পুড়ে পুড়েই বোধ হয় কষ্টি পাথর হয় ,জানলাম ,বুঝলাম, এবং মানলামও । সাঙ্গাকারা-মাহেলা শ্রীলংকার জন্য কষ্টি পাথরই । শুভকামনা বাকী জীবনের জন্য । আমাদের দেশেও কিছু পাথর রয়েছে, কী জানি তারা পুড়তে না জানলেও ঠিকি কিন্তু আমাদের পোড়াতে জানে। ক্রিকেটের অসম্ভব বিনয়ী দুই মহান তারকা কুমার সাঙ্গাকারা-মাহেলা জয়াবর্ধনে ছিলো শ্রীলংকান ক্রিকেটের দুই রাজকুমার।
একের পর এক ফাইনাল খেলেছেন এবং উপহার পেয়েছেন অগণ্য বিনিদ্র রজনী শ্রদ্ধা আর ভালবাসা। শেষ ম্যাচটাই হয়েছে অভিশাপগ্রস্ত দুই রাজকুমারের মুক্তির রাত। টি২০ এর শেষ ম্যাচটা এর চেয়ে বেশি ভালো হতে পারতো না বলে আমার বিশ্বাস। ড্যারেন স্যামির কথাই যদি বলি, তার কথায় ঠিক “ঈশ্বরই চেয়েছেন ওই দুজনের বিদায়টা যেন স্মরণীয় হয়”।
সত্যিই স্মরণীয় হয়ে রয়ে যাবে ইতিহাসের পাতায়।
অভিন্দন শ্রীলংকা। এই অভিনন্দন যতটা না বিশ্বকাপ ট্রপি জেতার জন্য, তারচেয়ে ও বেশি ভারতকে হারানোর জন্য। ক্রিকেটের মোড়ল হয়েছে বলে মাথা কিনে নিয়েছে সবার। উপযুক্ত শিক্ষা এই চাইতে আর কি হতে পারে।
সাঙ্গাকারা- মাহেলার মত বিনয়ী, পরিশ্রমী ,মেধাবী খেলোয়াড়রা যে দলে আছে বিশ্বকাপতো তাদেরই প্রাপ্য।
যোগ্য দল হিসেবেই শ্রীলংকা বিশ্বচ্যাম্পিয়েনর মর্যাদা পেয়েছে। মন থেকেই চাচ্ছিলাম যেভাবে ওরা এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সেভাবে বিশ্বকাপটাও ওদের হোক। বাংলাদেশ সফর লংকানদের জন্য সোনার হাঁস বলতে হবে। তার কারন দীর্ঘ ১৮ বছর পর তাদের এ বিশ্বকাপ জয় আমাদের বাংলার মাঠিতে ।
এর আগে চার চারবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেও পারা হয় নি লংকানদের।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরুর আগ মুহূর্তে ছোট ফরম্যাটের ক্রিকেট থেকে নিজেদের বিদায়ের সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন সাঙ্গাকারা ও জয়াবর্ধনে। বিদায় বেলাটাকে স্মরণীয় করে রাখতে এমন একটি দলের অংশ হয়ে খেলা ছাড়তে কে না চাইবে।
কুমার সাঙ্গাকারা-মাহেলা জয়াবর্ধনে জীবনে কখনো ভুলব না তোমাদের। তোমাদের অর্জন। তোমাদের জন্য অপুরন্ত ভালোবাসা।
ভুলবনা কোন দিন। ক্রিকেট আজ দায় মুক্ত হল, তোমরা দুজন ক্রিকেটকে যা দিয়েছ তার কিছুটা হলেও আজ ক্রিকেট তোমাদের ফিরিয়ে দিল।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করতে পারছেন না কুমার সাঙ্গাকারা। ফাইনাল শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে অবশ্য খেই হারাননি এই লংকান চ্যাম্পিয়ন। স্বভাবসুলভ ক্যারিশমায় বেশ গুছিয়েই অবশ্য পরিস্থিতিটা বুঝিয়ে দিলেন তিনি, “আমি জানি না কীভাবে এই অনুভূতি প্রকাশ করব।
আমি এখন একটি বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য! কত কষ্ট, কত না পাওয়ার বেদনা মিশে আছে এই গৌরবের পেছনে। এর আগে চারবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেও পারিনি। এই অনুভূতি সত্যিই ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়”।
ক্রিকেট বিশ্বের এই দুই মহান তারকার মাঝে অসম্ভব মিল। তারমধ্যে কতগুলা মিল নিচে তুলে ধরলাম-
* মাহেলা জয়াবর্ধনে, সম্পূর্ণ নাম- Denagamage Praboth de Silva Jayawardene Mahela Jayawardena (ডেনেগামা প্রভোধ ডি সিলভা জয়াবর্ধনে )
* কুমার সাঙ্গাকারা, সম্পূর্ণ নাম- Kumar Sangakkara Kumar Chokshanada Sangakkara (কুমার চুকসানাধে সাঙ্গাকারা )
* জন্ম, মাহেলা জয়াবর্ধনে ২৭ মে ১৯৭৭।
* জন্ম, কুমার সাঙ্গাকারা ২৭ অক্টোবর ১৯৭৭।
* জন্ম দিন দুইজনেরর ২৭ তারিখ তবে মাস ভিন্ন।
* টি-টোয়েন্টি অভিষেক একসাথে।
* দলের অধিনায়কতা ছেড়েছেন একি নিয়মে, নিজেদের ইচ্ছায়।
* টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের বিদায় একিসময়ে একি দিনে।
এগুলাই তো সফল মানুষদের বৈশিষ্ট । যিনি যত বড় হন , তিনি তত বিনয়ী হন । আমাদের দেশের খেলোয়াড়দের অনেক কিছুই শিখার আছে ক্রিকেট বিশ্বের এই দুই মহান তারকা সাঙ্গাকারা-মাহেলার কাছ থেকে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।