এক্সিবিশন কিউরেটরের দায়িত্বে ছিলেন অমিতাভ দেউরী।
পুরো আয়োজনের কোরিওগ্রাফি করেছেন ডিজাইনার এবং কোরিওগ্রাফার শাহরুখ আমিন। মডেলদের মেইকওভারের দায়িত্বে ছিলেন রূপকুশলী আফরোজা পারভিন।
নতুন ৫ জন ডিজাইনারকে প্রদর্শনীতে শাহরুখ আমিন তুলে ধরেছেন। তাদের সঙ্গে কাজ করেছেন ৫ জন ওয়েডিং ও ফ্যাশন ফটোগ্রাফার, ৩৫ জন মডেল এবং ৫ জন প্রসিদ্ধ ব্যক্তি।
হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান, ভিনটেইজ ও মড এই ৫টি বিষয়বস্তু নিয়ে সাজানো হয়েছে প্রদর্শনী।
৭ মাস পরিশ্রমের পর ২৫টি লাইফ সাইজ ছবির জন্ম হয়। যেগুলো এখন ঝুলছে চিত্রকের দেয়ালে।
কনের পোশাকের নকশা করেছেন নতুন ৫ জন ডিজাইনার। তারা হলেন গৌতম সাহা, রকিব খান, সাইয়েদুন নাহার, সৌমিন আফরিন ও অ্যাডলফ খান। ফটোগ্রাফার হিসেবে ছিলেন প্রীত রেজা, আফজাল নাজিম, সৈয়দ ওয়াসিম নির্জন, কৌশিক ইকবাল ও আবির হোসেন নোমান।
প্রজেক্টে মডেল হিসেবে ছিলেন ৫ জন সেলিব্রিটি। তারা হলেন— উপস্থাপক ও মডেল মুনমুন, সংগীত শিল্পী কনা, অভিনেত্রী নিপুণ, উপস্থাপক ও মডেল শারমিন লাকী এবং অভিনেত্রী মেহজাবিন। এ প্রজেক্টে কমিউনিকেশন ফটোগ্রাফির দায়িত্বে ছিলেন আরমান হোসেন বাপ্পী।
৩ এপ্রিল দুপুর সাড়ে ১২টায় চিত্রক গ্যালারিতে সাংবাদিক সম্মেলনের মধ্য দিয়ে প্রদর্শনীর উদ্বোধন হয়। যেখানে ছিলেন কিউরেটর অমিতাভ দেউরী, কোরিওগ্রাফার শাহরুখ আমিন ও মেইকওভার আর্টিস্ট আফরোজা পারভিন।
এছাড়াও আয়োজক রেড বিউটি স্যালুনের সভাপতি সরকার নিয়াজ মোরশেদ, প্রদর্শনীর প্রধান সহযোগী প্রতিষ্ঠান ভিএলসিসির কান্ট্রি হেড গৌরভ লাভানিয় এবং মান্ত্রার প্রতিনিধিও ছিলেন।
প্রদর্শনীর উদ্দেশ্য সম্পর্কে শাহরুখ আমিন বলেন, “এর মধ্য দিয়ে বাঙালি কনের সাজে নতুনত্বের বিষয়টিই তুলে ধরতে চাই। ”
এই গ্রীষ্ম ও বর্ষার মৌসুমে কনের সাজ কেমন হবে সে বিষয়েও কাজ করেছেন তারা। শুধু বর্তমান নয় অদূর ভবিষ্যতে কনের সাজে কেমন পরিবর্তন আসবে সেসব নিয়েও পরীক্ষা চালিয়েছেন।
শাহরুখ আমিন বলেন, “ভিন্ন ভিন্ন ধর্মের এবং সময়ের স্টাইলের বিষয়টি মাথায় রেখেই নতুন আঙ্গিকে আমরা মডেলেদের সাজিয়েছি।
যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ‘দ্য বিউটিফুল ব্রাইড’ প্রদর্শনীতে বিয়ের কনের বিভিন্ন সাজশৈলি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ”
কনের পোশাক বাছাইয়ের ক্ষেত্রে প্রাধান্য পেয়েছে জামদানি, বেনারসি, কাতান, মসলিন ইত্যাদি শাড়ি। খ্রিস্টান ব্রাইডের ক্ষেত্রে স্থান করে নিয়েছে গাউন ও শাড়ি-গাউন। হিন্দু কনের পোশাকে মূল আকর্ষণ ছিল ভারী বেনারসি ও কাতান শাড়ি।
৫ জন নতুন ডিজাইনার নকশা করেছেন প্রদর্শনীর প্রতিটি পোশাক।
আর স্টাইলিংয়ের দায়িত্বে ছিলেন শাহরুখ আমিন নিজে।
শাহরুখের কথায়, “আসলে নতুন প্রজন্মের ৫ জন ডিজাইনারকে সামনে নিয়ে আসার জন্যই এই প্রচেষ্টা। আমি শুধু তাদের ডিজাইনের পোশাকগুলো নিয়ে স্টাইলিং এবং কোরিওগ্রাফি করেছি। আর মডেলদের মেইকওভার করেছেন আফরোজা পারভিন। ”
প্রদর্শনীর পুরোটাই সাজানো হয়েছে বিয়ের আমেজে।
গ্যালারির অঙ্গসজ্জা থেকে শুরু করে স্পিকার থেকে ভেসে আসা সংগীতেও আছে বিয়েবাড়ির আমেজ।
প্রদর্শিত সবগুলো ছবি নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে একটি ফটোঅ্যালবাম। ডিজাইন করেছেন সব্যসাদী হাজরা। প্রদর্শনীর মিডিয়া পার্টনার সমকাল, ঢাকা ট্রিবিউন, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম, বৈশাখী টেলিভিশন, রেডিও ফুর্তি, লুক, আইস টুডে এবং গ্রুভ।
এছাড়া সহকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে আরও আছে ইটনা গ্রুপ।
ডিজাইন পার্টনার মার্ককম। ডকুমেন্টেশন পার্টনার ই স্টুডিও। মিঠাই পার্টনার খাজানা মিঠাই। ইভেন্ট পার্টনার অ্যারাইভাল। ভিজ্যুয়াল পার্টনার স্টুডিও ওয়ান, ডেকর পার্টনার এসকে।
মেহেদি পার্টনার জয়া। গ্যালারি পার্টনার চিত্রক। আউটডোর পার্টনার স্প্ল্যাশ।
বেলা ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে এই প্রদর্শনী। চলবে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।